রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

১৫ এপ্রিল, ২০১৮ ০২:৩৩

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পয়লা বৈশাখ উদযাপন

নানা আয়োজনে বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখকে বরণ করে নিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ রাজশাহীর হাজার হাজার মানুষ।

ঢাকের বাদ্য, মঙ্গল শোভাযাত্রা, ঐতিহ্যবাহী বাঙালি সাজ আর বৈশাখী নাচে গানে ১৪২৫ সনকে বরণে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষক-শিক্ষার্থী। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ভোর থেকেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা আসতে থাকেন ক্যাম্পাসে। বেলা বাড়ার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হরেক রঙে রঙিন তরুণ-তরুণীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস।

শনিবার সকাল ১০টায় চারুকলা অনুষদ চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢাকে বাড়ি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বর্ষবরণ উৎসবের উদ্বোধন করেন। পরে একটি বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।

এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রধান আকর্ষণ বৃহদাকৃতির ছিল পায়রা ও ষাঁড়। আয়োজকরা জানিয়েছেন, আমাদের গ্রামীণ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির সমাজ-সভ্যতায় ষাঁড়ের অবদান অনস্বীকার্য। নগরায়নের করাল থাবায় ক্রমশ হারিয়ে যাওয়া সেই ষাঁড়কে বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে আনার জন্যই ষাঁড়কে এবার শোভাযাত্রায় যোগ করা হয়েছে। এছাড়াও শান্তির প্রতীক ‘পায়রা’টি অশান্ত পৃথিবীতে চলমান যুদ্ধ, বিগ্রহ ভুলিয়ে সবার মাঝে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেবে।

এছাড়ায় বিকেলের দিকে অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় সমবেত সঙ্গীত, লোক সঙ্গীত ও বাউল সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি, হরবোলা, অভিনয় ও বাঙালি ফ্যাশন শো অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর), গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, বাংলা, ইংরেজি, রসায়ন, নাট্যকলা ও সঙ্গীতসহ বিভিন্ন বিভাগ এবং বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকেও মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। ঢাক-ঢোল, ভুঁভুজেলা, পালকি, নৌকা, মুখোশ, ফেস্টুন, ব্যানারে নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মহানন্দে ক্যাম্পাসজুড়ে শোভাযাত্রা করে। কৃষক, জেলে, সাপুড়ে, বেদেসহ বিভিন্ন সাজে সাজেন শিক্ষার্থীরা। কেউ বা আবার সাজেন বউ-জামাই ও ঘটক। শোভাযাত্রায় শিক্ষার্থীদের রঙ বেরঙের সাজ আর নানা কীর্তি যেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে দিল আবহমান গ্রামবাংলার এক টুকরো বর্ণিল ঝলক।

এছাড়া ক্যাম্পাসে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন বিভাগ ও সংগঠন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে। মার্কেটিং বিভাগের উদ্যোগে রবীন্দ্র কলাভবনের সামনে ‘শিরোনামহীন’ ও অর্থনীতি বিভাগের আয়োজনে ‘আরবোভাইরাস’ শেখ রাসেল চত্বরে কনসার্টে শিক্ষার্থীদের মুগ্ধ করে।

এদিকে বর্ষবরণ উদযাপনে ক্যাম্পাসে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ক্যাম্পাসে যান চলাচলে পুলিশের পাশাপাশি কাজ করে বিএনসিসি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, “পহেলা বৈশাখ উদযাপনে যেন বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেদিকে নজর ছিল। কড়া নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া বিকেল পাঁচটার মধ্যে সব ধরনের অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশও দেওয়া হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত