সিলেটটুডে ডেস্ক

১৬ আগস্ট, ২০১৬ ১৯:১৮

অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য ‘অগ্রহণযোগ্য’, সিস্টেম লসের নামে লুটপাট বন্ধের দাবি ক্যাবের

'বাসা বাড়িতে রান্নার কাজে গ্যাস এর সংযোগ বন্ধ করা হবে' মাননীয় অর্থ মন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এর এ প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ক্যাব)

এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, "অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য সকলের জন্য জ্বালানী নিরাপত্তা বিধানে সরকারী অঙ্গীকারের পরিপন্থী এবং গ্যাস খাতে সিস্টেমম লসের নামে লুটপাট বন্ধ না করে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার প্রস্তাব গণবিরোধী ও জনস্বার্থ পরিপন্থী।"

বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগে মিটার স্থাপন, গ্যাস বিতরণ ব্যবস্থায় আধুনিকায়ন করা, সমগ্র দেশকে এলপিজি নেটওয়ার্কের আওতায় আনার জন্য এলপিজি খাতে সরকারের সক্ষমতা বাড়ানোর দাবিও করেছে  দেশের ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠানটি।।

বাসাবাড়িতে রান্নার কাজে গ্যাস সংযোগ আর নয় মাননীয় অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এক বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ’র পরামর্শে জ্বালানী খাতে সরকারের এ গণবিরোধী সিদ্ধান্তকে হঠকারী ও দুঃখজনক বলে মন্তব্য করে এ প্রক্রিয়াকে হতাশাজনক ও অবিলম্বে এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ও কমিশন পুনর্গঠনের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে।

তারা বলেন, দেশের মোট গ্যাসের মাত্র ১২ শতাংশ গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার হলেও গ্যাস সংযোগ, শিল্প কলকারখানায় গ্যাস সংযোগের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট হলেও সরকার বা পেট্রো বাংলা গ্যাস কোম্পানিগুলি অসাধু কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে বাসা বাড়ীতে সাধারণ গ্রাহকদের উপর খড়গ চালাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সরকার জ্বালানি নিরাপত্তা বিধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ না করে বর্তমান জ্বালানী নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছেন বলে দাবি করে অবিলম্বে এ ধরনের পরিকল্পনা থেকে সরে এসে দেশে গ্যাস অনুসন্ধানে পেট্রো বাংলার অব্যবহৃত বিপুল তহবিল কাজে লাগিয়ে নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার, পেট্রোবাংলার সক্ষমতা বাড়ানো, বর্তমান গ্যাস বিতরণ ব্যবস্থায় আধুনিকায়ন, গ্যাস সংযোগে মিটার চালুসহ গ্যাস চুরি বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

বিবৃতিতে তারা আরও অভিযোগ করেন, বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্য ও সেবা সার্ভিসের উর্ধ্বগতি পাগলা ঘোড়া বাজারে আগুন ছড়াচ্ছে যা মধ্যবিত্ত জনগনসহ সর্বস্তরের সাধারণ নাগরিকদের জীবনযাত্রাকে ভয়াবহ দুর্বিষহ করে তুলেছে। বাসা বাড়ীতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করা হলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যয় আরো বেড়ে যাবে যা সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

অন্যদিকে, এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবসা এখনও গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর হাতে বন্দী। বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ হলে তাদের পোয়াবারো হবে।

তারা বলেন, সাধারণ জনগণের দুর্দশা লাঘবে সরকার প্রধানের যথেষ্ট আগ্রহ থাকলেও নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন পর্যায়ে গুটিকয়েক লোকজনের স্বার্থ সংরক্ষণে বারংবার সিদ্ধান্ত প্রদান করে যাচ্ছে। ফলে মুষ্টিমেয় অসৎ ব্যবসায়ী ও মজুদদাররা নানা টালবাহানায় ও অজুহাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সংকট ও দাম বাড়িয়ে, বিনা নোটিশে সারা দেশে বাস ও গণপরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি, সকল প্রকার ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি, সাময়িক সংকট তৈরী করে জনজীবনে দুর্বিষহ অবস্থা তৈরী করলেও সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বলেন এতে সরকারের কিছুই করনীয় নেই।

সরকার দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও বাজার নিয়ন্ত্রণে কোন কার্যকর উদ্যোগ না নিয়ে সাধারণ জনগণের উপর বাড়তি মূল্যের চার্টটি তুলে দিয়ে জনগণের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে। চিনি, সয়াবিন, চাল, আদা, ডাল, সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের বাজারে ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে বাড়তি মূল্যে বিক্রি করে আগুন ছড়ালেও সে কারণে সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দিবা স্বপ্নে বিভোর। কোন বাজার মনিটরিং এবং বিকল্প বাজার সৃষ্টি নেই।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা  হলেন ক্যাব কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত