এমসি কলেজ প্রতিনিধি

১৮ ফেব্রুয়ারি , ২০১৯ ২৩:৪০

এম.সি কলেজে শহীদ ডা.শামসুজ্জোহা স্মরণ

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এম সি কলেজ শাখার উদ্যোগে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ডা.শামসুজ্জোহা দিবস পালন করা হয়েছে।

সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় শহীদ শামসুজ্জোহার অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। শ্রদ্ধার্পন শেষে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন এবং এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে আলোচনা করেন সংগঠন সিলেট নগর শাখার ৯ম কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সঞ্জয় কান্ত দাস, কলেজ শাখার আহ্বায়ক সাদিয়া নোশিন তাসনিম, সাধারণ সম্পাদক আল আমিন, সদস্য পিংকী চন্দ, আকরাম হোসেন, সুমিত কান্তি দাস পিনাক প্রমুখ।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, শহীদ ডা. শামসুজ্জোহা বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম বুদ্ধিজীবী শহীদ। ছাত্রনেতা আসাদ, মতিউরের রক্তে তখন জেগে উঠেছিল সম্পূর্ণ দেশ, তাঁর সম্মুখভাগে ছিলেন তৎকালীন ছাত্ররা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও উত্তাল হয়ে উঠে ছাত্র আন্দোলনে। এর মধ্যেই জেলের অভ্যন্তরে হত্যা করা হয় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী সার্জেন্ট জহরুলকে। সাথে সাথে আরো উত্তাল হয়ে উঠে দেশ। মাওলানা ভাসানী পল্টনের সমাবেশ থেকে হুঙ্কার দিলেন প্রয়োজনে ফরাসি বিপ্লবের মত জেলখানা ভেঙ্গে রাজবন্দীদের মুক্ত করা হবে। শুরু করলেন বিখ্যাত ‘জ্বালাও-পোড়াও-ঘোরাও’ আন্দোলন। এই আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আলোড়িত করল।

তারা আরো বলেন, প্রায় প্রতিদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের উপর দমন-পীড়ন-গ্রেফতার চলত। ১৫ তারিখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অসংখ্য ছাত্রদের উপর হামলা এবং আহত ছাত্রদের গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ। শামসুজ্জোহা সেই ছাত্রদের সাথে ছিলেন, ফিরে এসে বলেছিলেন ছাত্রদের পবিত্র রক্তের স্পর্শে আমি উজ্জীবিত, ছাত্রদের গায়ে গুলি লাগার আগে আমার গায়ে গুলি লাগবে। ১৮ ফেব্রুয়ারি যখন ছাত্র পুলিশ মুখোমুখি তখন বুক চিতিয়ে সামনে দাঁড়ালেন তিনি। আইয়ুবের পেটুয়া বাহিনীকে বললের ‘ডোন্ট ফায়ার’। কিন্তু তার শামসুজ্জোহার কথা না মেনে গুলি করতে উদ্ধত হয়। তিনি বলেন ‘আমি বলছি কোন গুলি বর্ষণ হবে না। কোন ছাত্রের গায়ে গুলি লাগার আগে যেন আমার গায়ে গুলি লাগে’।

তারা বলেন, খান সেনারা শামসুজ্জোহার উপরই গুলি চালায়, শুধু তাই নয় বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। শহীদ হন তিনি। এই মহান মানুষটি যুক্ত ছিলেন মহান ভাষা আন্দোলনে, বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর জন্যে ডাক পেলেও শুধু দেশমাতৃকাকে ভালবেসে থেকে যান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। আজ আমরা ভূলতে বসেছি তাঁকে। শাসক গোষ্টি অত্যন্ত কৌশলে এ কাজ করছে। আজ এই অবরুদ্ধ সময়ে ডা.শামসুজ্জোহা আমাদের প্রেরণা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত