সিলেটটুডে ডেস্ক

২৩ মার্চ, ২০১৯ ১৩:৫২

ডাকসুর আজীবন সদস্য শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে আজীবন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসেদের (ডাকসু) সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। শনিবার (২৩ মার্চ) ডাকসুর প্রথম কার্যকরী সভায় প্রধানমন্ত্রীকে আজীবন সদস্য করার প্রস্তাব তুলেন জিএস গোলাম রাব্বানী। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব গৃহীত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এজিএস সাদ্দাম হোসেন।

শেখ হাসিনা ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। এমনকি রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন।

এর আগে শনিবার (২৩ মার্চ) ১১টায় ডাকসুর সভায় যোগ দেন ভিপি নুরুল হক নুর, জিএস গোলাম রাব্বানীসহ নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যরা। শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন ডাকসুর নবনির্বাচিত জিএস গোলাম রাব্বানী। এরপর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এরপর রাব্বানী কেন্দ্রীয় সংসদের সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এসময় জিএস সভাপতির কাছে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণের অনুমতি নেন। এক বছরের জন্য অনুমতি দেন ভিসি ড. আখতারুজ্জামান।

দীর্ঘ ২৮ বছর বন্ধ থাকার পর ১১ মার্চ ডাকসু ও হল সংসদগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের দিন হলগুলোর ভোটকেন্দ্রে নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেন ছাত্রলীগ ছাড়া বাকি প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। নির্বাচনে ডাকসুর ২৫টি পদের মধ্যে ২৩টিতে জয়ী হয় ছাত্রলীগের প্যানেল। এছাড়া ১৮টি হল সংসদের ১২টিতে জয়ী হয় ছাত্রলীগের প্যানেল। বাকি হলগুলোর ভিপি-জিএসসহ বেশকিছু পদে জয়ী হন স্বতন্ত্ররা। আর ডাকসুর সহসভাপতিসহ (ভিপি) দুটি পদে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা জয়ী হন।

নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে গত ২১ মার্চ সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ডাকসু সভাপতি মো. আখতারুজ্জামান। সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এরই মধ্যে নবনির্বাচিত কমিটির বৈঠকে যোগ দেবেন কিনা তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুর। অবশেষে গতকাল বিকেলে সহসভাপতি (ভিপি) হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন বলে ঘোষণা দেন তিনি।

মধুর ক্যান্টিনে এ ঘোষণা দিয়ে নুরুল হক নুর বলেন, শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে আগামীকাল (শনিবার) অনুষ্ঠেয় ডাকসুর কার্যকরী সভায় আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করব। পুনর্নির্বাচনের দাবিসহ শিক্ষার্থীদের অন্য যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলো সমাধান করতে আমাদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম চলবে। পুনর্নির্বাচনের চাওয়া আমাদের বরাবরের মতোই রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম এবং ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে আমরা দায়িত্ব নিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব অঙ্গসংগঠন বা কথা বলার জায়গা রয়েছে, সেসব জায়গায় অনিয়ম নিয়ে কথা বলতেই আমরা দায়িত্ব নিচ্ছি।

শিক্ষার্থীদের সম্মতিক্রমে দায়িত্ব নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জানিয়ে নবনির্বাচিত ডাকসু ভিপি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের যে সিদ্ধান্ত সেটা আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ করেই নিয়েছি। তারা মনে করে, আমরাও মনে করি যে পুনর্নির্বাচনের জন্য দায়িত্ব নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া উচিত এবং আমি সেটা করব।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি ছাত্রী হল আর বিজয় একাত্তর হল ছাড়া অন্য হলগুলো প্রশাসন যেন ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের কাছে ইজারা দিয়েছে। কোনো শিক্ষার্থীকে জোর করে মিছিল-মিটিং করানো যাবে না এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় কাউকে হলে সিট দেয়া যাবে না।

এদিকে নির্বাচন বর্জন করা ছাত্রদল কালো ব্যাজ ধারণ করে ক্যাম্পাসে মৌন মিছিল করেছে। ছাত্রসংসদের সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ পদে শিক্ষার্থীদের নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবিতে মানববন্ধন করেছে ছাত্র ফেডারেশনের কর্মীরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত