‘বিশেষ নিরাপত্তা’ আশ্বাসেও আশ্বস্ত নন লেখকরা

বিবিসি বাংলা প্রতিবেদন

 প্রকাশিত: ২০১৬-০২-০১ ০৩:৩৪:৪৫

 আপডেট: ২০১৬-০২-০১ ০৩:৩৬:১০

সিলেটটুডে ডেস্ক:

পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলায় লেখকদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। তবে লেখকদের অনেকেই এই আশ্বাসের ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করছেন।

সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে একুশে বইমেলার মাসব্যাপী আয়োজন। ২০১৫ সালে এই বইমেলা প্রাঙ্গণের পাশেই লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। গত বছর একই রকম আক্রমণে নিহত হন আরো একজন প্রকাশক।

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে অন্তত ৫ জন ব্লগার এবং লেখককে হত্যা করা হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটেই বইমেলার আগে লেখক ও প্রকাশকদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে একটা চাপা উদ্বেগ কাজ করছে।

এ ব্যাপারে ডিএমপির একজন মুখপাত্র বলছেন, লেখক বা ব্লগারদের আবেদনের ভিত্তিতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু কিভাবে সেই নিরাপত্তা দেয়া হবে এবিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলছে না পুলিশ। এতে আশ্বস্ত হতে পারছেন না লেখক এবং ব্লগারদের অনেকেই। কেউ কেউ নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন।

লেখক ও সাংবাদিক সাজ্জাদ শরীফ বলছেন, লেখকদের নিরাপত্তার এসব প্রতিশ্রুতির পর কথা আর কাজে কতটা মিল থাকবে তা নিয়ে তার সংশয় রয়েছে।

“যখন লেখকদের মতামত প্রকাশ এবং তাদের শারীরিক অস্তিত্বও হুমকির মুখে পড়েছে, তখন সরকার আদৌ এদের পক্ষে আছেন কিনা সে ব্যাপারে স্পষ্ট কোন কথা শুনিনি বরং একটি দ্যোদুল্যমানতা দেখেছি। রাজনৈতিক মহলে যখন দেখি যে তাদের ব্যাপারে স্পষ্ট কোন অবস্থান নেই, তখন মধ্যবর্তী স্তরে পুলিশের নিরাপত্তা কতটুকু কার্যকর হবে সেটা নিয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে সংশয় অনুভব করি।”

লেখকদের আবেদনের ভিত্তিতে প্রত্যেককে পৃথকভাবে নিরাপত্তা দেয়া কতটা বাস্তবসম্মত এ নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করছেন লেখকরা।

গত নববর্ষে কড়া নিরাপত্তার মাঝেও নারীদের হয়রানির যে অভিযোগ এসেছিলো সেই প্রসঙ্গও তুলে আনছেন কেউ কেউ।

বাংলাদেশে ব্লগার এন্ড একটিভিস্ট নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকার বলছেন, নিরাপত্তাবোধ তৈরি করাটাই বেশি জরুরি বলে তিনি মনে করছেন।

“আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এই বার্তাটিই পৌঁছে দেয়া দরকার যে, তারা লেখক-প্রকাশক এবং ব্লগারদের নিরাপত্তার বিষয়ে শতভাগ আন্তরিক এবং যেকোনো ঘটনায় তারা পাশে দাঁড়াবেন।”

বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দি উদ্যান মিলিয়ে এবারের বইমেলার পরিধি বেড়েছে, বেড়েছে স্টলের সংখ্যা এবং প্রকাশকের সংখ্যা। কিন্তু একটি বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

রোববার (৩১ জানুয়ারি) ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এবারের বইমেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে এবং ২০০ টি সিসি ক্যামেরা বসানোসহ নানা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

পাশাপাশি পুলিশ বলছে লেখকদের জন্য প্রয়োজনে বিশেষ নিরাপত্তাও দেয়া হবে।

“চাহিদার প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা দেয়া হবে। আবেদনের পর আমরা যাচাই করে দেখবো এবং তার প্রেক্ষিতে আমরা নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।” বলেন ডিএমপির গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার মারুফ হোসেন সর্দার।

আপনার মন্তব্য