মিরন নাজমুল, স্পেন (বার্সেলোনা) থেকে

১৮ ফেব্রুয়ারি , ২০১৯ ২৩:২৩

বার্সেলোনায় একুশ উদযাপন কমিটির আহ্বায়কের উপর হামলা

বার্সেলোনায় বাংলাদেশী কমিউনিটির একুশ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক কামরুল মোহাম্মদ দুবৃত্তকারীদের হামলার শিকার হয়েছেন।

সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোরে আনুমানিক আড়াইটার দিকে বাংলাদেশীদের ১০/১২ জনের একটি দল একুশ উদযাপনের বিষয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে কলার ধরে টানাহেঁচড়া করে ধাক্কা দিলে তিনি রাস্তার পাশে পড়ে যান তিনি। এতে ডান হাত ভেঙ্গে যায় এবং শরীরে বিভিন্ন অংশে আঘাত পান। বর্তমানে তিনি স্থানীয় এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, মোহাম্মদ কামরুল একুশ উদযাপনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত আলোচনা সভা করে রাতে বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় ১০/১২ জনের সংঘবদ্ধ বাংলাদেশী একটি দল তার পথ রোধ করে এবং তারা সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করে। কামরুলকে চ্যালেঞ্জ করে এবং বলতে থাকে তারা এই একুশ উদযাপন পরিষদ মানে না। তিনি কেন উদযাপন পরিষদের সভা ডেকেছেন সেই বিষয়ে কৈফিয়ত চান।

এ সময় দুর্বৃত্তরা তার হাতে থাকা একুশ উদযাপন পরিষদের প্রস্তুতি সভার সিদ্ধান্ত ও সভার রেজুলেশন খাতা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরিস্থিতির প্রতিকূলতা বিবেচনা করে মোহাম্মদ কামরুল এই সময় তাদের দু'একজনকে জড়িয়ে ধরে এবং হাত জোড় করে তাকে অপদস্থ করা থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি যে মস্তিষ্কের স্নায়ু গঠিত রোগে অসুস্থ জীবন যাপন করছেন সেটাও অবগত করেন। কিন্তু দুবৃত্তকারীরা তার প্রতি সহনশীল না হয়ে তার উপর চড়াও হয়ে তার উপর হামলা চালায়।

এদিকে সকালে এই ঘটনা বার্সেলোনায় বাংলাদেশী কমিউনিটিতে জানাজানি হলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে প্রবাসীরা। মোহাম্মদ কামরুলের উপর এই হামলার প্রতিবাদে আজ সন্ধ্যায় কমিউনিটির সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে বার্সেলোনায় প্রতিবাদ সভা ডাকা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কামরুল মোহাম্মদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি বার্সেলোনার সকল সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সভায় আমাকে একুশে মেলা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক করা হয়েছে। আমি অসুস্থ শরীর নিয়ে একুশ উদযাপনের সিংহভাগ কাজ সম্পন্ন করেছি। স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দেবার জন্য বার্সেলোনা পৌরসভার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মেইল করেছি এবং তারা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। প্রস্তুতির ঠিক এই চূড়ান্ত পর্যায়ে আমি যেভাবে দুর্বৃত্তদের লাঞ্ছনার শিকার হয়েছি এতে আমি চরম হতাশ।

তিনি আক্ষেপ ও কান্না জড়ানো কণ্ঠে বলেন, আমি চাইনি তারপরও সব সংগঠন জোর করে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে বলেই আমি দায়িত্ব নিয়েছি। কিন্তু এখন মনে হয়, ভালো কাজে এগিয়ে আসাটাই আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি স্নায়ুরোগে অসুস্থ মানুষ হিসেবে তাদের দ্বারা যেভাবে মানসিক ও শারীরিকভাবে অপধস্থ হয়েছি। সেটা আমার জন্য মৃত্যুর কারণও হতে পারতো। আমার সেরকমই মনে হয়েছিল সে সময়।

এই হামলার যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত