নিজস্ব প্রতিবেদক

২৬ জুন, ২০১৯ ২৩:৫১

ভূমধ্যসাগর থেকে এবার উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে ১২ জনই সিলেটের

ভূমধ্যসাগরের তিউনেশিয়া উপকূল থেকে উদ্ধার হওয়া ৬৪ বাংলাদেশীর মধ্যে ১২ জনই সিলেট বিভাগের। এই ৬৪ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩ ধাপে দেশে ফিরছেন ৫২ বাংলাদেশী। আর বাকী ১২ জন দেশে ফেরত আসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাদেরকেও ফেরত পাঠানোর জন্য তিউনেশিয়া কর্তৃপক্ষ ও আইওএম-এর সাথে যোগাযোগ করছেন লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।

গত ৩১ জুন তিউনেশিয়া উপকূল থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।

এরআগে  ৯ মে ভূমধ্যসাগর পথে লিবিয়া থেকে ইতালি যাবার পথে নৌকাডুবিতে মারা যান বেশ কিছু বাংলাদেশীসহ অন্তত ৬৫ জন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন সিলেটের বাসিন্দা। যা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন তুলে।

ব্রাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিউনেশিয়া ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার হওয়া ৬৪ বাংলাদেশীর মধ্যে সিলেট বিভাগের রয়েছেন ১২ জন। এরমধ্যে রয়েছেন সিলেট জেলার ৮ জন, মৌলভীবাজার জেলার ৩ জন ও সুনামগঞ্জের ১ জন।

এদিকে বুধবার তিউনেশিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন ২০ কর্মী। বুধবার (২৬ জুন) বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে কাতার এয়ারওয়েজ ছজ-৬৩৪ বিমান যোগে দেশে ফিরেন তারা। এখন ইমিগ্রেশন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অবস্থান করছেন তারা।

ফেরত আসা ৬৪ বাংলাদেশীর মধ্যে প্রথম ধাপে গত ২১ জুন ফিরেন ১৭ জন, দ্বিতীয় ধাপে ২৫ জুন ফিরেন ১৫ জন এবং আজ ২৬ জুন ফিরেন ২০জন বাংলাদেশী। এনিয়ে দেশে ফিরছেন ৫২ বাংলাদেশী। আর বাকী ১২ জন দেশে ফেরত আসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিমানে তিউনেশিয়া থেকে দেশে ফিরেন ১৫ কর্মী। দীর্ঘ ২৬ ঘন্টার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বুধবার সন্ধা ৭টার দিকে বিমান বন্দর থেকে বাড়ী পথে রওনা দেন তারা। এর আগে ২১ জুন তিউনেশিয়া থেকে দেশে ফিরেন ১৭ জন কর্মী।

জানা যায়, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে তিউনিসিয়ার সাগরে একটি নৌকায় ভাসছিলেন ৭৫ জন অভিবাসন প্রত্যাশী, যাদের মধ্যে ৬৪ জনই বাংলাদেশি। নৌকাটি তিউনিসিয়ার উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছালেও শরণার্থী কেন্দ্রে নতুন করে কাউকে জায়গা দেওয়া সম্ভব না বলে কর্তৃপক্ষ নৌকাটিকে তীরে নামার অনুমতি দেয়নি। যার ফলে ওই নৌকাটি উপকূলীয় জারজিস শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সাগরে ভাসতে থাকে।

পরে লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষকে নিশ্চয়তা দেওয়া হয় আটকে পড়া বাংলাদেশিরা দেশে ফিরে যাবেন।  দূতাবাসের পক্ষ থেকে এমন নিশ্চয়তা দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গত ১৮ জুন সন্ধ্যায় জারজিস বন্দরে তাদের নামার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে তারা থাকার অনুমতি দেয়নি। কঠোর নজরদারিতে তাদের রেড ক্রিসেন্ট ও আইওএম পরিচালিত শেল্টার হাউজে রাখার ব্যবস্থা করা হয়।

এ ব্যাপারে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের হেড শরিফুল হাসান বলেন, তিউনেশিয়া ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার হয়েছেন ৬৪ বাংলাদেশী। এর মধ্যে ৩ ধাপে দেশে ফিরেছেন ৫২ বাংলাদেশী। আর বাকী ১২ জন দেশে ফেরত আসতে অস্বীকৃতি জানালেও তাদেরকে পরের ফ্লাইটে আনার চেষ্টা চলছে।

তিনি আরো বলেন,  মঙ্গলবারে ফেরা কর্মীরা বুধবার সন্ধা ৭টার দিকে ইমিগ্রেশন থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন। বুধবার যে ২০ জন ফিরেছেন তারা ইমিগ্রেশন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অবস্থান করছেন। ফেরত আসা কর্মীদের ঠিকানা ভেরিভিকশনের জন্য এবং তাদের সংশ্লিষ্ট থানাতে বার্তা প্রদান করছেন ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত