শাবি প্রতিনিধি

২৭ জুলাই, ২০১৮ ২০:০৩

শাবিতে ‘ন্যাশনাল ক্যাম্পাস জার্নালিজম ফেস্ট’ শুরু

দেশের ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইদিনব্যাপী ‘ন্যাশনাল ক্যাম্পাস জার্নালিজম ফেস্ট-২০১৮’ শুরু হয়েছে।

শুক্রবার (২৭ জুলাই) সকাল ১০টায় কবুতর উড্ডয়ন ও আনন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জনপ্রিয় লেখক ও অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। এ উৎসব চলবে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত এই উৎসবে ঢাবি, জাবি, চবি, রাবি, বাকৃবিসহ সারাদেশের ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২৫০জন ক্যাম্পাস প্রতিবেদক অংশগ্রহণ করেছেন। দুইদিনব্যাপী আয়োজনে বিভিন্ন ‘লার্নিং সেশনে’ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত খ্যাতনামা সাংবাদিকরা তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করবেন।

ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনার পাশাপাশি বস্তুনিষ্ঠ ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার নানা দিক উৎসবের বিভিন্ন ‘লার্নিং সেশনে’র আলোচনার বিষয় বলে জানান উৎসবের আহ্বায়ক ফয়জুল্লাহ ওয়াসিফ।

সকাল থেকেই বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে শাবি ক্যাম্পাসে উপস্থিত হন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত অতিথিরা। পরিবার পরিজন নিয়ে উৎসবে অংশ নিয়েছেন শাবি ক্যাম্পাসে কর্মরত সাবেক সাংবাদিকরা; যারা বর্তমানে দেশ, বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। নীল রঙের টি-শার্ট গায়ে জড়িয়ে তারা অংশ নেন আনন্দ শোভাযাত্রায়।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে আলোচনা সভায় সভায় বক্তব্য রাখেন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি বলেন, ন্যায় ও অন্যয়ের মধ্যে নিরপেক্ষতা বলে কিছু নেই। একজন সাংবাদিককে সবসময় সত্যের পক্ষে অবস্থান নিতে হবে।

“সোশাল নেটওয়ার্কের মধ্যে পাওয়া খবর সবসময় বস্তুনিষ্ঠ নয়। কোন গণমাধ্যম খবরটি প্রকাশটি করল সেটি হলো বড় কথা। ফেইসবুকসহ অন্যান্য সোশাল নেটওয়ার্কে ছড়ানো খবর অনেক সময় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। সাংবাদিকদের সেদিকে সচেতন হতে হবে।”

আলোচনা সভার পর অনুষ্ঠিত লার্নিং সেশনে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন মাছরাঙা টেলিভিশনের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট বদরুদ্দুজা বাবু, যমুনা টেলিভিশনের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট মুহসিনুল হাকিম, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের বিজনেস এডিটর ফারুক মেহেদী।

উৎসবে অংশ নিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোটার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আলী ইউনুস হৃদয়। তিনি বলেন, “শাবির সবুজে ঘেরা এ ক্যাম্পাসে এসে ভালোই লাগছে। দেশের সবকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের একসাথে পাওয়া বাড়তি আনন্দের।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি বায়েজিদ ইমন বলেন, সকল বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে এতো বড় পরিসরে আয়োজন করাটা বেশ কষ্টের। আমরা অনেক দূর-দূরান্ত থেকে এসে একসাথে হয়েছি। লার্নিং সেশনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা শুনে ভালোই লাগছে।

উৎসবে অংশ নিয়ে গণবিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুন্নি আক্তার বলেন, ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার নানা সংকট তথা সাংবাদিকতায় নারীদের প্রতিবন্ধকতা রোধে এ ধরনের উৎসব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মেয়েরা সাংবাদিকতার কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে জানতে পারলে এ পেশায় তাদের আগ্রহ বাড়বে।”

আয়োজনের দ্বিতীয় দিন শনিবারের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মনসুর বলেন, সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকরা কখনও একসাথে কোন আড্ডায় বা উৎসবে মিলিত হয়নি। সবাইকে একসাথে করার লক্ষ্যে আমরা এ আয়োজন হাতে নিয়েছি। আশা করি, এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সকল ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের মধ্যে যোগাযোগ ও সম্প্রীতি বাড়বে। ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার নানা সংকট ও সম্ভাবনার দিক উঠে আসবে।”

আপনার মন্তব্য

আলোচিত