মাহিদ আল সালাম

২৭ মার্চ, ২০১৮ ১২:১০

ছিনতাই: টার্গেট শাবিপ্রবি ও করণীয়

গত ৬ নভেম্বর সকালবেলা নিয়মিতভাবে ঘটে যাওয়া ছিনতাইয়ের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উঠে শাবিপ্রবি’র শিক্ষার্থীরা। কয়েক বছর ধরেই ছিনতাইয়ের সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে আসছে শাবি শিক্ষার্থীরা।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের লেডিস হলের রাস্তাতে ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ছিনতাইয়ের কথা হরহামেশাই শোনা যায়। যেহেতু এই হামলাগুলোতে মেয়েদের টার্গেট করা হয়; তাই অপরাধী ধরা তো পরের কথা, শনাক্ত পর্যন্ত করা সম্ভব হয় না। ছিনতাই ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে মোটর সাইকেল ও সাইকেল চুরির ঘটনাও নিয়মিতই ঘটে চলেছে।

বছরখানেক আগে ড. এ ওয়াজেদ আলী মিয়া আইআইসিটি ভবনের গ্যালারি থেকে প্রজেক্টর ও টিভি মনিটর চুরি হয়ে যায়। পরবর্তীতে সিসিটিভি ফুটেজ সর্বত্র স্থাপন করলেও নিরাপত্তার ঘাটতি সবসময়ই পরিলক্ষিত হচ্ছে।

৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুরমা আবাসিক এলাকা পয়েন্ট পর্যন্ত পুলিশের তাৎক্ষণিক চেকপোস্ট আশার আলো দেখালেও প্রদীপের নিচের অন্ধকার পরের দিনেই আবিষ্কার হয়। ৭ নভেম্বর অর্থনীতি বিভাগের উচ্চতর গবেষণাতে অধ্যয়নরত একজন ছাত্রের মোবাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পথে সুবিদবাজার মসজিদের সামনে সিএনজি থেকে হাতিয়ে নেয়। এসময় চক্রের চার সদস্য ও সিএনজি চালকের ‘যোগসাজশে’ আক্রান্ত ব্যক্তির কিছুই করার ছিলো না।

প্রথমত, সিলেটে চলাচলের ক্ষেত্রে শেয়ারে সিএনজিতে গমন সুলভ বিধায় সকল শিক্ষার্থীই এটি ব্যবহার করে থাকেন। দ্বিতীয়ত, চাহিদা ব্যাপক থাকায় সিএনজিচালকেরা তাদের মর্জি মোতাবেক ভাড়া আদায় করে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহরে যাবার বেলায় যে ভাড়া নেন, ফিরে আসার সময় তার থেকে ৫-১০টাকা অতিরিক্ত আদায় করে থাকেন। এক্ষেত্রে তাদেরকে কোন নীতিমালায় আনার চেষ্টা করলে ধর্মঘটের নামে নৈরাজ্যের চেষ্টা করা হয়।

এরকম ভোগান্তি মুখ বুজে মেনে নিলেও ছিনতাইয়ের ঘটনায় প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠে শাবিপ্রবি পরিবারের সদস্যরা। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে যায় স্বার্থান্বেষী ছিনতাইকারী চক্রটি।

এক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবার জন্য দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করা অতীব আবশ্যক। এছাড়াও আমাদের প্রত্যেকের উচিত কিছু সতর্কতা মেনে চলা; যাতে ছিনতাইকারী চক্রটি যেন সহজেই ধরা পড়ে যাওয়ার ফাঁদে আটকা পড়ে। এজন্য আমাদের কয়েকটি বিষয়ে লক্ষ্য রাখা উচিত:

  • সিএনজিতে উঠার সময় গাড়ির নাম্বার কৌশলে দেখে রাখা। সাবধানতা অনেক সময় বড় বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।
  • খুব প্রয়োজন না হলে সিএনজি বা রিকশায়ে চড়া অবস্থায় মোবাইল ব্যবহার না করা।
  • যাত্রাপথে ফেসবুক ব্যবহার বন্ধ রাখা।
  • সিএনজিতে থাকা বাকি যাত্রীদের পর্যবেক্ষণ করা। সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়লে সাবধান থাকা, পারলে প্রতিহত করা।
  • উপরোক্ত সাবধানতা সত্ত্বেও যদি দুর্ঘটনা ঘটে যায় বা ছিনতাই হয়, তাহলে গাড়ির নাম্বার উল্লেখপূর্বক প্রশাসনে অভিযোগ পেশের পাশাপাশি সোচ্চার হওয়া।

মাহিদ আল সালাম: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী; গত ২৫ মার্চ ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত হন তিনি।

  • লেখাটি সাস্টনিউজ২৪-এ গত ৮ নভেম্বর ২০১৭ প্রকাশিত। প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় লেখাটি প্রকাশ করা হলো।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত