প্রণবকান্তি দেব

০৮ মে, ২০১৭ ২৩:১৯

সাফল্যের ষোল বছরে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

সিলেট অঞ্চলের শিক্ষার্থী আর অভিভাবকদের অপরিসীম আস্থার পথে অবিচল থেকে সফলতার ষোল বছরে পা রেখেছে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্থাপিত সিলেটের একমাত্র এ বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে শিক্ষা ও গবেষণায় অর্জন করেছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ভূয়সী প্রশংসা।

বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০০১ সালের ২৫ নভেম্বর গুলশান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে সরকারের নীতি অনুযায়ী বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর মাধ্যমে এর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির বিশেষত্ব হচ্ছে ফুল-পাখি আর গাছ-গাছালী বেষ্টিত নিজস্ব ক্যাম্পাস, রয়েছে স্বল্প বেতনে মধ্যবিত্ত/নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পড়াশোনার সুযোগ, রয়েছে আমেরিকান দূতাবাস পরিচালিত ‘আমেরিকান কর্ণার’, বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সমৃদ্ধ কম্পিউটার ল্যাব, ইলেক্ট্রনিকস ও ইলেকট্রিক মেশিন ল্যাব- যা অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও গড়ে উঠেনি। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপরিসর লাইব্রেরিটিও শিক্ষার্থীদের আকর্ষণের আরেক প্রাণকেন্দ্র। সম্প্রতি ইউজিসি থেকে হিকেপ প্রজেক্টের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে গবেষণা কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫টি বিভাগেই পরিচালিত হচ্ছে এ প্রকল্প। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চাকুরী বাজারেও নিজেদের সাফল্যের প্রমাণ দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। সরকারি থেকে শুরু করে বেসরকারি এবং বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মেধাবী শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন আকাশ ছোঁয়া। প্রবাসে জীবন যাপন করলেও প্রতিমাসেই ছুটে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যাণ ও সমৃদ্ধির বার্তা নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিন্দুমাত্র কোন মুনাফা না নিয়ে নিজের অর্থ, মেধা ও শ্রম দিয়ে এগিয়ে নিতে চান সময়ের সাথে। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাফল্যের শিকড়ে পৌছে দিতে তার নিরলস প্রচেষ্টা চলছেই। শামীম আহমেদের পিতা মরহুম শিক্ষানুরাগী মঈন উদ্দিন আহমদ, যার নামে প্রতিষ্ঠিত আছে মঈন উদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজ। বিলেতে তড়িৎ প্রকৌশলী বিদ্যায় উচ্চ শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে লক্ষ্মীকে নিয়ে যখন বিস্তর ব্যস্ত দিন-মান তার, ঠিক তখনই ২০০৯ সালে এসে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের দায়িত্ব নেন তিনি। যোগ্য পিতার উত্তরসূরী হয়ে হাল ধরেন তৎকালীন সময়ে খানিকটা নাজুক পরিস্থিতির। তারপর সময়ের সাথে সাথে স্বীয় মেধা, মনন আর প্রজ্ঞার সমন্বয় ঘটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তুলতে থাকেন নিজের স্বপ্নের সৌধরূপে। ভোগ নয় ত্যাগই যে মানুষকে পৌছাতে পারে সাফল্যের গন্তব্যে তার উদাহরণ হয়ে উঠলেন শামীম আহমেদ।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য সাধারণ হলেও পড়াশোনা ও গবেষণার পরিবেশ গর্ব করার মতো। জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি সাহিত্য ও শিল্পকলায়ও সমান অবদান রাখছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। জাতীয় দিবসগুলো উদযাপনের পাশাপাশি বাঙালীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য লালন করে বিশ্ববিদ্যালয়টি সহ শিক্ষা কার্যক্রমেও গুরুত্ব দেয় সমানভাবে।

সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অবস্থান নগরীর বাগবাড়িস্থ শামীমাবাদ এলাকায়। শহরের একপ্রান্তে যানজট, কোলাহলমুক্ত সবুজ আঙ্গিনা ঘেরা এক মায়াবী ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমান শিক্ষার্থী প্রায় ৩ সহস্ত্রধিক, স্থায়ী শিক্ষকই ৮৫ জন, অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। সবাইকে নিয়ে সুবিশাল এক এসআইইউ পরিবার এখন। উচ্চ শিক্ষার বার্তা নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয় অপেক্ষায় জ্ঞান অন্বেষু শিক্ষার্থীদের। এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়টি পদার্পন করলো গৌরবের ১৬ বছরে। অতীতের সাফল্য আর বর্তমানের প্রতিশ্রুতি নিয়েই রচিত হবে সাফল্যময় ভবিষ্যত- এ আশা অগণিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের।

সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হবে সিলেটের আপামর মানুষের স্বপ্ন-আকাক্সক্ষার এক স্বপ্নীল উঠান।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত