সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ অক্টোবর, ২০১৯ ১০:২৭

মোরশেদা ও নৃত্য নিকেতনকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি

নওগাঁর নৃত্যশিল্পী ও নির্দেশক মোরশেদা বেগম শিল্পী ও তার নাচের প্রতিষ্ঠান নৃত্য নিকেতন পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক ড্যান্স কাউন্সিলের সদস্য হয়েছেন নওগাঁর নৃত্যশিল্পী ও নির্দেশক মোরশেদা বেগম। একই মর্যাদা পেয়েছে মোরশেদার নাচের প্রতিষ্ঠান নৃত্য নিকেতন।

ঢাকার তুরঙ্গমী স্কুল অব ড্যান্স এর পূজা সেনগুপ্তা ও নৃত্যশিল্পী শর্মিষ্ঠা সোনালিকা সরকার-এর পর বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই স্বীকৃতি পেল মোরশেদা বেগম শিল্পী ও নৃত্য নিকেতন।

এই স্বীকৃতির ফলে এখন থেকে ইউনেস্কোর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেন মোরশেদা ও তার দল। শুধু তা-ই নয়, দেশে আন্তর্জাতিক মানের যেকোনো নৃত্যানুষ্ঠান আয়োজনেও সহায়তা করবে ইউনেস্কো। ইতিমধ্যে তারা ন্যাশনাল ড্যান্স কাউন্সিল থেকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পেয়েছে। জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল ড্যান্স কাউন্সিলের সাধারণ সভায় যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছেন মোরশেদা এবং তার দল।

আগামী ৪ ডিসেম্বর ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত হবে ২৩তম এই সভা। নৃত্য বিষয়ে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই আয়োজন।

নওগাঁ ডিসি অফিসে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করেন মোরশেদা বেগম শিল্পী।

মোরশেদা বেগম শিল্পী জানান, শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনো তেমন কোনো সাড়া মেলেনি। এ সভায় অংশ নেওয়ার জন্য শুধু সেখানকার থাকা, খাওয়া এবং স্থানীয় যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হবে ইন্টারন্যাশনাল ড্যান্স কাউন্সিল থেকে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের বেশির ভাগ সদস্যের পাসপোর্ট নেই। ফ্রান্সে যাওয়া–আসা করার সংগতি নেই।’

ইউনেস্কোর স্বীকৃতি সম্পর্কে ১৯৭৮ সালে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় নৃত্যে রাষ্ট্রপতি পদক পাওয়া মোরশেদা বেগম শিল্পী বলেন, ‘আমরা কোনো রকম যোগাযোগ করিনি কিংবা কোনো ধরনের আবেদনের বিষয় ছিল না। আগস্ট মাসের ৭ তারিখে প্রথম ইউনেস্কোর সদর দপ্তর থেকে আমাদের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করে। ইউনেস্কোর ইন্টারন্যাশনাল ড্যান্স কাউন্সিলের পক্ষে কাউন্সিলের প্রেসিডেন্টের অ্যালকিস রাফটিস সরাসরি যোগাযোগ করেন। সে সময় অ্যালকিস রাফটিস জানতে চান, “আমাদের যদি বিদেশে নাচ পরিবেশনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়, তাহলে আমরা যাব কি না?” আমরা যেতে রাজি হলে, তিনি আমাদের সংগঠনের এবং আমার বিস্তারিত তথ্য জানতে চান। সেসব পাঠানোর পর তারা ফোনে যোগাযোগ করেন। গত ৩০ আগস্ট সন্ধ্যা সাতটায় তারা আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানান, আমি এবং নৃত্য নিকেতনকে এই আন্তর্জাতিক ড্যান্স কাউন্সিলের সদস্য করা হয়েছে।’

১৯৯৭ সালে মোরশেদা বেগম নৃত্য নিকেতন প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমে ছিল নাচ শেখানোর বিদ্যালয়। পরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাছাই করা ছেলেমেয়েদের নিয়ে নাচের দল চালু করেন। জাতীয় পর্যায়ে তাদের স্বীকৃতির মধ্যে রয়েছে জাতীয় মৌসুমি প্রতিযোগিতায় আঞ্চলিক নৃত্য বিভাগে পরপর সাতবার বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকার, জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদকসহ ‘বাংলাদেশ নৃত্য শিল্পী সংস্থা’ আয়োজিত নৃত্য প্রতিযোগিতায় নৃত্য নিকেতন লোকনৃত্য (দলীয়) প্রথম।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত