শফিকুল ইসলাম, রাবি

২০ আগস্ট, ২০১৬ ১৯:৫৬

রাবির শের-ই-বাংলা হলে তল্লাশি, ইমামসহ ১৪ শিবিরকর্মী আটক

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হলে অভিযান চালিয়ে হল মসজিদের ইমামসহ ১৪ শিবিরকর্মীকে আটক করেছে মতিহার থানা পুলিশ।

শনিবার(২০ আগস্ট)  বিকাল তিনটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণে জিহাদি বই, ক্যালেন্ডার, ডায়েরি, লিফলেট, রিপোর্ট বইসহ তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হলের মসজিদের পেশ ইমাম মো. সানাউল্লাহ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, চতুর্থ বর্ষের আব্দুল হক মানিক, শরিফুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের এমবিএর শিক্ষার্থী আনারুল হক, তৃতীয় বর্ষের মোস্তাক, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আব্দুস সবুর, দ্বিতীয় বর্ষের সাজিদ, ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ফাহাদ আলম, দর্শন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আবুল খায়ের, চতুর্থ বর্ষের ইউসুফ আলী, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সের সিরাজুল ইসলাম সুমন, লোকমান হোসেন সিরাজী ও ভাষা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রায়হান হোসেন সুমন।

আরএমপির উপ-কমিশনার আমির জাফর (পূর্ব) এ বিষয়ে বলেন, আমরা সুস্পষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারি পূর্বে নাশকতায় সংশ্লিষ্ট শিবিরকর্মীরা হলে অবস্থান করছে। কয়েকদিনের মধ্যে তারা বৈঠকে বসবে বলেও খবর ছিলো। পরে দুপুর তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় হলে অভিযান চালায়।

এ সময় মসজিদের ভেতর থেকে জিহাদি বই, লিফলেট, ক্যালেন্ডার, ডায়েরিসহ হলের বিভিন্ন কক্ষ থেকে সন্দেহভাজন ১৪ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের সম্পর্কে যদি কোনো ধরনের নাশকতার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলে তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

অভিযান শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, আমরা সকাল থেকেই এদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পেয়েছি। আমাদের কাছে তথ্য আসে আজকে যে কোনো সময়ে এই মসজিদে বিপুল পরিমাণে জিহাদি বই আসতে পারে। সেজন্য আমরা  বিকাল তিনটা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জঙ্গি কার্যক্রম সম্পর্কে সবসময় তৎপর রয়েছে। জঙ্গি কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো  কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষার্থী কিংবা শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মুজিবুল হক আজাদ খান বলেন, রাষ্ট্র বিরোধী কিছু ব্যক্তি সংঘটিত হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে পুলিশ শের-ই-বাংলা হলে অভিযান চালিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে জঙ্গি বিরোধী কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও ছিলো।

পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১৩ জনকে আটক করে। তথ্য যাচাই বাছাই করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এছাড়া মসজিদে মসজিদে এতো পরিমাণে জিহাদি বই কীভাবে আসলো সেটা জানতে মসজিদের ইমামকেও আটক করা হয়েছে বলে জানান প্রক্টর।


এদিকে এঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে থেকে শুরু হয়ে শের-ই-বাংলা ফজলুল হক হলের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম রাঞ্জু বলেন, ‘আমরা সবসময় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সতর্ক রয়েছি। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ছাত্রলীগ পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে আটক করেছে। সামনের দিনে প্রতিটি হল, বিভাগে অভিযান চালিয়ে জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত জামায়াত শিবিরের কর্মীদের আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত