অরণ্য রণি

০৩ মার্চ, ২০১৭ ০১:১২

সঙ্গীতের হারিয়ে যাওয়া মণি-মুক্তার খোঁজে

বেঙ্গল সংস্কৃতি উৎসব

সিলেটে চলমান ১০ দিনব্যাপী বেঙ্গল সংস্কৃতি উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম চত্বর। চেনা-অচেনা বাদ্যযন্ত্রের পাশাপাশি এখানে রয়েছে সিলেট অঞ্চলের সব ধরনের আঞ্চলিক ও বিলুপ্তপ্রায় গানের তথ্য ও প্রেক্ষাপট। আর এসব গানের নাম জানতে আগ্রহের কমতি নেই দর্শনার্থীদের। প্রতিদিন বিকাল থেকে শুরু হওয়া এ উৎসবে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত চলতে থাকে সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষের উপচেপড়া ভিড়।

গানের এই বিশাল ভাণ্ডারে রয়েছে হাজিরাতের গান, গোপন কীর্তন বা গোপী গান, বিনালা গান, বনদুর্গার গান, শিবের গীত, ডরাই পূজার গান, বটখিলা গান, অজ্ঞাত রচয়িতার গান, চা বাগানের আদিবাসী লোকসংগীত, ভট্ট সংগীত, সাপে কাটা ওঝার গান, বান্ধা গীত, ঘাটুগান, বারোমাসি গান, মালজোড়া গান, সারিগান, কবিগান, মণিপুরি মৈতৈ লোকসংগীত, গারো লোকসংগীত, মুর্শিদি গান, মারফতি গান, বিয়ের গান, বউ নাচের গান, মুসলিম বিয়ের গান, নৌকাবাইচের গান, হোলি গান, বাউল-মরমি-বৈষ্ণব ধারার গান, হোলি গান, চড়কপুজার গান, লাছাড়ী গান, ত্রিনাথের গান, গোবিন্দনাথের গান, ছাদ পেটানোর গান, জারিগান, কীর্তন গান, ভাটিয়ালি গান, মালসীগান, ঝুলন সংগীত, পাঁচালি গান, মনসার গান বা ভাসানের গান, নির্বাণ সংগীত বা জগন্মোহনী সম্প্রদায়ের গান, গণসংগীত, গাজীর গীত, ব্রতগান। এর মধ্যে অনেক গান রয়েছে যেগুলো বিপন্ন।

জ্বিন, ভূত, দেও ও পরি- বিশেষ ধরনের অসুখ ছাড়ানোর হাজিরাত করার সময় গুণিনরা বিভিন্ন গান গেয়ে থাকেন। সিলেটের গ্রামাঞ্চলে জ্বিন-ভুতের আছর ছাড়াতে হাজিরাতের আয়োজন করা হতো। যেমন-
খেলগো পরী খেল
শাহ পরী এ পাইছে তোরে
উঠিয়া ধামাইল খেল।

রয়েছে রাধা-কৃষ্ণ বিষয়ক রসাত্মক তত্ত্বীয় গান। এই গানে হাস্যরসের সঙ্গে অনেক কঠিন কথাকে হালকাভাবে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। এখন গোপনী কীর্তন দেখা যায় না বললেই চলে। এই গানের উদাহরণ-
হরি বলতে আনন্দ বাড়ে, বল হরি বল।
একবার বল হরি বল হরি বল হরি বল।

গ্রামীণ সমাজে অভাব অনটন, আশা-নিরাশার মাঝে ভাগ্য পরীক্ষা নির্ধারণের জন্য এক ধরনের গান গ্রামের নারীরা গাইতেন। সেগুলো এমন ছিলো-
কালাচান্দে ঘুরিয়া দৌড়াইন গাঙ্গের চরে
চরেরে ও কালাচান ভিনদেশিরে,
রমজান কন্যা ছিনান করইন সান বান্দাইল ঘাটেরে।

সিলেট অঞ্চলে বর্তমানে দুর্গাপুজার প্রচলন থাকলেও বনদুর্গার পূজার প্রচলন খুবই কম। বনদুর্গা পূজায় নারীরা এক ধরণের গান করে থাকেন। এই গান এখন বিরল। গণ ও মাটির দ্রোহী দেবতা শিবঠাকুরের শক্তি মাহাত্ম্য নিয়ে রচিত হয়েছে গান। এই শিবের গীত একসময় সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলে শোনা যেত। এ গান বর্তমানে বিলুপ্ত। প্রাচীনকালে সিলেটের গ্রামাঞ্চলে নিশিরাতে ডরাই পূজার গান গাওয়া হতো। এই গানও একেবারেই বিলুপ্ত।

ঘাটু গান অপেক্ষাকৃত হালকা গান (কথাও কম)। যখন ঘাটুর ছোকরা বা ছেলে নিজে অঙ্গভঙ্গি করে নেচে নিজেই গান গায়, তখন তাকে বলা হয় ঘাটু গান। এই ঘাটু ছেলে মেয়ের মতো পোশাক পরে নাচতে থাকে।

ঘাটে নৌকা ভিড়িয়ে এই গান গাওয়া হয় বলে একে ঘাটু গান বলে। বাংলাদেশের অনেক জায়গায় একসময় ঘাটুগানের প্রচলন ছিল। মধ্যযুগে সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় এই গানের উদ্ভব হয়, যা ঘাটুগান বা ঘাটু নাচ হিসেবে পরিচিত। বর্ষা ও শরৎকালে ঘাটু নাচ-গানের ব্যবসায়ীরা ঘাটু বালককে নিয়ে গ্রামে গ্রামে গ্রামে গ্রামে ঘুরে নাচ-গান পরিবেশন করে অর্থ উপার্জন করে। ঘাটুগানে ঘাটু ছোকরা অঙ্গভঙ্গি ও নৃত্য সহযোগে বিশেষ পোশাক পরে নাচে। ঘাটুগানের রচয়িতাদের মধ্যে হবিগঞ্জের তরফ নিবাসী তস্যরাম ও মুন্সি ভবানী প্রসাদের নাম জানা যায়। গান ছিলো এমন-
ও রূপ আমারই অন্তরে গো রইল,
আচানিক রূপ সই গো যমুনার কিনারে।
জল ভরিতে গেলাম সই গো যমুনার কিনারে,
ঘাগুরী ভাসাইয়া গো জলে, চাইয়া রহিলাম রূপ পানে।

সিলেট অঞ্চলে বহু অজানা-অজ্ঞাত চারণ কবি, সুফি-সাধক তাদের প্রাণের কথা গানে লিখে গেছেন। সাধকদের সাধনার ফসল এই গানগুলো মুখে মুখে প্রচলিত থাকলেও এর রচয়িতাদের পরিচয় এখনো অজ্ঞাত রয়ে গেছে। এমন গান হলো-
অকূল সাগরে রে কেমনে পাড়ি দিবরে
দিবানিশি কান্দি আমি নদীর কূলে বইয়া।
যারা ছিলো চতুর মাঝি তারা গেল বাইয়া।
আমি অধম রইলাম বসি ভাঙ্গা তরী লইয়ারে।
এ দেহ মাটির পিঞ্জিরা থাকে কি রে পড়িয়া।
জানি পাখি যাইবায় রে ছাড়িয়া।

সিলেট বিভাগের চা বাগানগুলোতে বসবাসরত আদিবাসী চা শ্রমিকদের নানা জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রাচীনকাল থেকে লোকগানের প্রচলন ছিল। বর্তমানে এ ধরণের গানের ক্ষীণ ধারা বহমান।

ভট্ট সম্প্রদায়ের রচিত কবিতা বা গান ভট্টসংগীত হিসেবে পরিচিত ছিল। তারা জন্মগত লোককবি ছিলেন, কবিতা বা গান উপস্থিত সময়ে রচনা করতে ভট্টরা ছিলেন সিদ্ধহস্ত। সাপের কাটা ও প্যারালাইসিস রোগীর চিকিৎসায় ঝাড়ফুঁকে এই বিশেষ ধরণের সংগীত ব্যবহার করা হতো, বর্তমানে এ ধরনের গান আর শোনা যায় না। যেমন-
গুণী জ্ঞানীগণ করো শ্রবণ
ব্রহ্ম নিরূপণ কথা,
এক ব্রহ্মবিনে এ তিন ভুবনে
দ্বিতীয় নাহিক সর্বথা।

সিলেটে সাধারণত বিয়ের অনুষ্ঠানে রং-ঢং করে যে ব্যঙ্গাত্মক গান করা হয়ে থাকে, সেগুলোকে বান্ধা গান বলা হয়। কখনো ধামাইলের মাধ্যমে, কখনো বা বসে এ গান গাওয়া হয়। যেমন-
তোমরা শুনছনি গো রাই
কাইল যে আইছে নোয়া জামাই, বলদ নাকি গাই (গাভী)।
এক বলদ নোয়া জামাই এক বলদ তার ভাই
এগো আরেক বলদ সঙ্গে আইছে তার বইনের জামাই।

একসময় সিলেট অঞ্চলে বেশ জনপ্রিয় ছিল বারোমাসি গান। এই গানগুলো গ্রামে গৃহস্থ বাড়ির উঠান অথবা বড় বটগাছের নিচে খোলা মাঠে আসর জমিয়ে পরিবেশন করতেন গায়েনরা। বারোমাসি গানগুলোতে আমাদের লোকসমাজের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, শাসন-শোষণ, প্রেম-বিরহের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। বারোমাসি গান হলো-
কালা কালা কালা দো শান্তি কালা মাথার কেশ
তোরই লাগি ছাড়ি আইলাম বাপ ভাইয়ের দেশ ওরে কি।
এইত পৌষরে মাস দ্বিতীয়ার উঠে চান্দ
কেমনে রাখিমু আমি নাগরের পরান। ওরে কি।

বৃহত্তর সিলেটে এক সময় শাহ আব্দুল করিম, দূরবীন শাহ প্রমুখ বাউল শিল্পী গানের মাধ্যমে তর্কযুদ্ধে অবতীর্ণ হতেন। বর্তমানেও সিলেট অঞ্চলে বাউলদের মধ্যে এই মালজোড়ার প্রচলন আছে।

মালজোড়া লোকসংগীতের বাউলধারার একটি শাখা। এই গানগুলো বাউল ভাবাদর্শের ওপর প্রতিষ্ঠিত। বৃহত্তর সিলেটের সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের ভাবুক লোকসাধকদের মধ্যে এই গানগুলো প্রচলিত। বাউলশিল্পীদের মধ্যে দুজন দুই পক্ষে অবস্থান করেন। পাল্টাপাল্টি গান পরিবেশন ও উপস্থাপনার মাধ্যমে এ গানগুলোতে বাউল দর্শনের নানা তাত্ত্বিক বিষয় ফুটিয়ে তোলা হয়। যেমন-
ময়মনসিংহের মুগ ভালো, খুলনার ভালো দই।
ঢাকার ভালো পাতাক্ষীর, বাঁকুড়ার ভালো দই।
কৃষ-নগরের ময়রা ভালো, মালদহের ভালো আম।
উলোর ভালো বাঁদর পুরুষ, মুর্শিদাবাদের ভালো জাম।
রংপুরের শ্বশুর ভালো, রাজশাহীর জামাই।
নোয়াখালীর নৌকা ভালো, চট্টগ্রামের ধাই।
দিনাজপুরের কায়েত ভালো, হাবড়ার ভালো শুঁড়ি।
পাবনা জেলার বৈষ্ণব ভালো, ফরিদপুরের মুড়ি।
বর্ধমানের চাষি ভালো, চব্বিশ পরগণার গোপ।
গুপ্তিপাড়ার মেয়ে ভালো, শ্রীঘ্রবংশ্লোপ।
হুগলির ভালো কোটাল লেঠেল, বীরভূমের ভালো বোল।
ঢাকের বাদ্য থামলেই ভালো, হরি হরি বোল।

সারিগান সিলেট অঞ্চলে বেশ জনপ্রিয়। প্রাচীনকাল থেকে এ গানের প্রচলন ছিল বলে অনেকে অনুমান করেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিল্পীরা এই গানগুলো পরিবেশন করেন। সিলেট অঞ্চলে ভাদ্র মাসে আমন ধানের চারা লাগানোর সময় কৃষকরা সারিগান গেয়ে থাকেন। সারিগান শুরু করা হয় বন্দনাগীতের মাধ্যমে। সারিগানে করতাল-মন্দিরাসহ হালকা বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হয়। এই গান এমন-
আল্লায় বলিয়া নাও খোল রে
ভাই সক্কলি।
আল্লাহ বলিয়া খোল।
ওরে আল্লা বল নাও খোল
শয়তান যাবে দূরে।
ওরে যে কলম পইড়া দেছে
মোহাম্মদ রাসূলেরে
ভাই সক্কল।

এই গানে দু'দল কবি গায়ক আসরে বিশেষ রীতিতে গান পরিবেশন করেন। দু'জন কবিয়ালের বিপরীতধর্মী দুটি বিষয় নিয়ে বিভিন্ন কথা উপস্থাপন ও যুক্তিসহকারে তাৎক্ষণিকভাবে গান রচনা করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার চেষ্টা এই গানের মূল লক্ষ্য। উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে সিলেটে কবিগানের জমজমাট আসর বসে। বর্তমানে কবিয়াল বা সরকার তেমন নেই। সেকালের কয়েকজন কবিয়াল হলেন- সিলেটের প্রসন্নকুমার ভট্টাচার্য, ফণীভূষণ দাস, সুনামগঞ্জের হরিচরণ সরকার, হবিগঞ্জের সতীশ চক্রবর্তী।

মৈতৈ ভাষায় মেইতেই লোন, মেইতেই লোল, পাংগাল-লোল, মণিপুরি ভাষা নামে পরিচিত সিলেট বিভাগে বসবাসকারী মণিপুরি মৈতৈ ও বিষ্ণুপ্রিয়া এ দুই সম্প্রদায়ের লোকসংগীত বৈচিত্র্যপূর্ণ ও সমৃদ্ধ। এসব গানের গীতিকার বা রচয়িতার কোন সন্ধান পাওয়া যায় না। যেমন-
চীংদা শাৎপা উংগেল্লৈ
চন্নদনা কেনখিবা
কল্লকই দে।
ঐনা কেনগো হুম্বগী
কেনবদি দে।
মালংবা ঐসু কৈদৌদে
লৈবাংনা লৈখোক লোইবগী
কেনবদিদি

গারোদের সমাজে মাতৃতান্ত্রিক পরিবার প্রথা প্রচলিত। তাদের প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবের নাম 'ওয়ানগালা'। সেই সময় দেবতা মিসি আর সালজং এর উদ্দেশে উৎপাদিত ফসল উৎসর্গ করা হয়। আশ্বিন মাসে গ্রামের মানুষদের সামর্থ্য অনুযায়ী সাতদিন কিংবা তিনদিন ধরে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

গারোদের বাদ্যযন্ত্রের মধ্যে আছে মান্দিদামা, ক্রাম, খোল, নাগ্রা, জিপসি, খক, মিলাম, স্ফি, রাং, রাশের বাঁশি, আদুরি। তাদের পোশাক দকবান্দা, দকশাড়ি, খকাশিল, দমী, রিক মাচুল। কোচ আদিবাসীরা পরেন রাঙ্গা লেফেন ও আছাম।

বাংলা ভাষার দ্বিতীয় হরফ সিলেটি নাগরী আমাদের কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে। পাণ্ডুলিপিটি ভেলা শাহ লিখিত আধ্যাত্মিক তত্ত্ব বিষয়ক গানের সংকলন-
কহে ফকির ভেলা শাহ
মৌতের দুখ জানে আল্লা
তার দুখ আর জানিবে কে।

সিলেটের লোকসংস্কৃতিতে নারীদের এক গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা আছে। বিশেষত বিয়ের গীত ও ধামাইল নৃত্য গানে। এ অঞ্চলের মেয়েরা তাদের আচার-ব্যবহার, পোশাক-পরিচ্ছদ প্রভৃতির মধ্যে আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্যকে যেমন ধরে রেখেছেন, তেমনি লোকসংগীতেও দেখি আমাদের নারীরা প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে চলছেন। এ ধরণের গান হলো-
তোমরা কুঞ্জ সাজাও গো
আজ আমার প্রাণনাথ আসিতে পারে
জবা কুসুম সন্ধ্যামালী আনোরে তুলিয়া
মনোরঙে সাজাও কুঞ্জ সব সখি মিলিয়া

মুর্শিদি বলতে আধ্মাতিক গান বোঝায়, যার মাধ্যমে নিজেকে চেনা ও আল্লাহকে চেনা যায়। যিনি সত্য পথের প্রদর্শক, তিনিই মুর্শিদ। মুর্শিদ বা গুরুর প্রতি ভক্তি বিষয়ক সংগীতকে মুর্শিদি গান বলে।

মারফত আঞ্চলিক ভাষার অন্তর্গত একটি শব্দ। মারিফত শব্দ থেকে এর উৎপত্তি। এর অর্থ আধ্যাত্মজ্ঞান। মারফতি গান বলতে আধ্যাত্মজ্ঞান সঞ্চারি সংগীতকে বুঝায়।

এছাড়াও সিলেট অঞ্চলের গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিয়ের গান, বউ নাচের গান, মুসলিম বিয়ের গান, নৌকাবাইচের গান, হোলি গান, বাউল-মরমি-বৈষ্ণব ধারার গান, হোলি গান, চড়ক পুজার গান, লাছাড়ী গান, ত্রিনাথের গান, গোবিন্দনাথের গান, ছাদ পেটানোর গান, জারিগান, কীর্তন গান, ভাটিয়ালি গান, মালসীগান, ঝুলন সংগীত, পাঁচালি গান, মনসার গান বা ভাসানের গান, নির্বাণ সংগীত বা জগন্মোহনী সম্প্রদায়ের গান, গণসংগীত, গাজীর গীতম ও ব্রতগানের উল্লেখ রয়েছে।

সিলেটের বিশিষ্টব্যক্তিবর্গ রামকানাই দাস, বিদিত লাল দাস, মৃদুলকান্তি চক্রবর্তী, হাছন রাজা, বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম, শীতালং শাহ, সৈয়দ শাহনুর, শেখ ভানু, আরকুম শাহ, দুর্বিন শাহ, হেমাঙ্গ বিশ্বাসের জীবনীও প্রদর্শিত হচ্ছে এ চত্বরে।

এছাড়াও বেঙ্গল সংস্কৃতি উৎসব যার নামে উৎসর্গ করা, সেই জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাকের সংক্ষিপ্ত জীবনী এখানে রয়েছে।

সিলেট মুরারি চাঁদ কলেজের সম্মান শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী পাপলু দে ও মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী সায়েম কাবেরি পাল সিলেটটুডে টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সিলেট অঞ্চলে এতো ধরণের গান আছে, তা আমরা আগে জানতামই না। এখানে এসে এসব সম্পর্কে অবগত হয়েছি। এখানে বিভিন্ন ধারার গানের উৎপত্তি, মাহাত্ম্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা আছে। আমাদের তরুণ প্রজন্মের কাছে এ সকল গান পৌঁছে দেয়া প্রয়োজন। অন্যথায় এ সকল গানের বিলুপ্তি ঘটতে পারে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত