সুষ্মিতা রানী সাহা

১৪ এপ্রিল, ২০১৬ ০১:৫৯

আসছে বৈশাখে আবার হবে

১৪২২ সালের চৈত্র মাস, শেষ কয়েকটা দিন বাকি আছে। চারিদিকে বর্ষবরণের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। বাঙালির আর কিছু থাকুক আর না থাকুক বাঙালিয়ানা  দেখানোর সুযোগ পেলে দেখাতে ছাড়ে না।

প্রায় একমাস আগে থেকে চলে বিভিন্ন সংগঠনগুলোর প্রস্তুতি, মুখোশ, কার্টুন, ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ইত্যাদির ছড়াছড়ি আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একটু ভিন্ন ঢং এই চলে। চারুকলা বিভাগ হলে তো আর কোন কথাই নেই। যেন বর্ষবরণের মহান গুরুদায়িত্ব যেন অলিখিত ভাবে তাদের হাতেই ন্যস্ত , নানা রং আলপনা নিয়ে সবার এদিক ওদিক ছড়াছড়ি। তবে মজার বিষয় হল বর্ষবরণের আগে ও পরে যদি জরিপ করা হয় কততম বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে এ প্রস্তুতি অর্থাৎ বাংলা কোন সাল চলছে শতকরা সত্তর ভাগই জবাব দিতে পারেনা।

এমনকি পহেলা বৈশাখেও যদি জিজ্ঞেস করা হয় কোন সালকে বরণ করা হচ্ছে অনেকেই আমতা আমতা করে এদিক ওদিক তাকিয়ে ব্যানার পোস্টারে তাকিয়ে জবাব দিতে চায়। সাধে কি আর বলে “হুজুগে বাঙ্গালি- যে বলে আয়রে, তার পিছে ছোটরে.....”বলেই  ভো-দৌড়। সবাই একদিনের বাঙ্গালি হতে চায়। একদিনের ফুটানি- পান্তা ইলিশ, তাও মন্দের ভাল এভাবেও যদি বা বর্ষবরণের সংস্কৃতিটা বেঁচে থাকে। কিন্তু বর্ষবরণটাও কি দেশীয় সংস্কৃতি অনুসরণ করে চলে, রুচি ভেদে হিন্দি বাংলা ওয়েস্টার্ন মিলিয়ে জগাখিচুড়ি অবস্থা কোথাও কোথাও।

এসব উল্টা-পাল্টা কথা ভাবতে ভাবতেই প্রীতি নিজের ও তার বোন সোমার জন্য শাড়ি, চুড়ি, ম্যাচিং প্রসাধনী কিনে ফেলল। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। এবছরই যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের প্রস্তুতি থেকে সে স্বেচ্ছা নির্বাসিত। বৈশাখটা যেন বেশি করে কিশোরী থেকে যুবতী, তরুণী মেয়েদের উচ্ছ্বাস করার দিন। প্রাপ্ত বয়স্করা যারা জোড়ায় জোড়ায় আছে তাদের তো এই দিনটিকে কেন্দ্র করে আরও কত জল্পনা কল্পনা।  

কিন্তু এ বৈশাখ কি বরাবরের মত সবার জন্য আনন্দ নিয়ে আসবে, নাকি কারও কারও জন্য বিভীষিকাময় কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেবে?” রিকশায় উঠেই প্রীতি ঘড়িতে দেখল বেখেয়ালে সন্ধ্যাটা গড়িয়ে গেছে। বড় একটা দীর্ঘশ্বাস চাপল, যা হয়েছে গতবার তার বড় বোনের সাথে, তার পর থেকে পুরো একটা পরিবার যেন তাদের স্বাভাবিক চলাফেরা গতিপথ পরিবর্তন করে ফেলেছে।

চোখের সামনে সেই টিএসসি চত্বর যেন ভেসে উঠে। অনুষ্ঠান শেষ হলে ভিড় ঠেলে বেরিয়ে আসতে আসতে দুই বোন কেমনে কেমনে যেন দুপাশে ছিটকে আলাদা হয়ে গেল। প্রীতি সতর্কতার সাথে ভিড় থেকে বের হয়ে ফাঁকা জায়গায় দাঁড়িয়ে বোনকে খুঁজতে লাগলো, কিন্তু ওদিকে যা হল তা কি কেউ কল্পনা করেছিল? কোন মা বাবা কি ঘুণাক্ষরেও ভেবেছিল আনন্দ উৎসবে যোগদান করতে যাওয়া তার সন্তানটি না বিশেষত উল্লেখ্য কন্যা সন্তানটি  লাঞ্ছনার শিকার হয়ে প্রায় বিবস্ত্র হয়ে বাড়ি ফিরবে? তাতে কি এখন থেকে ভাববে, খুব গৌরবের ভাবনা তো এটা। স্বাধীনতার উদারত্বকে কুক্ষিগত করার ভাবনা। আর সেই মেয়েটি আর দশটা মানুষের মত, যার স্বাধীন নাগরিকের মত রাষ্ট্রের যে কোন আনন্দ ভোগের মৌলিক অধিকার আছে। যে কিনা বের হচ্ছিল অনুষ্ঠান থেকে যার মনে ছিল সদ্য উপভোগ্য অনুষ্ঠানের রেশ, সে কি ভেবেছিল মূহুর্ত ব্যবধানে আজন্মের তরে আনন্দের পরিবর্তে বিভীষিকার স্মৃতি বহন করতে হবে? শরীরের দাগ মুছে যায়, কিন্তু তার আহত হৃদয়ের নিষ্ফল ক্রন্দনের অশ্রুদাগ মুছবে কি করে?

কলিংবেল চাপতেই জিভে কামড় দিল প্রীতি। অনেকটা দেরী হয়ে গেল। তাদের বাসা মগবাজার এলাকার মধুবাগে। চাঁদনী চক , হকার্স মার্কেট ঘুরে আসতে আসতেই আর জ্যাম মিলিয়ে সাড়ে নটা বেজে গেছে। রাতের অন্ধকার পৃথিবী বাঙ্গালি নারীকে বিদ্রূপ করে, “তুমি মোটেও নিরাপদ নও। ঐ অসুস্থ কিছু পশুর চাহনি থেকে, ঘরে ফেরো।”

দরজা খুললেন অত্যন্ত ঠাণ্ডা স্বভাবের প্রগতিশীল মানুষ প্রীতির বাবা। তার গলায় কড়া ধমকের সুর, “সন্ধ্যা পেড়িয়ে গেছে কখন, ভিড়ের মাঝে বাইরে যাবার দরকার কি?”  অনেক কষ্টে পহেলা বৈশাখ কথাটা এড়িয়ে গেল প্রীতির বাবা। গত এক বছর এ পরিবারের মানুষগুলো সযত্নে এড়িয়ে যায় অপ্রিয় কিছু সত্য কথা।
|
এতক্ষণে প্রীতির মা এসে দাঁড়িয়েছে পাশে, “বের হয়েছিস, কোথায় গেছিস বলে যাসনি কেন? অন্ধকার হয়ে গেছে।” অন্ধকারে কেন মিছে ভয় মা সর্বনাশতো আলোতেও হয়েছে- মুখে হেটে আসা কথাটাও বলতে পারলোনা প্রীতি। হাতের প্যাকেটগুলোর দিকে তাকিয়ে প্রীতির মা জিজ্ঞেস করল “ওগুলো কি?” বড় কঠিন সে প্রশ্নের উত্তর, তার থেকেও কঠিন তার ব্যাখ্যাগুলো তারও পরের প্রশ্নগুলো।

এবারের পহেলা বৈশাখের ... আমার আর আপুর .... বাক্যগুলো যেন পূর্ণ করতে পারলোনা। “তোর মাথা ঠিক আছে? আর কি চাস তোরা? এবার কি তোর শখ হইছে..............(কুরুচিপূর্ণ কথা)।” হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে মা ঝাঁপিয়ে পড়লেন প্রীতির উপর। প্রীতি অবাক তার মায়ের মুখে এধরনের কথা কোন দিন সে শুনেনি। প্রীতির বাবা তার স্ত্রীকে সরিয়ে নিজেই টেনে একটা কষে চড় লাগালেন-“আবার বৈশাখ” । মারুক ওরা যত খুশি মারুক তবু সবাই ঐ অপ্রিয় সত্য কথাগুলো বলুক, সবাই বেঁচে থাকার জন্যই শুধু বেঁচে না থেকে তার অর্থটাকেও আবার খুঁজে বের করুক।

বছরটা তারা প্রত্যেকে যেন প্রত্যেকের থেকে লুকিয়ে বেরিয়েছে। সন্তর্পণে মেপেমেপে কথা বলেছে, এইবুঝি প্রসঙ্গ উঠে আসে। সবাই আঘাতটাকে সয়ে নিয়েছে, স্মৃতির পটে চিরস্থায়ী বাধানো ফ্রেম যেন। সেদিনের পর সোমা আর ঘর থেকে বের হয়নি। ঠিক হয়ে যাওয়া বিয়েটা ভেঙ্গে গেছে, কোনদিন হবে কিনা কেউ জানেনা। শুনেছে আর মেনে নিয়েছে পাড়া প্রতিবেশী, শুভাকাঙ্ক্ষী থেকে শুরু করে তামাশা দেখনেওয়ালাদের অনেক উপদেশ। আজকালকার মেয়েরা বেশি বাড় বেড়েছে, এত সংস্কৃতি পালনের কি দরকার, করবেই যখন ঘরে বসে করনা। হু আমাদের সিদ্ধান্ত এটাই হওয়া উচিত যে, আমাদের ঝিয়েরা বউয়েরা বৈশাখ উদযাপনে বাড়ির বাইরে যাবেনা। তাহলেই সব সমস্যার সমাধান। আবার পুরনো কথাও আছে- মেয়েদের লাঞ্ছনার জন্য নাকি তাদের পোশাক দায়ী। পহেলা বৈশাখে মেয়েরা কি এমন অশালীন পোশাক পরেরে... ভদ্র পোশাকে থাকা নারীও তার পুরুষ সহপাঠী বা সহকর্মীদের অসুস্থ চোখের লালসায় কখনও কি লাঞ্ছিত হয় না? কি ভিড় বা নির্জন জায়গা, মেয়েদের দেখলে অসুস্থ কিছু পশু, ইচ্ছে করে দেখেও না দেখার ভান করে, গায়ে হাত বা ধাক্কা দেবার চেষ্টা কি করে না? অথচ এমনও দেশ আছে যেখানে নারীরা স্বল্পবসনা, কই ঐখানে কি নারীরা আনন্দ উৎসবে পিছিয়ে আছে?

এধরনের ঘটনা যখন ঘটে তখন মেয়ে বা মেয়ের পরিবার লজ্জায় সামনে আসে না। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে যখন এমন হয় ঘটনা ধামাচাপা দেবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তৎপর হয়। ক্ষমতাসীন দলের কেউ জড়িত থাকলে পুলিশ পদক্ষেপ নেয়না কিন্তু কেউ বুঝেনা একাজ কোন দলের নয়, কোন পরিবারও দায়ী নয়। ক্ষতিটা তো শুধু সোমার হয়নি হয়েছে সমাজটার। ঘুণেধরা ঐ সমাজের দরজাটা হঠাৎ ধাক্কায় মড়মড় করে ভেঙে পরেছে। ক্ষতিটা যে আমাদের সমাজের কোন জায়গাটায়, নৈতিকতার কোন জায়গাটায়যে আমাদের অবক্ষয়, সেটাই কেউ বুঝতে পারে না। পর্দা দিয়ে ক্ষত ঢাকা যায়না তাতে আলো না পরে ইনফেকশন বেড়ে উঠে, তার প্রতিকারে চিন্তা নাই , চিন্তা শুধু ওটাকে আরও কিভাবে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে বাড়ানো যায়। সব আস্তাকুড়ে গেছে, গোল্লায় গেছে বলায় যেন আমাদের সন্তুষ্টি। কিছু করার কোন ইচ্ছে নেই।

ঘটে যাওয়া ঘটনাটা নিয়ে চলে মিডিয়ার কাটা-ছেঁড়া পোস্টমর্টেম, ফলাও কভারেজ। ইস্যুটাকে ব্যবহার করে রাজনৈতিকগণ নির্লজ্জ দলীয় রাজনীতিকরণ করতেও ছাড়েনা। এই সুযোগে আবার বেরিয়ে আসে নতুন নেতা। মিডিয়ার কল্যাণে প্রায় বিবস্ত্র মেয়েটির ছবির পাশাপাশি অসুস্থ ঐ পশুগুলোর ছবিও এসেছে। তারা কোন পরিবারের না হয় কোন মহল্লার অংশ। কেউ না কেউ তাদের চিনেছে। ঐ পরিবারটিই যদি প্রথম এগিয়ে আসত, ঐ পাড়ার মানুষগুলো যদি একবার একবার করে ঐ নরপশুর টুটি চেপে ধরত তাহলে আজ ঐ মেয়েটার মত অনেক মেয়েই স্বেচ্ছায় গৃহবন্দী হত না।

প্রীতি তাদের ঘরে ঢুকল, তার বোন ঘুমাচ্ছে। এত চিৎকার চেঁচামেচি কান্নাকাটি ছাপিয়ে মেয়েটি, পরিবারের আদরের বড় মেয়েটি ঘুমায় এ কি বিশ্বাস করতে হয়। মেয়েটি আর কাঁদেনা, কান্নার জল তো শুকিয়ে গেছে অনেক আগেই। ।সেদিনের পর থেকে মেয়েটি যে প্রতিদিন কতবার গোসলখানায় যায়, তাও তার শরীরের ময়লা তার পরিষ্কার হয়না। সেদিন ঐ ভিড় থেকে ছেড়াফাটা শাড়ি নিয়ে দৌড়ে কোন রকমে একটি মহিলা হোস্টেলে ঢুকে পরে। না ছিল তার কাছে কোন ব্যাগ, না ছিল কোন মোবাইল। ঘটনার আকস্মিকতায় বিহ্বল মেয়েটি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়েছিলো। হলের মেয়েরা তাকে মানসিকভাবে সুস্থ করার চেষ্টা করছিল। ঠিকানা জোগাড় করার চেষ্টা করছিল। শেষে ওর বাবার বন্ধুর এক মেয়ে চিনতে পেরে বাসায় ফোন দেয়। তারপর তার বাসায় প্রত্যাবর্তন। আর কোন কথা সে বলেনি বাসায় ফিরে। তার একটাই কাজ গোসল আর গোসল, কতবার যে দিনে তার গোসল করতে কেউ জানে না। আর সমাজের ঐ মানুষগুলোর প্রতি বিতৃষ্ণা আর ঘৃণা ভরা চাহনি। ডাক্তার দেখানো হয়েছে অনেক। তাদের এককথা “সি গট শক্ড” আর তার ওষুধ হল ডিপ্রেশনের ওষুধ।

কাত হয়ে শুয়ে থাকা আপুর দিকে তাকিয়ে প্রীতি দেখল তার আপুর গালে জলের দাগ এখনও শুকায়নি। ও অবাক হল, হাজার বলে কয়ে যাকে কথা বলানো যায়নি, এক বছর এতটুকু কাঁদেও নি যে, আজ তার চোখে জল। তার মানে এতক্ষণের ঘটনা সব সে প্রত্যক্ষ করেছে। শোকে বিহ্বল হওয়া পাথরটা কি তাহলে আবার গলতে শুরু করেছে? ধাক্কা দিল প্রীতি, “ধাপু, অই আপু”। সোমা কোন কথা বললো না, ঠিক যেন একটা পাথর। প্রীতি কাছ ঘেঁষে এসে আবার ডাকলো। এবার যেন একটু নড়েচড়ে গুমরে উঠল সোমা। প্রীতি নিজের সবটুকু শক্তি উজাড় করে বোনকে জড়িয়ে ধরল। চিৎকার করে কাঁদবে সে, আনন্দের অশ্রু তার চোখে।

পহেলা বৈশাখ ১৪২৩ সকালবেলা, প্রীতি তখনও ঘুম থেকে উঠেনি। প্রতিবছর এই দিনে সে আর তার বোন সকালে প্রথম যায় ছায়ানটে। তারপর টিএসসি ঘুরে বাড়ি ফেরে। এবছর আর কোন তাড়া নেই, তবুও অভ্যাসবশত ঘুমটা ভেঙ্গেই গেছে। পাশ ফিরে দেখল আপু পাশে নেই। ঐদিনের পর প্রীতি ভেবেছিল হয়ত আবার সব ১৪২২ এর আগের মত হয়ে যাবে। কিন্তু ঘুম ভেঙ্গে দেখেছিলো আলাদীনের জাদুর চেরাগ না সব, কিছুই ঠিক হয়নি। সেই সবার অপ্রিয় কথাগুলো এড়িয়ে চলা, আপুর জলশূন্য চোখে চেয়ে থাকা, নাহ্, বড্ড হতাশ হয় সে!

হঠাৎই ড্রয়িংরুমে কান্নার শব্দ শুনতেপায় প্রীতি। আবার কি হল! আপু কিছু করে বসল নাতো! যতটুকু আছে ততটুকুও কি হারিয়ে যাবে জীবন থেকে? দৌড়ে ড্রয়িংরুমে এসে যে দৃশ্য দেখল, তা দেখার জন্য প্রীতির অবচেতন মনও প্রস্তুত ছিলনা। মা-বাবা শাড়ি পরা একটা মেয়েকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। সে কি ভুল দেখছে? তার গায়ে রোমে রোমে আনন্দ আর কান্না মেশানো শিহরন বয়ে যেতে লাগল। আপু শাড়ি পরল কখন? সোমাই প্রথম ওকে দেখলো, দুর্বল কণ্ঠে বলল “তুই প্রতিবার দেরী করিয়ে দিস, আজও দেরী করালি। যা তৈরি হয়ে নে।” চোখের জল মুছতে মুছতে আবার বলল, “সব এনেছিস, ফুল আনলিনা...তোর এত ভুলোমন”। প্রীতি চিৎকার করে কাঁদতে গিয়েও সামলে নিল। না আজ আর কাঁদবেনা সে। “বাবা আমি কি স্বপ্ন দেখছি?” অস্ফুট কণ্ঠে বলল সে। “আরে কিসের স্বপ্ন! যা যা তৈরি হয়ে নে। কই গো সোমার মা, তুমিও তৈরি হও, আমরা সবাই যাব। আমার এতকালের গড়া সংস্কারে মোড়া সংস্কৃতিকে অসুস্থ পশুর থাবায় কালিমালিপ্ত হতে দিবোনা। সমাজটাকে গড়তে হলে লড়াই করতে হয়, ত্যাগ করতে হয়। রমনার বটমূলে ঐ বর্বরোচিত হামলার পরও যখন আমরা থেমে নেই, পিছিয়ে আসার উপায় তো আর নেই। ঐ দেখ আবার চোখে জল! চলো চলো, তৈরি হও। আহা আবার ফুলটাও কেনা বাকী রয়ে গেছে তো.........”

লেখক: প্রভাষক, ক্রপ বোটানি অ্যান্ড টি প্রোডাকশন টেকনোলজি বিভাগ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত