শাবি প্রতিনিধি

০৬ এপ্রিল, ২০১৯ ১৭:২৫

শিক্ষা-গবেষণায় একসাথে কাজ করার প্রত্যয় বাংলাদেশ-ভারতের উপাচার্যদের

শিক্ষা, গবেষণা ও উদ্ভাবনে ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য ও সহযোগিতামূলক সম্পর্কের মাধ্যমে দুই দেশের যাত্রাকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ভারত-বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ২৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা।

শনিবার সিলেটের সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অব ভাইস চ্যান্সেলর’ শিরোনামের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে এমন প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তারা।
 
 বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে সকাল সাড়ে নয়টায় অনুষ্ঠানের সদস্য সচিব অধ্যাপক জহিরুল ইসলামের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়।

সম্মেলনে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও একজন আচার্য এবং বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সিলেটের ৮ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অংশগ্রহণ করেন।

উদ্বোধনী পর্বে শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদেও সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান,  গোয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মৃদুল হাজারিকা, মেঘালয়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মাহবুবুল হক এবং সম্মেলনের আহ্বায়ক আবুল মুকিত মোহাম্মদ মোকাদ্দেছ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, “আমরা এ পুরো অঞ্চল জুড়ে একে অপরের সাথে অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ। আমাদের ভাষা বলি, সংস্কৃতি বলি, ইতিহাস বলি, প্রকৃতি বলি সবকিছু এই দু’দেশের বিশেষ করে এই অঞ্চলের মধ্যে গভীর সম্পর্কের ভিত্তি রচনা করে দিয়েছে।”

“আমাদের যে নদী, আমাদের যে বাতাস, যে প্রকৃতি আমাদের যুক্ত করে দিয়েছে। দেশের রাজনৈতিক সীমান্ত বিভক্তি তৈরি কলে দিলেও বাতাস, নদী, প্রকৃতি আমাদের এক করে দিয়েছে। এই বন্ধন শুধু অতীত বা বর্তমানে নয়; ভবিষ্যতেও একই সূত্রে গাঁথা থাকবে।”

তিনি বলেন, “সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলো; যেখানে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা হয়, গবেষণা হয়, যেখানে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি হয়, সেই জায়গাগুলো যারা পরিচালনা করেন, তারা আজ একসাথে বসেছেন। এক কথায় পুরো অঞ্চলের চিন্তার জগৎ একসাথে হয়েছে। তাতে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী একসাথে এগিয়ে যাব। একসাথে নতুন নতুন পথ তৈরি করব, নতুন নতুন জ্ঞানের ভান্ডার বাড়িয়ে তুলব। আজকের এই উদ্যোগকে বলা যেতে পারে ইন্টিলেকচুয়েল পার্ট হাউজ।”

“এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভবিষ্যত যে প্রজন্ম তৈরি করবে, তারা শুধু ডিগ্রিধারি নয়; আলোকিত মানুষ হবে। তারা বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। আজকের প্রোগ্রামের মাধ্যমে যে সহযোগিতার সম্পর্ক তৈরি হবে, কমন আন্ডার্সস্টেন্ডিং হবে, তাতে দু’দেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাব। জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারব। মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে পারব।” বলেন মন্ত্রী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে সকল উপাচার্যদের নিয়ে দ্বিতীয় পর্বে মূল আলোচনা অনুষ্ঠান ‘দি কনভেনশন’ শুরু। সেই অনুষ্ঠানে উপাচার্যরা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণা, উদ্ভাবন ও শিক্ষা প্রশাসনিক কার্যক্রমের তথ্য তুলে ধরেন।

মেঘালয়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মাহবুবুল হক বলেন, “সাস্ট খুবই লাকি এ ধরনের একটি বড় প্রোগ্রাম আয়োজন করতে পেরেছে। এর মাধ্যমে দুই অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কো-অপারেশন, কলাবরেশন তৈরি হবে। জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণায় সহযোগিতার সম্পর্ক তৈরি। ”

“আমরা সাস্ট থেকে পাঁচ শিক্ষার্থীকে উচ্চতর ডিগ্রির জন্য আমাদের খরচে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিব। আশা করি সাস্টও এমন উদ্যোগ নিবে। আগামীতে পুরো এশিয়া অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে এ ধরনের প্রোগ্রাম আয়োজন করা উচিত হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের এমন উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষা-গবেষণায় দুই দেশের মধ্যে আরও সহযোগিতার সম্পর্ক তৈরি হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত