রিটন রায়

২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ১৩:৫৭

বাংলাদেশে ভালো নেই সংখ্যালঘুরা

প্রশ্নটা হলো, হিন্দুরা কেনো বাংলাদেশ ছাড়েন? কিন্তু মুসলমানেরা কেনো ভারত ছাড়েন না? উত্তরটা খুঁজলে উত্তর পাওয়া দুষ্কর নয়। একটু পেছনে তাকালে বা ইতিহাস পর্যালোচনা করলেই কিন্তু নিমর্ম সত্য আমরা অনুধাবন করতে পারি। প্রশ্নটা হলো-এর কী কোনো সমাধান নেই? নাকি সমাধান করার সদিচ্ছা নেই?

বিগত দিনগুলোতে যা কিছু-ই ঘটেছে তার পেছনে কী কোনো ইন্ধন ছিল না? আজকাল ডিজিটাল বাংলাদেশের হাঁকডাকের আড়ালে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভয়ঙকর চিত্র ঢেকে রাখার চেষ্টা নিতান্তই বোকামী মাত্র।

যদিও বাংলার মসনদে এখন বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা ও পরীক্ষিত জননেত্রী শেখ হাসিনা। তার দিকেই তাকিয়ে আছে গোটা উপমহাদেশ। ইতিমধ্যেই তিনি ভারতীয় ক্ষমতাসীন দলের সাথে সখ্যতা গড়তে যে মুন্সীয়ানার পরিচয় দিয়েছেন তা কল্পনাতীত। উপরন্তু সাবেক বিরোধী দলের নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীকে যে অপমান করেছিলেন তার সিঁকিভাগও উপলব্ধি করতে পারেননি।

মোদ্দাকথা আমরা যারা বাংলাদেশের নাগরিক রূপরেখা নিয়ে এক ভয়ানক খেলায় মত্ত, তারই উৎকৃষ্ট উদাহরণ প্রবীর সিকদার।

বেশকিছু স্বনামধন্য মানুষ প্রবীর সিকদার ইস্যুতে মাথা ঘামিয়েছেন, তখন আমি একটা কথা বলেছিলাম- যার বিয়ে তার খবর নেই, পাড়া-পড়শীর ঘুম নেই। যারা প্রবীর সিকদার আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্ক সম্পর্কে যারা অবহিত তাদের এই ইস্যুতে কথা বলাটা ছিল অযাচিত। নেত্রীর কাছের লোকগুলাে এই ইস্যু নিয়ে সুন্দর সমাধান করেছেন। আমার বিশ্বাস, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটু বিব্রত অবস্থায় আছেন। কিন্তু সমাধানের দিকেই এগোচ্ছেন।

এই সময়ে অতি উৎসাহী কিছু হাইব্রিড আওয়ামী নেতা-কর্মী গত কয়েকদিন ধরে নির্লজ্জ্বের মত হিন্দু শ্মশান ও ধর্মীয় স্থাপনার দিকে লোলুপ দৃষ্টি দিচ্ছেন তার কিছু নমুনা আমরা দেশবাসী উপলদ্ধি করেছি।

অভিযােগ ছিল বিএনপি জামাত জোট সরকারের সময় এবং সরকারে না থাকার সময়ও তারা যে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করে সেটা
আন্তজার্তিকভাবেও আলোচিত ছিল। কিন্তু এখন সবকিছু হচ্ছে তার উল্টো। যারা নিজেদের অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল হিসাবে দাবি করতেন যারা নিজেদের সংখ্যালঘুদের রক্ষক হিসাবে প্রচার করতেন, তাঁরাই কী না আজ সংখ্যালঘুদের উপর ঝাপিয়ে পড়েছেন। কিভাবে তাদের সবকিছু দখল করা যায় তা নিয়ে রীতিমত প্রতিযোগিতা চলছে।

এমপি-মন্ত্রীদের মধ্যে ক্ষমতার উপর দিকেই অবস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের। তিনি হলেন উপরতলার মানুষ। তার পরিচয়ও বিশাল। তাকে ইদানীয় জাতীয় বেয়াই বলে সম্বোধন করা হচ্ছে। তিনি ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছেন কিভাবে সংখ্যালঘুদের সবকিছু কেড়ে নিয়ে দেশ থেকে বিদায় করা যায়। কিন্তু কেউ কোন প্রতিবাদ করতে পারবে না। যদি করে তাহলে তার চোখ হাত পা জায়গা মত তাকবে না । তাহলে বোঝেন তার ক্ষমতা কত? তার মত আরও আছেন দিনাজপুরের এমপি দবিরুল, গাইবান্ধার এমপি ও হুইপ গিনি, সুনামগঞ্জের এমপি ইঞ্জিনিয়ার রতন।

তাদের বিরুদ্ধে একেবারে মন্দিরে দখলের অভিযোগ ওঠেছে। এটাও তাদের প্রয়োজন। তাদের কত ক্ষুধা যে হিন্দুদের মন্দিরও তাদের চাই।

এসব প্রতিবাদ করে মহাবিপদে রানা দাসগুপ্ত আর প্রবীর সিকদাররা। একজনকে বলা হয়েছে চোখ উঠিয়ে নেওয়া হবে। আরেকজনের এক পা আগেই হজম করে ফেলেছে। তারপরও নিউইয়র্কেও কিছু লোক আছে তাদের দলে, তাদের হয়ে দালালি করা এই লোকগুলিই আবার নিজেদের সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধি দাবি করে। অথচ বাংলাদেশে এদের বাড়ি পর্যন্ত নেই, তাঁরাই নাকি বাংলাদেশের হিন্দুদের প্রতিনিধিত্ব করতে চায়।


রিটন রায়: নিউইয়র্ক প্রবাসী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত