রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পতাকা মিছিলের সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর লাটি, রড, হাতুড়ি ও ছুরি নিয়ে আজও হামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে একজন মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।

সোমবার (২ জুলাই) বিকেল সোয়া ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

হামলায় আহত শিক্ষার্থীর নাম তরিকুল ইসলাম তারেক। তিনি বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ রাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।

আহত অবস্থায় সাংবাদিকরা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। এছাড়াও হামলার ঘটনায় আরো তিনজন আহত হয়েছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।

আন্দোলনকারী ও একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ‘সোমবার বিকেল সোয়া ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে পতাকা মিছিল বের করে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তারা বিনোদপুর বাজারের দিক থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের দিকে আসতে থাকে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় ফটক থেকে ছাত্রলীগ নেতারা আন্দোলনকারীদের ধাওয়া করে। আন্দোলনকারীদের পতাকা কেড়ে নিয়ে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি গোফরান গাজী, মিজানুর রহমান সিনহা, এহসান মাহফুজ, আহমেদ সজীব, সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান লাবন, মেহেদী হাসান মিশুসহ ৩০-৩৫ জন নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা করে।’

এসময় পুলিশ দর্শকের ভূমিকায় দাঁড়িয়ে ছিল বলে অভিযোগ করে প্রত্যক্ষদর্শীরা।

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ রাবি শাখার আহ্বায়ক মাসুদ মোন্নাফ বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলাম। তারা এসময় আমাদের ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে আমাদের চারজন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে তারেক নামের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’

জানতে চাইলে রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘এরা কোটা সংস্কারকারী নয়, এরা শিবির। এরা দেশের ক্যাম্পাসগুলোকে অস্থিতিশীল করার জন্য কাজ করছে। আমরা তাদেরকে প্রতিহত করতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে গিয়েছে।

মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের দিকে এগিয়ে আসলে আমরা তাদেরকে প্রতিহত করেছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়েছিল। কিন্তু কথিত কোটা আন্দোলনকারীরা বিনোদপুর হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিলে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছে বলে শুনেছি।’

এর আগেও রোববার কোটা আন্দোলনকারীদের পূর্ব ঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।