সিলেটটুডে ডেস্ক

০১ আগস্ট, ২০১৮ ১৫:৫৬

নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের সড়কে হত্যায় যুক্ত ড্রাইভারদের ফাঁসির দাবি

বাংলাদেশে সড়কে হত্যায় যুক্ত ড্রাইভারদের দ্রুত বিচার করে ফাঁসি দেওয়ার দাবি নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে।

মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় সচেতন নাগরিক সমাজ আয়োজিত এ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। সড়কে মৃত্যুর মিছিলকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিচার করার দাবি জানান বক্তারা।

নৌপরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খানের পদত্যাগ দাবি করা এই সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ। সাংবাদিক ও নাট্যকার তোফাজ্জল লিটনের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন মুজাহিদ আনসারি, সৈয়দ জাকির আহমেদ রনি, মিথুন আহমেদ এবং গোপাল স্যান্নাল।

নিউ ইয়র্কের প্রথম বাংলা সংবাদপত্রের সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ সভাপতির বক্তব্যে বলেন, পরিবহন ব্যবস্থার প্রতিটি ক্ষেত্রে যে অরাজকতা এবং দুর্নীতি চলছে তা সরকারকে শক্ত হাতে দমন করতে হবে। বেপরোয়া গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে। লাইসেন্স ছাড়া কেউ যেনো গাড়ি চালাতে না পারে এবং ফিটনেস ছাড়া যেনো কোনো গাড়ি রাস্তায় না নামতে পারে সে ব্যাপারেও সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট মুজাহিদ আনসারি বলেন, জনগণের করের টাকায় বেতন ভুক্ত পুলিশবাহিনী কোনো সময় এই সরকারের পক্ষে থাকবে পারবে না। তারা যে সরকার আসবে সেই সরকারের কাজ করবে তাই বর্তমান সরকারকে ভাবতে হবে সেই পুলিশকে দিয়ে এই সকল কোমলমতি শিশু-কিশোরদের রক্তাক্ত করা ঠিক হচ্ছে কী না? এ সকল প্রতিবাদী সন্তানরা শহীদ সালাম,বরকত এবং জব্বারের উত্তরসূরি। তারা প্রতিবাদ করতে শিখেছে বঙ্গবন্ধু’র থেকে। তাদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত না করে এ সকল হত্যার দ্রুত বিচার করতে হবে।

গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক সৈয়দ জাকির আহমেদ রনি বলেন, সড়কে বাসগুলো ব্যাপক প্রতিযোগিতার কারণেই এসব হত্যার হার বেড়ে চলেছে। সড়ক ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙ্গে গেছে। এর কারণ তারা মুনাফার লোভে কোনো আইনকানুনের তোয়াক্কা করছে না। আবার যে সকল দুর্ঘটনা ঘটছে তার বিচার হচ্ছে না। তার সুষ্ঠু বিচার না হওয়ার অন্যতম কারণ পরিবহন শ্রমিকদের নেতা নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান সব সময় তাদের পক্ষ অবলম্বন করে কথা বলেন এবং সারা দেশে গাড়ি বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। সরকারের কাছে আহবান থাকবে এই লোকটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট উত্তর আমেরিকার আহবায়ক মিথুন আহমেদ বলেন, যে সকল হত্যাকাণ্ড হয়েছে সরকার একটি ট্রান্সকম গঠন করে তার বিচার করতে হবে। আমাদের সব বিষয়ের শেষ আশ্রয়স্থল প্রধানমন্ত্রী। আমরা আশা করবো শেখ হাসিনা এই বিষয়ে একটি ব্যবস্থা নিবেন।

নিউ ইয়র্ক গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক গোপাল স্যান্নাল বলেন, দেশের প্রতিটি ঘরে যখন একজন করে সড়কে দুর্ঘটনায় মারা যাবেন তখন কী সরকারের টনক নড়বে? সরকার কোনো আন্দোলন হলেই তাকে দেশবিরোধী রাজাকার এবং অন্য অনেক কিছু দিয়ে কোণঠাসা করার অপপ্রয়াস চালায়। এসব কোমলমতি সন্তানদের যেনো কোনো কিছু দিয়ে অপবাদ দেওয়া না হয়।

প্রসঙ্গত, ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর হোটেল র‌্যাডিসনের বিপরীত পাশের জিল্লুর রহমান উড়াল সড়কের ঢালের সামনের রাস্তার ওপর জাবালে নূর পরিবহনের তিনটি বাস রেষারেষি করতে গিয়ে একটি বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের ওপর উঠে পড়ে। এতে দুই শিক্ষার্থী নিহত ও নয়জন আহত হয়। নিহত দুই শিক্ষার্থী হলো শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম ওরফে রাজীব (১৭) এবং একই কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬)।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত