নিজস্ব প্রতিবেদক

০৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৮:০৯

স্বল্প সময়েই স্বতন্ত্র অবস্থানে নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি

সিলেটে স্বল্প সময়ের মধ্যেই উচ্চ শিক্ষার প্রসারে সুনাম কুড়িয়েছে নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ। নূন্যতম ব্যয়ে সর্বোচ্চ মানের শিক্ষা প্রদানে কাজ করে যাচ্ছে বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়। দ্রুততম সময়েই শিক্ষার্থী আর অভিভাবকদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এ প্রতিষ্ঠান। পড়ালেখার পাশাপাশি গবেষণা, সহ-শিক্ষা কার্যক্রম আর প্রতিভা অন্বেষণে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক আয়োজনের মাধ্যমেও নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি গড়ে নিয়েছে স্বতন্ত্র অবস্থান।

২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সিলেটের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ। এই অর্ধযুগেই দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম সফল একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। যাত্রা শুরুর পরই নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণের উদ্যোগ নেয় নর্থ ইস্ট। গোলাপগঞ্জের হেতিমগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়টির নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজ চলছে। বর্তমানের নগরীর তেলিহাওরে চলছে শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম।

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বেসরকারি এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিশেষ সুবিধায় উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ পায় দরিদ্র, মেধাবী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা। এছাড়াও এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে নিজ ক্যাম্পাসেই রয়েছে চাকুরীর সুযোগ।

এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচটি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের সুযোগ রয়েছে।   ব্যবসা প্রশাসন বিভাগে বিবিএ, আইন ও বিচার বিভাগে এলএলবি, কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে বিএসসি ইন(ইঞ্জিনিয়ারিং) কম্পিউটার সায়েন্স, বিএ ইন ইংলিশ,  অ্যাপ্লায়েড সোসালজি এন্ড সোশ্যাল ওয়ার্ক এ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পড়তে পারবেন শিক্ষার্থীরা।  

এছাড়াও এমবিএ, এক্সিকিউটিভ এমবিএ, এমএ ইন ইংলিশ, মাস্টার্স অব ল (এলএলএম), মাস্টার্স ইন ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (এমডিএস), মাস্টার্স ইন পাবলিক হেলথ (এমপিএইচ) ও  ম্যাথম্যাটিকস এন্ড ইনফরমেটিক্সে মাস্টার্স করার সুযোগ রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগের পাঠদানের জন্য রয়েছেন স্থায়ী ও খণ্ডকালীন বিষয়ভিত্তিক দক্ষ শিক্ষক।     

বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত পাঠদানের পাশাপাশি গবেষণা কর্মেও বিশেষ নজর দেয়া হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে সমৃদ্ধ পাঠাগার তো রয়েছেই, আছে ই-লাইব্রেরীও।   

লেখাপড়ার পাশাপাশি এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা এবং সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের জন্যও সুনাম কুড়িয়েছে। সহ-শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য ১২ টি সংগঠন রয়েছে ইউনিভার্সিটিতে। এগুলো হলো- এনইইউবি ডিবেটিং সোসাইটি, এনইইউবি কালচারাল ক্লাব, এনইইউবি সোশ্যাল সার্ভিসেস ক্লাব, এনইইউবি এনইইউবি স্পোর্টস ক্লাব, এনইইউবি ট্যুরিস্ট ক্লাব, থিয়েটার নর্থ ইস্ট, এনইইউবি ফটোগ্রাফি ক্লাব ও ব্যান্ড: কসমিক রে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।

এছাড়াও অনুষদ ভিত্তিক নিজস্ব বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ল’ স্টুডেন্টস ফোরাম (আইন ও বিচার অনুষদ), বিজনেস ক্লাব (ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ), ইংলিশ কাউন্সিল (ইংরেজি অনুষদ), সিএসই সোসাইটি (সিএসই অনুষদ)। নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বাইরের দেশের ইউনিভার্সিটিতে ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুবিধা।

নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতফুল হাই শিবলী বলেন, অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এনইউবিতে শিক্ষাদানের পরিবেশ উন্নত। এখানে শিক্ষক নিয়োগে সর্বোচ্চ মানদণ্ড বজায় রাখা হয়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় যারা কৃতকার্য হন তাদেরকেই রাখা হয়। এক্ষেত্রে ট্রাষ্টি বোর্ড সবরকম সহযোগিতা করেন। অভিজ্ঞ ও মেধাসম্পন্ন শিক্ষকদের তত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে শিক্ষাদানের ফলে এনইইউবি যেকোনো মান দণ্ডে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে। দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী দ্বারা পরিচালিত বেসরকারি নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বিসিএসে জুডিশিয়াল সার্ভিসে বা সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার উচ্চ পদে কর্মরত রয়েছেন। তাই প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি বা এর শিক্ষার্থীদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণের কোন কারণ নেই বলেও জানান তিনি।

উপাচার্য বলেন, উচ্চ শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে অবশ্যই আন্তরিকতার ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি গবেষণায়ও দেশ বিদেশে সুনাম কুড়িয়েছে। গবেষণায় এখানকার শিক্ষকরাও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও পাচ্ছেন।

ড. আতফুল হাই শিবলী বলেন, বিশ্বমানের উচ্চ শিক্ষা দানের নিয়ামক মুক্ত চিন্তার বিকাশ। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, রোবটিক্স ও প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা সহ সব ধরণের খেলাধুলার সুযোগ পায়। এক্সট্রা কারিকুলাম এক্টিভিটিজের সুযোগ সুবিধা ও পাঠ দানে আন্তরিকতার কারণে এনইইউবিতে শিক্ষাগ্রহণে আগ্রহী থাকে শিক্ষার্থীরা।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী বলেন, শিক্ষাখাতে সিলেট অঞ্চল পিছিয়ে পড়ার তালিকায়। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধাও কম ছিল। উচ্চ শিক্ষার ব্যাপক প্রসার আর বিশ্বমানের শিক্ষাদানে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে যুক্ত করতেই ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এনইইউবি)।  বিধি মতো সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রকল্পের আওতায় শতকরা ৩ ভাগ  গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীকে পড়া সুযোগ ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোঠায় ৩ ভাগ শিক্ষার্থীকে পড়ার সুযোগ দেয়া হয়।

সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক পরিবেশে এনইইউবিতে শিক্ষার্থীরা উন্নত শিক্ষা ও গবেষণার সব ধরণের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে জঙ্গিবাদে না জড়াতে পারে সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়টিতে একটি মনিটরিং সেল রয়েছে জানিয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন , পড়াশোনার পাশাপাশি আমরা শিক্ষার্থীদের এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিজে সম্পৃক্ত থাকতে উৎসাহিত করছি।   যাতে তারা জঙ্গিবাদ বা সমাজ বিরোধী কোন কাজে না জড়াতে পারে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত