সিলেটটুডে ডেস্ক

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ১৮:৫০

বর্ণাঢ্য আয়োজনে রাশিয়ায় ‘বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব’ এর সমাপ্তি

ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আর বর্ণাঢ্য  আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাশিয়ায় শুরু হওয়া ‘বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব’ এর মস্কো পর্ব শেষ হলো। সোমবার সন্ধ্যায় মস্কোর মালি থিয়েটারে বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পীদের জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।

আগের দিন রবিবার বিকেলে মস্কোর স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী সাকোলনিকি পার্কের মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশি শিল্পীরা।

১৬ সেপ্টেম্বর সেন্ট পিটার্সবার্গ নগরীতে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সাত দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৫।’

রাশিয়া ও বাংলাদেশের রয়েছে ৪৪ বছরের দীর্ঘ কূটনৈতিক সম্পর্ক। সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে দেশটি। দুই দেশের মধ্যে বর্তমানে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় অনেক ভাল অবস্থানে রয়েছে।

পারস্পরিক সম্পর্ককে বিস্তৃত করে দুই দেশের জনগণকে আরো কাছে টেনে আনতে সংস্কৃতি বিনিময়ের ক্ষেত্রেও কাজ করছে বাংলাদেশ ও রাশিয়া। এরই ধারাবাহিকতায় রাশিয়ার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি  মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে প্রথমবারের মতো রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী।

“হাতে রেখে হাত, হৃদয় থেকে হৃদয়ে” এই শিরনামে অনুষ্ঠিত হওয়া বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইফুল হকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাশিয়ার সংস্কৃতি উপমন্ত্রী আলেক্সান্দার ভ্লাদিমিরভিচ।

এ সময়ে আরো উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম আক্তারী মমতাজ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মশিউর রহমান, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ইস্রাফিল শাহীন প্রমুখ।

প্রায় তিন ঘন্টা ধরে চলা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দর্শকদের সামনে আবহমান বাংলার লোকজ সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা হয়। প্রতিটি নাচ বা গানের শেষে তুমুল করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয় শিল্পীদের।

বাংলাদেশ বেতারের ঘোষিকা নাহিদা নাসরিনের বাংলা আর রুশ ভাষায় সাবলিল উপস্থাপনা এবং শিল্পীদের মন মাতানো শৈল্পিক নৃত্য আর সুরের মুর্ছনা মুগ্ধ করে হল ভর্তি দর্শকদের। নুপুরের রিনিঝিনি নৃত্যের ছন্দে মুখর হয়ে উঠে পুরো মিলনায়তন।

দুই জনপ্রিয় নৃত্য শিল্পী শিবলী মুহম্মদ ও শামীম আরা নীপার পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর একঝাঁক নৃত্যশিল্পী। গান গেয়ে শোনান কন্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম এমপি, শফি মন্ডল, ও প্রিয়াংকা গোপী। তাদের গাওয়া প্রতিটি গানের সাথে কিছু সময়ের জন্য হলেও বাংলা সঙ্গীতের ভুবনে হারিয়ে যান দর্শকরা।

শিল্পী মমতাজের ‘আমার ঘুম ভাঙ্গাইয়া গেলরে মরার কোকিলে’ গানটির সাথে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি দর্শককে নাচতে ও গাইতে দেখা যায়।

ওইদিনই মালি থিয়েটারের দ্বিতীয় তলায় বাংলাদেশের স্বনামধন্য চিত্রশিল্পীদের আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে দুই বাংলার নানা পেশার প্রবাসী, মস্কোয়ে কর্মরত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রুশ দর্শক উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসবে যোগ দিতে সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের নেতৃত্বে ৬০ সদস্যবিশিষ্ট সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি দলটি গত শুক্রবার রাতে মস্কো  পৌঁছায়। সাতদিনের সফর শেষে ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে ফিরে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত