নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ নভেম্বর, ২০১৫ ১৪:০২

সঞ্জীব চৌধুরীর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ, শহীদ মিনারে ‘চাঁদের জন্য গান’

‘কথা বলবো না/ আগের মতো কিছু নেই/ ঘরে ফিরবো না/ ঘরে ফেরার কিছু নেই’, ‘বুক জুড়ে এই বেজান শহর/ হা হা শূন্য আকাশ কাঁপাও/ আকাশ ঘিরে শংখচিলের শরীর চেরা কান্না থামাও/ সমুদ্র কী তোমার ছেলে/ আদর দিয়ে চোখে মাখাও’- এমন অসংখ্য গানের শিল্পী সঙ্গীব চৌধুরীর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর)।

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে ২০০৭ সালের ১৯ নভেম্বর রাতে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। তার সৃষ্ট অজস্র গান এখনও নবীনদের অনুপ্রেরণা বলে মনে করেন এ প্রজন্মের অনেক সংগীতশিল্পী।

সঞ্জীব চৌধুরী একটা নাম। একটা ভালবাসার অভিমান। বুকের ভেতর একটা আকাশ সমান বাঁধ ভাঙা চিৎকার। মহাকালের পাঁজর থেকে বড় অকালে নিভে যাওয়া একটি নক্ষত্র উল্লেখ করে সিলেটের গানের দল "নগরনাট" সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজন করেছে "চাঁদের জন্য গান" শিরোনামে সঞ্জীব চৌধুরীর গান। অনুষ্ঠানটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়।

আয়োজকদের পক্ষে অরূপ বাউল বলেন, সঞ্জীব চৌধুরী নাই এটা বিশ্বাস হয় না। মনে হয় দাদা এখনও আমাদের অস্তিত্ব জুড়ে আছেন।

উজ্জল চক্রবর্তী বলেন, অনেক দিন ধরে আমরা চেষ্টা করছিলাম এক সন্ধ্যা সঞ্জীব চৌধুরী নিয়ে আসতে। আশা করি দাদার মৃত্যুদিনে আমরা তাঁকে স্মরণ করে তাঁর গানগুলো উপস্থাপন করতে পারব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা সঞ্জীব চৌধুরী আশির দশকে সাংবাদিকতা শুরু করেন। সেসময়ই ‘শঙ্খচিল’ নামের দলে সংগীতচর্চা শুরু হয় তার। এরপর ১৯৯৬ সালে সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে বর্তমানের শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ড ‘দলছুট’ গঠন করেন। পরবর্তীতে সঞ্জীব চৌধুরীর কথা ও বাপ্পার সংগীতায়োজন দলটিকে ভিন্ন মাত্রা দেয়।

ধারাবাহিকসহ বেশ কয়েকটি নাটকেও তিনি অভিনয় করেছেন। লিখেছেন অনেক গল্প ও কবিতা। তার সুর ও গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে আছে ‘বায়োস্কোপ’, ‘আমাকে অন্ধ করে দিয়েছিল চাঁদ’, ‘আমি তোমাকে বলে দিব’, ‘সাদা ময়লা রঙ্গিলা পালে আউলা বাতাস’, ‘চোখ’, ‘তখন ছিল ভীষণ অন্ধকার’, ‘আহ ইয়াসমিন’, ‘রিকশা’, ‘কথা বলব না’।

তার গাওয়া বাউল শাহ আবদুল করিমের লেখা ‘গাড়ি চলে না’ এবং ‘কোন মেস্তরি বানাইয়াছে নাও’ গান দুটিও বেশ প্রশংসিত।

সঞ্জীব চৌধুরী ২৫ ডিসেম্বর ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার মাকালকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেন। এরপর ঢাকার বকশী বাজার নবকুমার ইন্সটিটিউটে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হন। এখান থেকে ১৯৭৮ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ১২তম স্থান অর্জন করেন।

১৯৮০ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেও মেধা তালিকায় স্থান করে নেন তিনি। তার বাবা ননী গোপাল চৌধুরী এবং মা প্রভাষিণী দেবী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত