অরণ্য রণি

১৯ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০৫

এমসি কলেজের ৩৪১ জনের মধ্যে ২৩৪ জনই জিপিএ-৫ পেয়েছে

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী  মুরারি চাঁদ (এমসি) কলেজে এবার সাফল্যের ধারা অব্যাহত রয়েছে। এই বছর এম.সি কলেজ থেকে ৩৪১ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তাঁর মধ্যে ৩৩৫ জন কৃতকার্য হন। অকৃতকার্যের সংখ্যা ৬।

জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২৩৪ জন শিক্ষার্থী। পাশের হার শতকরা ৯৮.২৪%।

বেলা ১২ টা থেকেই ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। সাথে অনেক অভিভাবকদেরও দেখা যায়।

দুপুর ২ টায় কলেজের অধ্যক্ষ নিতাই চন্দ্র চন্দ শিক্ষার্থী ও অভিভাকদের উপস্থিতে ফলাফল ঘোষণা করেন। ফল ঘোষণার সাথে সাথেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাঁধ ভাঙ্গা উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে।

কলেজের অধ্যক্ষ নিতাই চন্দ্র চন্দ সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমাদের কলেজের ফলাফল ভালো হয়েছে। আমরা খুবই সন্তুষ্ট। আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬৯% শিক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পেয়েছে। প্রথমবারের মত নম্বর প্রদান একটা ভাল দিক। শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারবে কে কত মার্ক পেল। এতে তাঁর অবস্থান সে নিজেই বুঝতে পারবে। পরবর্তীতে উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহণের সময় এটা কাজে লাগাতে পারবে। আর এ বছর প্রশ্ন ফাঁসের কোন গুজব উঠে নি বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অধ্যক্ষ আরো বলেন, এম সি কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন ফাঁসের গুজবে কান দেয় না বিধায় তারা ভালো করতে পারে। প্রতি ১০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন শিক্ষক আছেন যারা নিয়মিত তদারকি করেন শিক্ষার্থীদের। তাঁরা শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও পড়াশোনার ব্যাপারে খোঁজ নেন। এটা আমাদের রেজাল্ট ভালো হওয়ার অন্যতম কারণ।

জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী  আনিসুর রহমান সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জিপিএ-৫ পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। আমাদের এই ব্যাচের উপর স্যারদের অনেক প্রত্যাশা ছিলো। স্যাররা বলেছিলেন আমরা ভাল করবো। আর আমরা তা করতে পেরেছি।

আনিসুর রহমানের স্বপ্ন প্রকৌশলী হওয়ার। তিনি স্বপ্ন দেখেন সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশের।

বুশরাতুস সালাম ও নাহিয়ান নিজিয়া সিলেটটুডেকে বলেন, রেজাল্ট ভালো আসছে। গোল্ডেন এ+ পেয়েছি। আমরা আমাদের ফলাফলে সন্তুষ্ট। নম্বর প্রদানের ব্যাপারে তারা বলেন, পরীক্ষার আগে এটা জানালে ভালো হত। তাতে সবারে সাথে কম্পিটিশন থাকতো। আমরা সবাই চেষ্টা করতাম কিভাবে কার থেকে বেশি নম্বর পাওয়া যায়।

তবে নম্বর প্রদানের ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখা যায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। শিক্ষার্থী কানন তালুকদার এটাকে "গ্যাঞ্জাম"  হিসেবে দেখছেন। তিনি মনে করেন, এতে এক ধরনের মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে পাপিয়া তালুকদার নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, নম্বর প্রদান করায় নিজেকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

লাজিক চৌধুরী নামের এক অভিভাবক সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমার ছেলে জিপিএ-৫ পেয়েছে। খুবই ভালো লাগছে। এবার পাশের হার কম হওয়ায় মেধাটা ভালো করে যাচাই হয়েছে। প্রশ্ন ফাস নিয়ে সব সময় একটা শঙ্কা সৃষ্টি হয় যা শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই খারাপ। কতিপয় অসাধু লোকের কারণে এটা ঘটে থাকে। এবার প্রথমবারের মত নম্বর দেয়ার উদ্যোগটা খুব ভালো লেগেছে।

ওসমানী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ড. কল্লোল বিজয় কর নামের একজন অভিভাবক বলেন, এবারের রেজাল্ট অনেক ভালো হয়েছে। রেজাল্ট প্রতি বছরের মত গদবাধা রেজাল্ট এবার হয় নি। প্রথমবারের মত নম্বর দেয়াটা শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই উপকারি। এটা আরো আগে করলে ভালো হত। আর এবার প্রশ্ন ফাঁস হয় নি বলে তিনি মনে করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত