টরন্টো, কানাডা সংবাদদাতা

২৮ মে, ২০১৬ ১৯:১৫

টরন্টোতে খসরু চৌধুরীর ‘সুন্দরবনের বাঘের পিছু পিছু’ বইয়ের পাঠ উন্মোচন

দেশের বিশিষ্ট বাঘ বিশেষজ্ঞ এবং গবেষক খসরু চৌধুরী  সুন্দরবনের জীববৈচিত্র রক্ষার মাধ্যমে বাঘ রক্ষার আবেদন জানিয়ে বলেছেন, এখনি সচেতন না হলে ভবিষ্যতে বাঘ শুধু বাংলাদেশের চিড়িয়াখানায় থাকবে, বনে নয়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, সুন্দরবনের উপর বিদেশিদের গবেষণা করার সুযোগ দেওয়া হলেও দেশীয় বিশেষজ্ঞদের সেখানে সুযোগ দেওয়া হয় না। এই ব্যাপারে রাষ্ট্রের নীতিমালাও অনুকূল নয়।

শুক্রবার (২৭ মে) সন্ধ্যায় টরন্টোর ওয়ার্ডেন হিলটপ কমিউনিটি সেন্টারে লেখকের ‘সুন্দরবনের বাঘের পিছু পিছু’ বইয়ের পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে এই কথা বলেন।

ঢাকার সময় প্রকাশন থেকে গত একুশের বইমেলায় সুন্দরবন নিয়ে খসরু চৌধুরীর গবেষণালব্ধ প্রবন্ধের এই বইটি প্রকাশিত হয়।

স্থানীয় বাংলা টেলিভিশনের উপস্থাপক নাজমা কাজীর সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে বইয়ের প্রকাশক, সময় প্রকাশনের কর্ণধার ফরিদ আহমেদ, সাংবাদিক সেরীন ফেরদৌস, লেখক সালাহ উদ্দিন শৈবাল বক্তব্য রাখেন।

খসরু চৌধুরী বলেন, আমি সুন্দরবনের বাঘের ফেরিওয়ালা। সুন্দরবনকে জানতে আর শিকারের উদ্দীপনায় বনে প্রবেশ করলেও সময়ের পরিক্রমায় বাঘের নাড়ি-নক্ষত্র জানতে আগ্রহী হই। বুঝতে পারি জলা-জঙ্গলের এই অনন্য সাধারণ সম্পদ সম্পর্কে এবং অপরকে জানাতে প্রবৃত্ত হই। আমাদের দুর্ভাগ্য খুব অল্প বাঙালিই সুন্দরবনে গিয়েছেন বা সুন্দরবন সম্পর্কে সম্যক ওয়াকিবহাল। আমার ধারনা বনকে,  বনের সম্পদকে যতক্ষণ পর্যন্ত না জানা যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা বনের  প্রতি একাত্মতা বোধ করবো না বা বনের প্রতি মায়া জন্মাবে না।

বইটির প্রকাশক ফরিদ আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিনের পরিশ্রম,  গবেষণার ফসল হচ্ছে এই বইটি। দীর্ঘদিন ধরেই আমি লেখককে অনুরোধ করে চলেছিলাম এবিষয়ে একটি বই প্রকাশ করতে। সুন্দরবন সম্পর্কে লেখকের মেধা ও যোগ্যতার অতি সামান্য অংশই তিনি এ বইয়ে প্রকাশ করেছেন। এই মেধা আমাদের সম্পদ। বই প্রকাশের মাধ্যমে এই সম্পদ আমাদের কল্যাণে আসবে এই প্রত্যাশা করি।

গ্রন্থটির পাঠ-প্রতিক্রিয়ায় সেরীন ফেরদৌস বলেন, এ বইটি একাধারে বাঘের গল্প, বাঘ-মানুষের দ্বান্দ্বিক সম্পর্কের গল্প, গবেষণাগ্রন্থ, আত্মজীবনী আর অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মিশেল। সুন্দরবনের গোটা জনপদটি তার সকল সদস্য আর সম্ভার সহ যেন উঠে এসেছে পাঠকের সামনে। বনের হৃদয়ের ধুকপুকানি,  বাঘের গোঙানো আর বুনোগন্ধ উঠে আসে তাঁর লেখায়।

লেখক সালাউদ্দিন শৈবাল বলেন, সুন্দরবন আর রয়াল বেঙ্গল টাইগারের উপর তাঁর লেখা একটি সাপ্তাহিকের কভার স্টোরিতে প্রথম পড়েছিলাম, সেখানে আমি যেন স্পষ্ট সুন্দরবনের গন্ধ পেলাম এবং জ্যান্ত বাঘ দেখলাম। বাংলাভাষায় এই ধরনের লেখা খুব কম। বনে বাদাড়ে, ঘুরে ঘুরে বাঘের পিছে পিছে ঘুরছেন একজন বাঙালি মুক্তিযোদ্ধা, কি ঝরঝরে ভাষা, কি বর্ণনা!

প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন, সাবেক ছাত্রনেতা নাসির-উদ-দোজা, উদীচী কানাডার সাধারণ সম্পাদক সৌমেন সাহা, মানিরুল ইসলাম, তামান্না আলম প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত