নিজস্ব প্রতিবেদক

৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬ ২১:১৪

‘দ্রোহসূত দিলওয়ার বাচিক শিল্পোৎসব’ রবিবার

গণমানুষের কবি দিলওয়ারের ৮১তম জন্মবার্ষিকীতে স্তবকের আয়োজন

কবি দিলওয়ার। গণমানুষের কবি। যার কবিতায় উঠে আসতো সাধারণ মানুষের মনের কথা, প্রাণের আকুতি। পহেলা জানুয়ারী এ কবির ৮১তম জন্মবার্ষিকী।

গণমানুষের কবি দিলওয়ার’র জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘দ্রোহসূত দিলওয়ার বাচিক শিল্পোৎসব ২০১৭’ এর আয়োজন করেছে ‘স্তবক আবৃত্তি সংসদ’। আগামী পহেলা জানুয়ারী রোববার দিলওয়ারের জন্মদিনে নগরীর কবি নজরুল অডিটোরিয়ামের মুক্তমঞ্চে এ শিল্পোৎসব অনুষ্ঠিত হবে।

বেলা ৪টায় শিল্পোৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন সিলেটের শিল্প ও সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা। এরপর দিলওয়ারের গান ও কবিতা পরিবেশন করবে সঙ্গীত পরিষদ, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, নগরনাট, মৃত্তিকায় মহাকাল, শিকড়, গানকবিতায় অসীমবিপ্লব ও থিয়েটার মুরারিচাঁদ প্রমুখ সংগঠনগুলো।

স্তবক আবৃত্তি সংসদের পরিচালক অশোক বিজয় বলেন, ধ্রুপদী বাংলা কাব্যসাহিত্যে কবি দিলওয়ার এক অনন্য শৌর্যপুরুষ। আজন্ম আপোষহীন থেকে মানবতার বীজমন্ত্র দিয়েছেন সর্বমূলে। আমরা তাঁকে চিনেছি এক গৃহী সন্ন্যাসীর অনুকল্পে, যে বিশ্বনাগরিকের উচ্চারন ছিল রাষ্ট্রগন্ডীহীন। “পৃথিবী স্বদেশ যার, আমি তাঁর সঙ্গী চিরদিন”। তাই গণমানুষের কবি দিলওয়ার স্মরণে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।

কবিজীবন

কবি দিলওয়ার ১৯৩৭ সালের পহেলা জানুয়ারি সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমার ভার্থখলার একটি মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, পৈতৃক নিবাস 'খান মঞ্জিল'। তাঁর পিতা মৌলভী মোহাম্মদ হাসান খান এবং মাতা রহিমুন্নেসা। ১৯৫২ সালে সিলেটের উত্তরসুরমার রাজা জিসি হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা পাস করে এমসি কলেজ থেকে ১৯৫৪ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন।

গণমানুষের প্রিয় কবি লেখালেখি শুরু করেন শৈশব থেকেই, মাত্র তের (১৩) বছর বয়সেই ১৯৪৯ সালে তৎকালীন সাপ্তাহিক যুগভেরী পত্রিকায় “সাইফুল্লাহ হে নজরুল” নামক কবিতাটি প্রথম ছাপা অক্ষরে প্রকাশিত হয়।

শিক্ষকতার মাধ্যমে পেশাজীবনের শুরু হলেও এরপর রাজধানীতে এসে সাংবাদিকতা শুরু করেন কবি। ১৯৬৭ সালে সহকারী সম্পাদক হিসাবে যোগ দেন দৈনিক সংবাদে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩-৭৪ সালে দৈনিক গণকণ্ঠেও সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। উদীচী ও খেলাঘর আসরের সিলেটের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন তিনি।

ব্যক্তিগত জীবন ১৯৫২ সালে সিলেটের উত্তরসুরমার রাজা জিসি হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা পাস করে মুরারিচাঁদ কলেজ থেকে ১৯৫৪ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন দিলওয়ার। শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেখানেই তার প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার ইতি ঘটে। ১৯৬০ সালে পেশায় সেবিকা আনিসা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয় কবি দিলওয়ারের।

তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো- 'ঐকতান, 'পূবাল হাওয়া', 'উদ্ভিন্ন উল্লাস', 'বাংলা তোমার আমার', 'রক্তে আমার অনাদি অস্থি', 'বাংলাদেশ জন্ম না নিলে', 'স্বনিষ্ট সনেট', 'নির্বাচিত কবিতা', 'দিলওয়ারের একুশের কবিতা', 'দিলওয়ারের স্বাধীনতার কবিতা', 'সপৃথিবী রইব সজীব' ও 'দুই মেরু, দুই ডানা' ছাড়াও প্রবন্ধ, গান, ও ভ্রমণকাহিনীও লিখেছেন তিনি।

জীবদ্দশায় কবি দিলওয়ার ১৯৮০ সালে কাব্য চর্চায় বাংলা একাডেমী পুরস্কার ও ২০০৮ সালে সাহিত্যে অবদানের জন্য একুশে পদক লাভ করেন।

১০ অক্টোবর ২০১৩ সালে সিলেট নগরের ভার্থখলায় নিজ বাসভবনে তাঁর মৃত্যূবরন করেন কবি দিলওয়ার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত