নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ মে, ২০১৭ ০১:০৫

ভাস্কর্যশিল্পী সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ আর নেই

'অপরাজেয় বাংলা'র ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ আর নেই। শনিবার রাত ১১:৪৫ মিনিটে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

একুশে পদকপ্রাপ্ত এ ভাস্কর্যশিল্পীর পরিবারের ভাতিজা আজিজ মুজতবা শিল্পীর মৃত্যুসংবাদ নিশ্চিত করে জানান, রাত ১১:১৫ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরে ডাক্তাররা ১১ঃ৪৫ মিনিটে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি জানান, ভাস্কর্যশিল্পী সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস সংক্রান্ত জটিলতায় রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি ছিলেন। এছাড়াও তিনি ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।

একুশে পদকপ্রাপ্তির পর দ্বিতীয়বারের মতো গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে তিনি নিজের শহর সিলেটে একটি সম্মাননা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আসেন। এ সময় হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এই গুণী ভাস্করকে।

পরে অবস্থার অবনতি হলে গত সোমবার (১ মে) রাতে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়, এবং পরদিন মঙ্গলবার (২ মে) ভোরে রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরে এখান থেকে তাঁর অবস্থার আরো অবনতি হলে তাঁকে বারডেম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ বাংলাদেশের একজন স্বনামখ্যাত ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত অপরাজেয় বাংলা স্থাপনার ভাস্কর।

শিল্পকলা ও ভাস্কর্যে গৌরবজনক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১৪ সালে শিল্পকলা পদক এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক-এ ভূষিত হন

আবদুল্লাহ খালিদ সিলেট জেলা শহরে জন্মগ্রহণের পর ১৯৬৯ সালে তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান কলেজ অফ আর্টস অ্যান্ড ক্রাফ্‌টস (বর্তমান চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে চিত্রাঙ্কন বিষয়ে স্নাতক এবং পরে ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিত্রাঙ্কন ও ভাস্কর্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাস্কর্য বিভাগে শিক্ষকতা দিয়ে আব্দুল্লাহ খালিদ তার কর্মজীবন শুরু করেন ।

১৯৭২ সালে সেখানকার লেকচারার থাকাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর উদ্যোগে কলা ভবনের সামনে নির্মিতব্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মারক অপরাজেয় বাংলার নির্মাণের দায়িত্ব পান।

তিনি ১৯৭৩ সালে ভাস্কর্যটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন এবং ১৯৭৯ সালে ১৬ ডিসেম্বর নির্মাণ কাজ শেষ করার পর স্থাপনাটির উদ্বোধন করা হয়।

সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন কেন্দ্রের সামনে অবস্থিত ম্যুরাল ‘আবহমান বাংলা’ এবং ১৯৯৫-১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান দপ্তরের সামনে অবস্থিত টেরাকোটার ভাস্কর্য নির্মাণ করেন।

এছাড়া তাঁর আরো কিছু উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে অঙ্কুর, অঙ্গীকার, ডলফিন, এবং মা ও শিশু।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত