লুৎফুর রহমান, আরব আমিরাত

১১ নভেম্বর, ২০১৯ ২২:২৪

বড়লেখার দুবাই প্রবাসী আব্দুল করিমের সিআইপি মর্যাদা লাভ

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার ২০১৭ সালের জন্য বাংলাদেশে বৈধ চ্যানেলে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারী অনিবাসী বাংলাদেশি আলহাজ্ব আব্দুল করিমকে কমার্শিয়াল ইম্পরট্যান্ট পারসন বা সিআইপি মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে।

তিনি সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদ আরব আমিরাত শাখার সভাপতি। এছাড়াও এনআরবি ব্যাংকের পরিচালক আলহাজ্ব আব্দুল করিম বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল দুবাইয়ের কোষাধ্যক্ষের পদে আসীন আছেন। এরআগে আলহাজ্ব আব্দুল করিম পেয়েছেন একাধিকবার বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিটেন্স পদক।

এ বছর বৈধ পথে সর্বাধিক রেমিটেন্স প্রেরণকারী হিসেবে ৩৬ জন এবং বিদেশ বাংলাদেশি পণ্যের আমদানিকারক ৬ জন মোট ৪২ জনকে সিআইপি মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে। তার মধ্যে আরব আমিরাতের রয়েছেন ৯ জন। প্রতিবারের মতো সর্বোচ্চ রেকর্ডে আছেন আরব আমিরাত প্রবাসী সিলেটের মাহতাবুর রহমান নাসির।

আলহাজ্ব আব্দুল করিমের জন্ম ১৯৬০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। জন্মেছেন সিলেট মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার চরকুনা, সুজানগর গ্রামে। পিতা মৃত মফিজ আলীর ৩য় সন্তান আব্দুল করিমদের বর্তমান বসবাস পাথারিয়া পাহাড়ঘেঁষা ডিমাইগ্রামে। যেখানে প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্যের সাথে আঁধারের বাস। সেখানে আছে শুধু আঁধার আর আঁধার। আঁধারের সাথে লড়াই করে মানুষের বেড়ে ওঠা। আলোর বড়ই অভাব এখানে। নেই শিক্ষার আলো কিংবা বিজ্ঞানের। সেখানে মানুষকে সবধরনের আলো দেখিয়ে যাচ্ছেন তিনি। গ্রামের মানুষকে বিদ্যুতের আলো দেখাতে নিজ খরচে বিদ্যুৎ সংযোগ দেন। সেইসাথে শিক্ষার আলো দেখাতে গ্রামে একটি ইবতেদায়ী মাদ্রাসার জমিপ্রদান এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে সিংহভাগ অর্থপ্রদান করেন।

এছাড়া স্থানীয় কেছরীগুল উচ্চ বিদ্যালয়ে সময় সময় আর্থিক সহযোগিতা করে পশ্চাদমুখী মানুষকে শিক্ষিত করে তোলার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু নিজের গ্রাম নয় বড়লেখা উপজেলার মেধাবী ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীদেরকে প্রতিবছর বৃত্তি প্রদান করে আসছেন। প্রবাসে অসচ্ছল লাশের টিকেট দেওয়াসহ বাঙালি কমিউনিটির সকল অনুষ্ঠানে রয়েছে তার আর্থিক অনুদান। আরব আমিরাতের একমাত্র অরাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠন সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদের একাধিকবারের সভাপতি তিনি।

১৯৮২ সালে কাতারের দোহাতে পাড়ি জমান আব্দুল করিম। আগর-আতর এর কাজ দিয়ে প্রবাস জীবনের যাত্রা শুরু হয়। সেখানে কেটে যায় অর্ধযুগ। এরপর ১৯৮৮ সালের ৮ জানুয়ারি এসেই বসতি করেন আরব আমিরাতের দুবাই শহরে। নিজের গড়া আতর শিল্প প্রতিষ্ঠান হাছান-শাহিন আহমদ পারফিউম এলএলসি এর মাধ্যমে অনেক প্রবাসী যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দিয়েছেন।

অধুনালুপ্ত দুবাই বাংলা স্কুলে ছিলো তার উল্লেখযোগ্য অবদান। ষাটের দশকে নিজে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন ঠিকই কিন্তু আরব আমিরাতের শারজাহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুত্র রেজাউল করিম হয়েছেন ডাক্তার ও মারজান আল করিম হয়েছেন প্রকৌশলী। সংসার জীবনে ২ পুত্র, ২ কন্যা ও স্ত্রী নিয়ে তার সংসার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত