মাঈনুল ইসলাম নাসিম

২২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ১৩:০১

নিজের উইকেট নিজেই ভাঙ্গলেন রকিবুল হাসান

৭২ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও এখনও প্রকাশ্যে ক্ষমা চাননি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান। চামড়া বাঁচাতে হয়তো ক্ষমা চাইবেন যে কোন সময়, জন্মের দোষ হিসেবে ঘাড়ের দুই নম্বর রগটি বাঁকা বলে হয়তো ক্ষমা নাও চাইতে পারেন। ছোটখাটো গড়নের এই বয়োবৃদ্ধ ক্রিকেটারের বডি-কনস্ট্রাকশনের সাথে মানানসই ঘাড়টি সাইজে ছোট হবে এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু ভেতরের রগটি রকিবুলের ঠিক কতো ডিগ্রী এঙ্গেলে বেঁকে ছিল বা আছে, একাত্তর টিভির বদৌলতে তা জানার এবং নিজ কানে শোনার সুযোগ পেয়েছে সারা বিশ্বের ক্রিকেট অনুরাগী বাংলাদেশীরা।
 
বিপিএল ফাইনালে ম্যাচ রেফারী রকিবুল হাসান কর্তৃক সম্পাদিত ন্যক্কারজনক ‘টস কেলেঙ্কারি’ একাত্তর টিভি সাফল্যের সাথে ফাঁস করে দেবার পরই মূল স্ক্যান্ডালের সূত্রপাত। দেশ-বিদেশে অনলাইনে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে রকিবুল নিজেকে খোদার সাথে তুলনা করে বলেছেন, “ম্যাচ রেফারি যে কিনা খোদা”। “ম্যাচ রেফারি চাইলে প্রধানমন্ত্রীকে বাইর কইরা দিতে পারে স্টেডিয়াম থেইকা” – ধৃষ্টতার ষোলকলা শুরুতেই এভাবে পূরণ করেন রকিবুল। একাত্তর টিভির স্পোর্টস রিপোর্টারের ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে কটাক্ষ করতেও কার্পণ্য করেননি বাংলাদেশের ক্রিকেটের এই নয়া-কলঙ্ক। বলেন, “এরা হিন্দু, সুবিধা নেয় বিভিন্ন জায়গা থেকে, এজেন্সি (দালালী) করে ইন্ডিয়ান হাইকমিশনার”।
 
কলঙ্কিত সাবেক অধিনায়ক রকিবুল অনেকটা বুক ফুলিয়েই  বললেন, “টিভি রিপোর্টারের ঢাকায় থাকাই মুশকিল হইয়া যাইবো। আমার বাসায় সব যুবলীগ-ছাত্রলীগের পোলাপাইনের উঠাবসা, তারা একটু পরেই সব আইবো”। এখানেই শেষ নয় বাঁকা রগের তেড়া কথাবার্তার। স্বভাবসুলভ স্টাইলে হুমকি দিয়ে আরো বলেন, “এইসব পাপন-পুপন কামাল সাহেবদেরও চামড়া তুইলা ফালাই আমি। আমার বাড়ি গোপালগঞ্জ, ঘাড়ের রগ একটা বেঁকা। আমার অর্থের অভাব নাই, ডাইল-ভাত খাওয়ার সব আছে। আমার পরিবার অনেক স্ট্রং”। অনাকাঙ্খিক অনভিপ্রেত অপ্রত্যাশিত ও অনৈতিক এসব কথার প্রেক্ষিতে ম্যাচ রেফারী রকিবুল হাসানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে বিসিবি।
 
তবে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়াবার অপরাধে কেন এখনো ঢাকার নিম্ন আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে এখন স্যোশাল মিডিয়াতে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন রকিবুল হাসান। বিসিবি নয়, আদালতকেই নির্ধারণ করতে হবে তার প্রাপ্য শাস্তি। রকিবুলের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক এমন একজন ফেসবুকে লিখেছেন, “নিজের উইকেট সে নিজেই ভেঙ্গেছে। বাড়ি গোপালগঞ্জ কি বান্দরবান সেটা মূখ্য নয়, নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের মাঝে যাতে বেয়াদবির পরিবর্তে বিবেকবোধ জাগ্রত হয়, সর্বোপরি বাংলাদেশের ক্রিকেটের স্বার্থে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আঘাত দিয়ে সে যা বলেছে, জেলের ভাত খাওয়ার জন্য এখনই তার উপযুক্ত সময়”।

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)

আপনার মন্তব্য

আলোচিত