০৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ২৩:৫৭
বিজয়ের ৪৫ বছর ও থিয়েটার মুরারিচাঁদ আত্মপ্রকাশের ৪র্থ বার্ষিকী উপলক্ষে থিয়েটার মুরারিচাঁদ আয়োজিত তিনদিনব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব সম্পন্ন হয়েছে।
গত ২ জানুয়ারি সকালে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা, এমসি কলেজ শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতীয় পতাকা ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নিতাই চন্দ্র চন্দ তিনদিনব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।
থিয়েটার মুরারিচাঁদের শিল্পীবৃন্দের উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশনের পর মনোজ্ঞ নৃত্যালেখ্য পরিবেশন করে আমন্ত্রিত সংগঠন ছন্দ নৃত্যালয়।
মুরারিচাঁদ কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মু. হায়াতুল ইসলাম আকঞ্জির সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, সাংস্কৃতিক জাগরণের মাধ্যমে একটি সুস্থ-সুন্দর ও আলোকিত সমাজ বিনির্মাণ সম্ভব।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন থিয়েটারের সাধারণ পরিষদের আহ্বায়ক বিধান সিংহ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাধারণ পরিষদের প্রাক্তণ সদস্যসচিব দিলোয়ার হুছাইন, সহযাত্রী সংগঠন জাতীয় কবিতা পরিষদ মুরারিচাঁদ শাখার সাবেক সভাপতি অসীম সরকার, রোভার স্কাউট গ্রুপের পক্ষ থেকে শিপন সুত্রধর, ছাত্রনেতা হোসাইন আহমদ ও টিটু চৌধুরী, ফটোগ্রাফার ও সাংবাদিক সুমন দে ও সম্মিলিত নাট্যপরিষদের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু মুসা আল তারেক, পদার্থবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও থিয়েটারের কার্যনির্বাহী পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক তৌফিক এজদানি চৌধুরী, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও থিয়েটারের কার্যনির্বাহী সদস্য ড. সাহেদা আখতার, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অরুণ কুমার পাল, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও থিয়েটারের কার্যনির্বাহী সদস্য রজত কান্তি সোম, পদার্থবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও থিয়েটারের কার্যনির্বাহী পরিষদের কোষাধ্যক্ষ আবুল আনাম মো. রিয়াজ, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও থিয়েটারের কার্যনির্বাহী সদস্য মো.আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক ও থিয়েটারের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. তোতিউর রহমান।
২০১৭-১৮ কার্যকালের এক বছর মেয়াদি সাধারণ পরিষদের সদস্যবৃন্দের নাম ঘোষণা করেন থিয়েটারের সম্পাদক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর শামীমা চৌধুরী। কমিটিতে আছেন আহ্বায়ক- গোলাম মাহদী, সদস্যসচিব- ফাহমিদা এলাহী বৃষ্টি, অর্থসচিব- দুলাল দাস, দপ্তর ও প্রচার সচিব- সাব্বির শুভ, অনুষ্ঠান সমন্বয়ক- দেবদাস চক্রবর্তী।
উৎসবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মুরারিচাঁদ কলেজের শহিদমিনার সংলগ্ন স্থানসমুহ, ইংরেজী বিভাগ প্রাঙ্গন এবং পুকুরপাড় ঘেঁষে প্রাকৃতিক ফটোগ্যালারিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে ঘুরে দেখেন আলোকচিত্রপ্রেমীরা। সবার জন্য উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনীতে স্থান পায় দুই শতাধিক আলোকচিত্র। বিচারক হিসেবে ছিলেন সিলেটের সিনিয়র ফটোসাংবাদিক শেখ মুহাম্মদ নাসির, আলোকচিত্রী সুমন দে ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রথিতযশা আলোকচিত্রী।
উৎসবের ২য় দিনের সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশগ্রহন করে উদীচী সিলেট, নগরনাট সিলেট, থিয়েটার বাংলা, প্যান্টোমাইম সিলেট, জাতীয় কবিতা পরিষদ, মোহনা ও রোভার স্কাউট। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ফাঁকে বিজয়ী আলোকচিত্রীদের মাঝে পুরস্কার ও সনদ তুলে দেন অধ্যক্ষ প্রফেসর নিতাই চন্দ্র চন্দ। আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে প্রথম হয়েছেন আহনাফ আবির, দ্বিতীয় হয়েছেন যৌথভাবে সুবুজ কান্তি দাস ও দিলোয়ার হুছাইন, তৃতীয় স্থান পেয়েছেন যৌথভাবে রাসেদ আহমদ ও সাইফুল ইসলাম জীবন। অংশগ্রহনকারী সকল আলোকচিত্রীকে সনদ প্রদান করা হয়।
উৎসবের সমাপনী দিনে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেয় উদীচী, থিয়েটার সিলেট, মৃত্তিকায় মহাকাল, আমরা ক'জন নাট্যকর্মী, নবশিখা নাট্যদল, জাতীয় কবিতা পরিষদ। একক পরিবশনায় অংশ নেন গণসংগীতশিল্পী অংশুমান দত্ত অঞ্জন, সৈয়দ সায়মুম আঞ্জুম ইভান, আবু বকর আল-আমিন, এমরাজ চৌধুরী, ওলিউর রহমান সামী, ঐন্দ্রিলা মজুমদার অর্ণা, কাউসার হোসেন অনিক, সৌরভ সরকার, রাজিব সোহাগ, নাজমুল ইসলাম ইমন প্রমুখ। আয়োজক সংগঠনের পরিবেশনায় ছিল আবৃত্তি, সংগীত, নৃত্য ও নাটক।
উৎসবের প্রতিটি সন্ধ্যা ছিল দর্শকে পরিপূর্ণ। এই আয়োজন ও সাংস্কৃতিক উৎসব সফল করতে যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহযোগীতা করেছেন, তাঁদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে আয়োজন সংগঠন থিয়েটার মুরারিচাঁদ।
আপনার মন্তব্য