সিলেটটুডে ডেস্ক

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৪:১২

উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে বশেমুরবিপ্রবিতে আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। বুধরাত রাত থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে শত শত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে দাবি আদায়ে স্লোগান দিচ্ছেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তারা এ আন্দোলন শুরু করেছেন। শিগগিরই দাবিগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন বন্ধ করবেন না।

উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন জানান, শিক্ষার্থীদের ১৪টি দাবি ইতোমধ্যে মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এরপরও তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার জন্য এবং সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার জন্য এই আন্দোলন করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ও বাইরে একটি চক্র এক হয়ে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে সহযোগিতা করছে।

সম্প্রতি ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ কী’ এই বাক্যটি ফেসবুকে পোস্ট করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তকে অবৈধ, অমানবিক, স্বাধীন মতপ্রকাশের প্রতিবন্ধক ও সাংবাদিকতার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানায় বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাছির উদ্দীনের বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার জন্য তার পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্ন পক্ষ।

এর আগেও শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করার দায়ে পাঁচ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ পরিস্থিতিতে বুধবার রাতে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের বিক্ষোভের মুখে গভীর রাতে একটি অফিস আদেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নুরুদ্দীন আহমেদ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে ১৪টি বিষয়ের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।

বিষয়গুলো হলো- ছয় মাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও শহীদ মিনারের নির্মাণকাজ শুরু করা, আবাসিক হলের প্রতি সিটের ভাড়া ১৫০ টাকা এবং গণরুমে ৫০ টাকা নির্ধারণ, ভর্তি ফি সর্বমোট ১৪ হাজার টাকা এবং সেমিস্টার ফি ২০০০ টাকা করা, বিভাগ উন্নয়ন ফি রদ করা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাক স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান, ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ছাড়া বহিষ্কার না করা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে এনে অপমান না করা, সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, কোনও শিক্ষক ব্যক্তিগত কারণে শিক্ষার্থীর ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করলে তার শাস্তি নিশ্চিতকরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নামে যে টাকা নেওয়া হয় তার হিসাব প্রদান, ভর্তি হওয়ার ১০ বছরের মধ্যে কোনও শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার নোটিশ না দেওয়া, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটরিয়া- অডিটোরিয়াম ও স্টুডেন্ট কমনরুম নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব চিকিৎসা ভবন নির্মাণ, ফেসবুক স্ট্যাটাস ও কমেন্টকে কেন্দ্র করে কোনও শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার না করা, প্রতি সেমিস্টারে বাস ভাড়া ৩০০ টাকা করা, আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কোনও শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার না করা।
বশেমুরবিপ্রবি কর্তৃপক্ষের অফিস আদেশ

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা বাক স্বাধীনতাসহ ১৪ দফা নিয়ে আন্দোলন করেছিলাম। ভোররাতে সব দাবি মেনে নিয়েছে প্রশাসন। এখন ভিসির পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলো এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত