পর্দা উঠল অমর একুশে গ্রন্থমেলার

 প্রকাশিত: ২০১৬-০২-০১ ২৩:২৭:২৩

সিলেটটুডে ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণার মধ্য দিয়ে পর্দা উঠল বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলার।

সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে 'অমর একুশে গ্রন্থমেলার' উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী মেলা প্রাঙ্গণ ছেড়ে যেতে না যেতেই জনস্রোত নামে মেলার দুই অংশ একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
 
তবে এখনও নানা অসঙ্গতিতে ভরপুর মেলা প্রাঙ্গণ। চালু হয়নি অন্তত অর্ধশত প্রকাশনা সংস্থার স্টল। সেই সঙ্গে প্রাঙ্গণ জুড়ে রয়েছে আবর্জনা।
 
মেলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এসব ঠিকঠাক করে নিতে খুব বেশি সময় লাগবে না। বিশাল পরিসরের এ মেলা শেষ পর্যন্ত ভালো হবে বলেই আশা করছেন প্রকাশকরা।
 
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বেষ্টনী তুলে নেয়ার পর পরই মেলায় শুরু হয় প্রাণের কল্লোল। এগারো মাসের অপেক্ষা শেষে আসা প্রাণের বইমেলার প্রথম মুহূর্তেই নামে জনস্রোত। প্রকাশকরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন স্টল খুলতে। সদ্য মেলায় আসা বইয়ের ভাঁজ খোলা গন্ধ ছড়ায় বাতাসে। মাঘের হালকা হিমেল সন্ধ্যার ঝিরি ঝিরি বাতাসে এ গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।
 
আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা উন্মুক্ত থাকবে। এছাড়া ছুটির দিনগুলোতে বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে।

মেলায় বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বই ৩০ শতাংশ কমিশনে এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এ গ্রন্থমেলাকে কেন্দ্র করে দেশের নানাপ্রান্তের মানুষ এবং প্রবাসী বাঙালিদের বিপুল সমাগম ঘটে। এই মেলা এখন পরিণত হয়েছে বৃহত্তর বাঙালির মিলনমেলায়।

বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকার দিনগুলোতে বইমেলা ঘুরে দেখার আনন্দের কথা তুলে ধরেন। নিয়মের কড়াকড়িতে এখন আর ছাত্রজীবনের মতো বইমেলায় ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পান না বলে আক্ষেপ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'কবে আবার মুক্ত হতে পারব, ঘুরে বেড়াতে পারব…।'

গত বছরের তুলনায় এবারের মেলার পরিসর দ্বিগুণ। তার ওপর অধিবর্ষের (লিপ ইয়ার) কারণে এবারের ফেব্রুয়ারি মাসে যোগ হয়েছে বাড়তি একদিন। ফলে ৭২ সাল থেকে চলে আসা বৃহত্তর বাঙালির এ মিলনমেলা এবার পরিসর ও ব্যাপ্তিতে স্মরণকালের সবচেয়ে বড়।

বড় আয়োজনের মেলায় নিরাপত্তা আয়োজনও বড়। চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঘেরা মেলা প্রাঙ্গণ। সন্ত্রাসী-জঙ্গিদের হাত থেকে মেলায় আগত দর্শনার্থী, লেখক ও প্রকাশকদের রক্ষায় চলছে কড়া নজরদারি।

এ বছর চার লাখ ৭৮ হাজার বর্গফুটের পরিসরে আয়োজিত বইমেলায় শিশুদের বাড়তি জায়গা দিতে শিশুকর্নার বাংলা একাডেমি থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজন করা হয়েছে।

এবার সাড়ে চারশ' প্রকাশনা সংস্থা বইয়ের পসরা সাজিয়েছে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৮২টি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩২০টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে স্টল দেয়া হয়েছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৩৫১।

মেলায় বাংলা একাডেমিসহ ১৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের থাকছে ১৫টি প্যাভিলিয়ন। এছাড়া ৯২টি লিটল ম্যাগাজিনের জন্য রয়েছে আলাদা কর্নার।

এবারও একাডেমির নজরুল মঞ্চে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা হয়েছে। আর মেলার দুই অংশেই ওয়াই-ফাই সুবিধা থাকবে।

আপনার মন্তব্য