নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ এপ্রিল, ২০১৮ ১৫:২৩

কোটার যৌক্তিকতা আছে, তবে কমিয়ে আনতে হবে: জাফর ইকবাল

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, আমাদের দেশটাকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য সরকারি চাকরীক্ষেত্রে কোটা প্রথার যৌক্তিকতা রয়েছে। তবে তা যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনতে হবে।

বুধবার শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোটাসংস্কার নিয়ে চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে আলাপকালে অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ রাখা নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। এটি আমাকে খুব কষ্ট দেয়। কোনভাবেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ পায় এমন একটি প্রক্রিয়া, এমন একটি সুযোগ রাখার পক্ষে আমি না। কাজেই  মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানটা রক্ষার জন্য আমি মনে করি, এই সংখ্যাটাকে এমন এক পর্যায়ে নামিয়ে আনা হোক, যাতে কেউ মনে করতে না পারে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য আমি চাকরী থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
জাফর ইকবাল বলেন, যে কোনো চাকরীর ক্ষেত্রে কোটাতেই যদি ৫৬ শতাংশ থাকে তাহলে যেকোনো হিসেবেই এই সংখ্যাটা অনেক বেশি। একসময় হয়তো এর প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু এখন আর সে প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই কোটা সংস্কারের দাবিটি অত্যন্ত যৌক্তিক।

তবে ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে কত শতাংশ রাখা উচিত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি এই শিক্ষাবিদ। তিনি বলেন, এই সংখ্যাটা ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে কততে নামিয়ে আনা হবে এ নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। কারণ এ বিষয়ে আমি বিশেষজ্ঞ নই। তবে সবাই মিলে আলোচনা করে এ ব্যাপারে একটি যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশটাকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য আমরা যেরকম চাই, যেমন- মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের একটা সুযোগ দিতে চাই, নারীদের একটা সুযোগ দিতে চাই, বিভিন্ন জেলার সুযোগ দিতে চাই, ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠি, প্রতিবন্ধিদের একটা সুযোগ দিতে চাই। ফলে প্রত্যেকটি কোটারই একটা যৌক্তিকতা আছে। তবে তা যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনা প্রয়োজন।

কোটা সংস্কারে চলমান আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে জাফর ইকবাল বলেন, আমাদের ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে গণজাগরণ মঞ্চ- সব আন্দোলনেই নেতৃত্ব দিয়েছে তরুণা। তাই তরুণদের উপর আমার আস্থা আছে। তারা নিশ্চয়ই সঠিক কাজটি করবে। তবে তারা যেনো সবার উর আস্থা হারিয়ে না ফেলে। কারো না কারো উপর আস্থা রাখতেই হবে।

আন্দোলনকারীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার সমালোচনা করে জাফর ইকবাল বলেন, আন্দোলনকারীরা যদি সংঘাতে জড়ায় তা সামাল দেওয়ার জন্য পুলিশ রয়েছে। ছাত্রলীগ এসবে জড়ানো একেবারেই উচিত নয়। তাতে সরকারের প্রতিও আন্দোলনকারীদের আস্থা থাকবে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত