হাসান মোরশেদ

১৬ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৮:৫৩

স্যরি টু সে, ইউএনও-ডিসিরা পরিবেশের গুরুত্ব বুঝেনই না

২০১৬ সালকে পর্যটন বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। বিদেশী পর্যটক আকৃষ্ট করতে নেওয়া হয়েছে এ উদ্যোগ। দেশের অন্যতম পর্যটন সম্ভাবনয় অঞ্চল সিলেট। পর্যটক আকর্ষণের জন্য কতটুকু প্রস্তুত দেশের উত্তরপূর্ব সীমান্তঘেষা এই অঞ্চল? এ ক্ষেত্রে সিলেট অঞ্চলের বাস্তবতা নিয়ে লিখেছেন পর্যটনকর্মী হাসান মোরশেদ

১.
সারা দুনিয়াতেই পর্যটন উন্নয়ন একটা সমন্বিত উদ্যোগ। সরকারের নানা সংস্থা এবং বেসরকারি খাতের নানাদিক একসাথে বসে আলাপ আলোচনা করে এইসব পরিকল্পনা করে। উপর থেকে চাপিয়ে দিয়ে পর্যটন উন্নয়ন হয় না।

২.
বৃহত্তর সিলেটের বেসরকারি খাতে নানা ধরনের উদ্যোগ গৃহীত হচ্ছে। সারাদেশের মধ্যে সিলেট অঞ্চলেই সবচেয়ে বেশী আধুনিক বিলাসবহুল রিসোর্ট গড়ে উঠেছে। এটা খুব জরুরী ছিলো। পর্যটন সংক্রান্ত তথ্য, ইন্টিগ্রেটেড প্যাকেজ বিক্রি, সরাসরি গ্রাহক সেবা- এসব হচ্ছে "VisitSylhet" এর মাধ্যমে। সুরমা রিভার ক্রুজ একটা চমৎকার উদ্যোগ। পর্যটকরা সন্ধ্যার পর একটা ভালো আয়োজন পাচ্ছেন।

বেসরকারি খাতের আরো কাজ করার সুযোগ রয়েছে। পর্যটনকে গণমুখী করতে হলে বিলাসবহুল রিসোর্টের পাশাপাশি "হোম স্টে" মডেল কাজে লাগাতে হবে।

৩.
পর্যটন উন্নয়নে সরকারের কী কী করনীয় সেটা স্পষ্ট হওয়া দরকার। বৃহত্তর সিলেটের পর্যটন হচ্ছে প্রকৃতি কেন্দ্রিক। প্রকৃতি বাঁচলে পর্যটন হবে। পরিবেশ ও প্রকৃতি বাঁচানোর দায়িত্ব সরকারের। এখন পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা শূন্য। স্যরি টু সে, ইউএনও এবং ডিসি পর্যায়ে পরিবেশের গুরুত্ব বুঝেনই না।

রাস্তাঘাট ঠিক রাখার ও ঠিক করার দায়িত্ব সরকারের। সিলেটের পর্যটন গন্তব্যগুলোর রাস্তাঘাটের অবস্থা ভয়াবহ। নিরাপত্তার জন্য পর্যটন পুলিশের উদ্যোগ প্রশংসনীয় কিন্তু যে হারে পর্যটক বাড়ছে, ৩২ জনের একটা টিম দিয়ে গোটা বৃহত্তর সিলেটে কাজ করা প্রায় অসম্ভব। খুব ছোট ছোট জিনিস পর্যটনে ভূমিকা রাখে।

সিলেট শহরের ফুটপাত দখল হয়ে আছে, পর্যটকদের পায়ে হেঁটে শহর দেখার সুযোগ নেই। ফুটপাত দখল মুক্ত করার দায়িত্ব সরকারের, বেসরকারি খাতের না।

৪.

বিদেশী অতিথি এনে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য সরকার বহু টাকা ব্যয় করে "বুড্ডিস্ট হেরিটেজ" প্রমোট করছে। ভালো উদ্যোগ। মাননীয় পর্যটন মন্ত্রীকে ও বলেছিলাম- লন্ডনে চোখ দেন। ২য়, ৩য় প্রজন্মের বৃটিশ বাঙ্গালীদের কাছে যান, এরা দেশে আসতে আগ্রহী। তাদেরকে জানান এখন সিলেটে কীরকম আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্ট আছে, ঘুরে বেড়ানোর জায়গা আছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসাবে তাদেরকে নিয়ে আসলে পূর্ণ নিরাপত্তা দিয়ে- বৈদেশিক মুদ্রা ও আসবে সাথে। আর এই বৈদেশিক মুদ্রা তো সিলেট আলাদা করে রেখে দেবে না- দেয়না, সবার সাথেই বণ্টন করে।

পর্যটন এবং অন্যসব খাতে সিলেটকে কাজে লাগান যথাযথ সম্মান এবং যত্ন সহযোগে। সিলেট এর সম্পদ কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশেরই লাভ আখেরে।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত