সিলেটটুডে ডেস্ক

২৭ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ২২:৩৬

সিলেটের প্রখ্যাত শিল্পীদের কণ্ঠের গানে দর্শক-শ্রোতাদের উচ্ছ্বাস

বেঙ্গল সংস্কৃতি উৎসব

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘সিলেট শুধু বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে না, তারা যে রেমিট্যান্স পাঠান, তাতে বাংলাদেশ সরকার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। অনন্য সংস্কৃতির উদাহরণ এই সিলেট। আর বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে নিয়মিতভাবে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন তুলে ধরছে। বাংলাদেশে সংস্কৃতির অগ্রযাত্রায় বেঙ্গল ফাউন্ডেশন এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। একসময় সংস্কৃতির কারণে বাংলাদেশ বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে। আর সিলেট হবে এই নেতৃত্বের চালিকাশক্তি।’

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে আটটায় নগরের মাছিমপুর এলাকার আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে বেঙ্গল সংস্কৃতি উৎসবে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় স্বাগত বক্তব্য দেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সুপ্রিয় চক্রবর্তী রঞ্জু ও মদন মোহন কলেজের অধ্যক্ষ আবুল ফতেহ ফাত্তাহ। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেছেন আমিনুল ইসলাম চৌধুরী লিটন।

বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত উৎসবের সোমবার ছিল ষষ্ঠ দিন। এদিন বেলা চারটায় সৈয়দ মুজতবা আলী মঞ্চে যথাক্রমে ‘অজ্ঞাতনামা’, ‘জালালের গল্প’ ও ‘আয়নাবাজি’ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। তবে সোমবার সংস্কৃতি উৎসবের পুরোটাই ছিল সিলেটি শিল্পীদের পরিবেশনা। নিজ জনপদ ও অঞ্চলের গানে এখানকার দর্শকেরাও বিষয়টি দারুণভাবে গ্রহণ করেছেন। এ বিষযটি সিলেট অঞ্চলের মানুষেরা খুবই ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বেলা পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত গুরুসদয় দত্ত চত্বরে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী নাগরিপুথি পাঠ করেন আলী আসহাব।

সন্ধ্যা ছয়টা ২০ মিনিটে হাসন রাজা মঞ্চে রামকৃষ্ণ সরকার ও তার দল ধামাইলগান পরিবেশন করেছে। এরপরই ছিল প্রয়াত বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের অন্যতম প্রধান শিষ্য এবং সিলেটের এই সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় বাউল আবদুর রহমানের পরিবেশনা। তিনি গান পরিবেশন করে দর্শক-শ্রোতাদের মাতিয়ে রাখেন।

এরপর আলোচনা সভার পর চা জনগোষ্ঠীর শিল্পীরা ঝুমুর ও কাঠিনৃত্য পরিবেশন করেন। চা জনগোষ্ঠীর পরিবেশনার পর গান গাইতে মঞ্চে আসেন একুশে পদকপ্রাপ্ত লোকসংগীতশিল্পী সুষমা দাশ। তিনি রাধারমণ, শাহ আবদুল করিমসহ সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন গীতিকারদের গান পরিবেশন করেন। এরপর গান পরিবেশন করেন শিল্পী মো. শামীম আহমেদ ও বাউল সূর্যলাল দাশ।

উৎসবের ৭ম দিন মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) পরিবেশনা : সৈয়দ মুজতবা আলী মঞ্চে বেলা চারটা থেকে যথাক্রমে ‘দিপু নাম্বার ২’, ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ ও ‘গেরিলা’ চলচ্চিত্র তিনটি প্রদর্শিত হবে। এরপর সন্ধ্যা ছয়টা ২০ মিনিটে হাসন রাজা মঞ্চে মো. মনিরুজ্জামান বাঁশিবাদন পরিবেশন করবেন। এরপর ভজন ও কীর্তন পরিবেশন করবেন সাথি ইসলাম ও বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি। পরে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করবেন শামা রহমান। সবশেষে রবীন্দ্রসংগীত ও আধুনিক গান পরিবেশন করবেন ভারতের প্রখ্যাত শিল্পী শ্রীকান্ত আচার্য্য।

উল্লেখ্য, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ১০ দিনব্যাপী এ উৎসব চলবে ৩ মার্চ পর্যন্ত। পুরো উৎসবটি উৎসর্গ করা হয়েছে জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাককে। ইনডেক্স গ্রুপ নিবেদিত এ উৎসবের সহযোগিতায় রয়েছে ঢাকা ব্যাংক। সম্প্রচার সহযোগী চ্যানেল আই। প্রতিদিনই কয়েকটি মঞ্চে অনুষ্ঠান হবে। মূল অনুষ্ঠান হবে সৈয়দ মুজতবা আলী এবং হাসন রাজা মঞ্চে। এ ছাড়া প্রথম দিন থেকেই শাহ আবদুল করিম চত্বরে বাদ্যযন্ত্র ও সিলেট অঞ্চলের লোকগানের ইতিহাস নিয়ে প্রদর্শনী; গুরুসদয় দত্ত চত্বরে কারুমেলা ও বেঙ্গল প্যাভিলিয়ন এবং কুশিয়ারা কলোনেডে স্থাপত্য প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। রাধারমণ দত্ত বেদিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সুবীর চৌধুরী আর্ট ক্যাম্প।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত