শাবি প্রতিনিধি

২৭ জুলাই, ২০১৯ ২৩:০৩

শাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ স্ত্রীর

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন তাঁর স্ত্রী।

ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে শারিরীকি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন তার স্ত্রী খন্দকার লিমানা নাজনিন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি আইন ও সালিশ কেন্দ্রে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মিজানুর রহমান। বাবা-মা ছেড়ে আলাদা থাকতে স্ত্রীর প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় সংসারে ঝামেলার শুরু হয় বলে দাবি তাঁর।

আর অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে শাবিপ্রবির রেজিস্টার ইশফাকুল হোসেন বলেন, শিক্ষক মিজানের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী একটি অভিযোগ দিয়েছেন তাদের পারিবারিক সমস্যার বিষয়ে।

জানা যায়, পারিবারিকভাবে নাজনিন-মিজানের বিয়ে হয় ২০১৭ সালের ৫মে। নাজনিন শাবিপ্রবি'র ইংরেজি বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী হওয়ায় প্রথম দিকে তাদের সম্পর্ক ছিল শিক্ষক-শিক্ষার্থীর। বিয়ের পর বর্তমানে এক মেয়ে সন্তান রয়েছে তাদের।

দাম্পত্য জীবনের টানাপোড়েনের মধ্যে নাজনিন ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন’ এবং ‘আইন ও সালিশ কেন্দ্রে’ আলাদা আলাদাভাবে দুটি অভিযোগ পত্র দায়ের করেন স্বামী মিজানের বিরুদ্ধে।

চলতি বছরের ৭ এপ্রিল ‘আইন ও সালিশ কেন্দ্রে’ স্বামী মিজানের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনেন নাজনিন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল “শাশুড়ির নির্যাতন, খেতে না দেওয়া, শাশুড়ির নির্যাতনে স্বামীর নিস্ক্রিয় ভূমিকা।”

এসব নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ১২ মার্চ বাবার বাড়ি ঢাকায় চলে যান বলে অভিযোগ পত্রে লেখেন নাজনিন।

আর ১৪ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রর মো. ইশফাকুল হোসেনের কাছে দাখিল করা অভিযোগ পত্রে নাজনিন স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, পড়াশোনা বন্ধ করে দেওয়া, চাকরী করতে না দেওয়া, সন্তানের ভরণপোষণ না দেওয়া এবং পরকিয়ায় জড়িত হওয়ার অভিযোগ আনেন।

“আমার হাজার অনুরোধ সে গ্রাহ্য করেনি, দেখতে আসেনি। আমি অনেক চেষ্টা করেও ফেরত যেতে পারিনি তার কাছে। সন্তানের কথা চিন্তা করেই ফেরত যেতে চেয়েছি।” অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন নাজনিন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, “আমি সবসময় আমর স্ত্রী-সন্তানকে আমার সাথে রাখতে চেয়েছি। আমার পরিবারের সাথে রাখতে চেয়েছি। বরং আমার স্ত্রী আমার পরিবারের সাথে থাকতে চান না বলে জোর করে চলে গেছেন। আমার স্ত্রী যখন অভিযোগ করলেন সন্তানের ভরণপোষ দেই না, তারপর থেকে ভরণপোষণ পাঠানোর সবগুলো ডকুমেন্টস সংরক্ষণ করে রেখেছি।”

৭ এপ্রিলের পর থেকে সন্তানের ভরণপোষণ বাবদ প্রায় ৬১ হাজার টাকাসহ অন্যান্য জামা-কাপড় সন্তানের জন্য পাঠিয়েছেন বলে সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান মিজানুর রহমান।

মিজানুর রহমান বলেন, “আমি কখনই পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝামেলা হোক সেটা চাইনি। আমার স্ত্রী বিভিন্নভাবে প্ররোচিত হয়ে ভুল পথে পা দিয়েছেন। আগামী সপ্তাহে আমাদের দুই পরিবারে মধ্যস্থতায় একটি সমঝোতা বৈঠক বসবে। সেখান থেকে একটি সমাধান আসতে পারে।”

এ ব্যাপারে ঢাকায় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিক্ষককতায় যুক্ত খন্দকার লিমানা নাজনিন বলেন, আমার একটি সন্তান রয়েছে। সন্তানের কথা ভেবে আমি মিজানের সংসারে ফিরে যেতে চাই। এজন্য বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি। তারা হয়তো কোন একটা সমাধান দিবেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত