রাবি প্রতিনিধি

০৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০১:২৫

রাবিতে সাংবাদিকদের ছাত্রলীগের মারধরের ঘটনায় প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পেশাগত কাজে কর্মরত অবস্থায় এক সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় ওই ছাত্রলীগ নেতার ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিক এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে তারা প্রক্টরের পদত্যাগও দাবি করেন।

মানববন্ধনের আয়োজন করে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটি, রাবি সাংবাদিক সমিতি ও রাবি প্রেসক্লাব।

শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তন ভাড়া দিয়ে বানিজ্যিক সিনেমা প্রদর্শনের প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ, প্রক্টর লুৎফর রহমান ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর উপস্থিতিতে সাংগঠনিক সম্পাদক সাবরুল জামিল সুষ্ময়, ইমরান খান নাহিদ, মানবসম্পাদক উন্নয়ন সম্পাদক ফেরদৌস মাহমুদ, বঙ্গবন্ধু প্রজন্মলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম রেজাসহ কয়েক জন নেতাকর্মী হামলা চালায়। এতে রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক আলী ইউনুসসহ ৭ জন আহত হন।

মানববন্ধনে রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শিহাবুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিক হিসেবে আমাদের সংবাদ সংগ্রহ করার কথা। কিন্তু আমরাই আজ সংবাদ হয়ে গেছি। আমাদের সহকর্মীকে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন করতে হচ্ছে। লজ্জার বিষয় এই যে, সাংবাদিক মারধরের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটলেও আজ পর্যন্ত একটি ঘটনারও আমরা বিচার পাইনি।

তিনি প্রক্টরে পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বলেন, “হামলার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত দোষী ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি! অন্যদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন আমাদের প্রক্টর মহোদয় ও সহকারী প্রক্টরবৃন্দ। তাদের সামনেই আন্দোলনরত শিক্ষাথীদের ওপর হামলা করা হয়! কীভাবে একজন প্রক্টর শিক্ষার্থীদের মারতে ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনকে ডেকে আনেন? আমরা এরকম প্রক্টর চাই না। আমরা ছাত্রবান্ধব প্রক্টর চাই। আমরা এই প্রক্টরকে দ্রুত পদত্যাগের আহ্বান জানাই।”

সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সিরাজুচ সালেকিন বলেন, “শাবিতে, বেরোবিতে, জাবিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা এসব ঘটনায় জড়িত কারা? এসব ঘটনায় বার বার একই নাম ফিরে আসে; ছাত্রলীগ। একটা কথা বলতে লজ্জা লাগছে, বঙ্গবন্ধু আদর্শে গড়া এই প্রতিষ্ঠানটার অবস্থা কী! যথাযথ ব্যবস্থা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদাসীনতা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে তারা (ছাত্রলীগ) বার বার এ ধরনের হামলা চালাচ্ছে।”

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে তিনি ছাত্রলীগের সকল ধরনের ইতিবাচক নিউজ বর্জনের ঘোষণা দেন।

প্রেসক্লাবের সভাপতি রবিউল ইসলাম তুষার হামলার ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রতি আহ্বান জানান।

পরে মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে যোগ দেয় বিশ^বিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্রজোট।

প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মানিক রায়হান বাপ্পীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জাহিদ, রিপোর্টার্স ইউনিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মর্তুজা নুর, প্রচার সম্পাদক আহমেদ ফরিদ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ, ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী শাকিলা খাতুন প্রমুখ।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত তিনটি সাংবাদিক সংগঠনের নেতাকর্মী, প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরাসহ বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত