নিজস্ব প্রতিবেদক

২৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১৬:৩০

‘তুমি কান্নার রঙ, তুমি জ্যোস্নার ছায়া’

সিলেটে সঞ্জীব স্মরণ

বেঁচে থাকতে কি কখনো জন্মদিন পালন হয়েছিলো সঞ্জীব চৌধুরীর? ঘটা করে যে হয়নি তো তো বলাই যায়, ঘরোয়াভাবে কি হয়েছিলো? নয় বছর আগে প্রয়াত হয়েছেন তিনি। জন্মদিনে কেক কেটে সে ছবি ফেসবুকে আপ করার যুগ তখন চালু হয়নি। ফলে এ তথ্যও জানা যায় না।

তবে চলে যাওয়ার নয় বছর পরও সিলেটে ব্যাপক আয়োজনে পালিত হলো স্বল্পায়ু এ শিল্পীর জন্মদিন। রোববার সন্ধ্যায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত হলো সঞ্জীব উৎসব। তাহলে কি মৃত্যুর পর আরো প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠলেন সঞ্জীব?

হতেই পারে। সঞ্জীব তো কেবল শিল্পের জন্যেই শিল্পচর্চা করে যাননি। নিজের সময় রাজনীতি আর সমাজকে অস্বীকার করে শিল্প চর্চায় নিবিষ্ট হননি। তাই তার গানে ঠাঁই পেয়েছে রাজনীতি, সামজ আর সময়।

সঞ্জীব তাঁর সময়ের করুণতম নাম ইয়াসমিন নিয়ে গান করেছেন, স্বৈরশাসক আর বাকস্বাধীনতা নিয়ে গান করেছেন।

ফলে এই সময়ে যখন আবার হুমকির মুখে বাকস্বাধীনতা, যখন লেখার জন্য খুন হয়ে যাচ্ছেন লেখকরা। আর এমন দুঃসময়েও যখন 'সেলিব্রেটি' শিল্পী-সাহিত্যিকরা চুপ করে থাকেন, তখন সঞ্জীব চৌধুরী তো আরো প্রাসঙ্গিক হয়েই ওঠেন। তাঁর না থাকাটা তাকে আরো বেশি করে মনে করিয়ে দেয়।

এই প্রাসঙ্গিকতা থেকেই হয়তো রোববার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ‘মনেরও ভেতরে মাঝি তোমার রাঙা নাও বাই’ শিরোনামে সঞ্জীব সন্ধ্যার আয়োজন করলো 'হৃদয়পুর' নামে তরুণদের এক প্ল্যাটফর্ম। নিজের গান, জীবনচারণ আর রাজনৈতিক দর্শন দিয়ে এমন অসংখ্য তরুণদের মাঝেই তো আজও প্রভাব বিস্তার করে আছেন সঞ্জীব চৌধুরী।

অনুষ্ঠানের শুরুতে আয়োজকদের পক্ষে স্বাগত বক্তব্য দেন রাজীব রাসেল। তিনি এই আয়োজনের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন।

এরপর ‘হাতছানি দেয় বাংলাদেশ’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর অরূপ বাউল, উজ্জ্বল চক্রবর্তী, দেবোজ্যোতি দেবু, অচ্যুত চক্রবর্তী বর্ষণ, উত্তরা সেন পম্পা প্রমুখ অনুষ্ঠানে সঞ্জীব চৌধুরীর গাওয়া কয়েকটি গান পরিবেশন করেন।

সবশেষে ঢাকার দল ‘কনসার্ট ফর ফাইটার্স’ সংগঠনটি গান পরিবেশন করে। রাত প্রায় নয়টার দিকে শেষ সঞ্জীব চৌধুরীকে নিয়ে এ আয়োজন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত