সিলেটটুডে ডেস্ক

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৬:০১

ঢাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের ডিন অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে ছাত্রলীগের হামলার শিকারের অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ডাকসু নির্বাচনের সময় ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তির প্রতিবাদে ডিন অফিস ঘেরাও করতে যান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

তাদের সঙ্গে কয়েকটি বাম ছাত্র সংগঠন এবং বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরাও ছিলেন।

তারা ডিন অফিসের সামনে গেলে সেখানে আরও কিছু শিক্ষার্থীকে আগে থেকে ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সেখানে ওই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

৩৪ জন শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তির প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী তারা ডিন অফিস ঘেরাও করতে গেলে তাদের ওপর ছাত্রলীগের কিছু কর্মী হামলা করেছেন।

কিন্তু সেখানে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের দাবি—তারাও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী। ছাত্রলীগ পরিচয়ে তারা এখানে আসেননি। দাবির বিষয়ে কথা বলতে এখানে এসেছে তারা।

তাদের দাবি ছিল—বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা অনার্স করবে, তারা যেন কোনও ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকালীন কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে পারেন। এ দাবির বিষয়ে তারা ডিনকে স্মারকলিপি দিতে ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের সামনে এসেছেন।

অন্যদিকে, ৩৪ শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তির প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন—ডাকসু নির্বাচনের আগ মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগের ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা ছাড়াই সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি করিয়েছে। এর প্রতিবাদ জানাতে তারা ডিনের কার্যালয় ঘেরাও করতে আসেন। সেখানে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী তাদের কর্মসূচির ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে এবং হামলা চালায়।

তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাতাহাতি ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন দাবি করেন, আমরা চাই যারা বিশ্ববিদ্যালয় অনার্সে ভর্তি হন, তারা যেন কোনও পরীক্ষা ছাড়াই সান্ধ্যকালীন কোর্সগুলোতে ভর্তি হতে পারেন। এজন্য আমরাও কর্মসূচি পালন করতে এসেছি। আমাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কোনও ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছি।

একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে আসেন সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক আব্দুর রহিম। তিনি উভয়পক্ষের আন্দোলনকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা সহকারী প্রক্টরকে ঘিরে ধরেন এবং হামলার বিষয়ে অবহিত করেন। এ সময় ঘটনাস্থলে নারী প্রক্টর সীমা ইসলামকেও দেখা যায়।

জানতে চাইলে সীমা ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামান্য ঘটনা ঘটেছে। আমরা পরিস্থিতি শান্ত করেছি।

তবে কোনও ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি। এর কিছু পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের চলে যেতে দেখা যায়।

ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, মারামারিতে ছাত্রলীগের কেউ ছিল কি না সে বিষয়ে আমি অবহিত না।

ভিডিওতে ছাত্রলীগের কয়েকজনকে চিহ্নিত করা গেছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ইমনকে ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করার জন্য পাঠিয়েছি। এখানে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত না।

আন্দোলনকারী ও ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈম বলেন, আমাদের ওপরে হামলা করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। প্রশাসন আমাদের আন্দোলন দমিয়ে রাখতে ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়েছিল। আপনারা জানেন কিছু দিন আগে রোকেয়া হলে নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে। এজন্য রোকেয়া হলের প্রভোস্ট এবং ভর্তি জালিয়াত করে ৩৪ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানোর দায়ে ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের ডিনকে পদত্যাগ দাবি করছি। একই সঙ্গে ওই ৩৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের দাবি জানাই।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত