সিলেটটুডে ডেস্ক

০৮ এপ্রিল, ২০১৫ ১৮:৫৯

আমি নাকি বাজে মেয়ে, আমার চরিত্র খারাপ : সুজানা

এক বছর পূর্ণ না হতেই ভেঙে গেল হৃদয়-সুজানার সংসার। গত সোমবার আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দাম্পত্য জীবনের ইতি টানেন তারা। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়ায় চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। এ পরিপ্রেক্ষিতে কথা হয় সুজানার সঙ্গে

বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে?

হৃদয় স্বাক্ষর করে যাওয়ার পর তালাকনামায় স্বাক্ষর করেছি। এ ঘটনার পর অনেক গণমাধ্যমে ওর নানা ধরনের বক্তব্য এসেছে। তবে মানসিকভাবে বনিবনা না হওয়া নিয়ে ও যা বলেছে, তা ঠিক। পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝিই এর জন্য দায়ী। দুজন যদি দুই মানসিকতার হয়, তাহলে সে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

 

আপনাদের দুজনের দূরত্বের কারণ?

বিয়ের আগে এবং বিয়ের পরের সম্পর্ক দুটোই ভিন্ন। বন্ধুত্ব এক ব্যাপার, সংসার করা ভিন্ন জিনিস। আর শুধু মুখে বললেই ভালোবাসা হয় না। আমাকে ভালো না বেসে অন্যদের কাছে তা বললে তো হবে না।

 

বিয়ের আগের ও বিয়ের পরে হূদয় খান?

আমাকে কাছে পাওয়ার জন্য হৃদয় হয়তো অনেক কিছুই দেখিয়েছে। সত্যিকারের ভালোবাসা আর একই ছাদের নিচে থাকার মধ্যে আমি কোনো পার্থক্য দেখি না। তবে সংসার করার জন্য প্রচুর ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, ম্যাচিউরিটির দরকার হয়, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার দরকার হয়। এটা দিতে হৃদয় ব্যর্থ হয়েছে। সংসার করার মতো মানসিক বোধগম্যতা ওর তৈরি হয়নি। ও এখনো জীবনটাকে সহজ মনে করে।


হৃদয়ের এ সমস্যা আগে বোঝেননি?

আমি বুঝতাম ও একটু পাগলামি করে। ও মানসিকভাবে কিছুটা অপরিপক্ব। তার পরও ভেবেছিলাম, বিয়ের পর সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি ওকে অনেকটা ভালোও করেছিলাম। কিন্তু ও আমাকেই বোঝেনি। বুঝলাম দোষ আমার কিন্তু প্রশ্ন, ও তো আগেও ভালোবেসে একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে, তাকে কেন ছেড়ে দিল।

 

একই প্রশ্ন যদি হৃদয় আপনাকে করে?

আজ থেকে ১০ বছর আগে আমার প্রথম বিয়ে হয়েছিল। লুকোচুরি করে নয়, বিয়েটা হয়েছিল পারিবারিকভাবে। দুই পরিবারের ভেতর অনেক সমস্যা থাকায় সবার সম্মতিক্রমে আমার বিচ্ছেদ হয়েছিল। পরিবার ছাড়া আমি কোনো কিছুই করিনি। কিন্তু হৃদয় তো তার প্রথম বিয়ের আগে থেকেই পরিবার ছাড়া একা থাকে।

 

আপনাদের বিয়ে নিয়ে শুরুতেই হৃদয়ের পরিবারের অমত ছিল?

এটা ভুল কথা। কারণ, আমার সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার আগে থেকেই ওর পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয়। যদি ভালোই থাকত, তাহলে ও কেন পরিবার ছেড়ে অফিসে থাকত। তখন তো আমি ছিলাম না। ওর বাবার সঙ্গে ওর অনেক সমস্যা ছিল। প্রথম বউ নিয়েও অনেক সমস্যা ছিল। হৃদয় কখনো তার পরিবারের কথা শুনতে চাইত না। ফলে পরিবার তো আগেই ওর বিপক্ষে ছিল। ওর পরিবার আমার জন্য মোটেও দায়ী নয়।

 

বিচ্ছেদের ব্যাপারে আপনার কি মত ছিল?

বিচ্ছেদ না হওয়ার জন্য আমি ও আমার পরিবার অনেক চেষ্টা করেছি। হৃদয়কে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আমি সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তু হৃদয়ের একই কথা, সে কারো কোনো কথাই শুনবে না, কারো কথা মানবে না। তার একটাই কথা ‘আমি এই সম্পর্ক রাখব না। আর যদি রাখতে হয়, তাহলে আমি যা করতে বলব, তা সুজানাকে মানতে হবে।’ এ দেশ তো এখন আর পুরুষশাসিত সমাজ নয় যে, স্বামী অযৌক্তিকভাবে যা বলবে, স্ত্রীকে তা-ই মেনে নিতে হবে।

 

সংকটের শুরুটা কবে থেকে?

এই তো তিন-চার মাস ধরে। যে হূদয়কে ছাড়া আমি কোনো কিছুই করিনি। সে-ই বলে, আমি বাজে মেয়ে, আমার চরিত্র খারাপ, সারা দিন অন্য ছেলেদের সঙ্গে সেলফি তুলি। আমি তার যত্ন নিই না। যা ছিল আমার জন্য ভীষণ অপমানজনক।

 

কোনো উপলব্ধিবোধ?

কখনো মানুষকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে হয় না। কারো সম্পর্কে না জেনে না বুঝে তাকে বিশ্বাস করা মোটেও ঠিক নয়। আমি সহজভাবে, আবেগ দিয়ে হৃদয়কে বিশ্বাস করেছিলাম। এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল।

 

ক্যারিয়ারের ব্যাপারে কী ভাবছেন?

আমি সব কাজই বন্ধ করে দিতাম, যদি হৃদয়ের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক থাকত। সংসারের আরো ভালোর জন্য ও যদি এ সিদ্ধান্ত নিতে বলত, তাহলে তা-ই করতাম। আমি এ ব্যাপার নিয়ে অনেক দিন ধরে মানসিক নির্যাতনের ভেতর ছিলাম। মানসিকভাবে ঠিক হতে আমি কয়েক দিন সব কিছু থেকে দূরে থাকতে চাই। দেশের বাইরে চলে যেতে পারি কয়েক দিনের জন্য। তার পর আবার কাজ শুরু করব। ভবিষ্যতে বুটিক হাউজ দিতে পারি। আমি ব্যস্ত থাকতে চাই।

 

ভবিষ্যতে সম্পর্কের কোনো চিন্তা?

এ চিন্তা মনের ভুলেও করব না। এ বিষয়ে আমার আর কোনো বিশ্বাস নেই। তবে ভবিষ্যত্ই সব বলে দেবে আর কোনো সম্পর্কে জড়াব কি না। আমি আমার পরিবারকে নিয়ে ভালো থাকতে চাই। আর হূদয়ের উদ্দেশে একটা কথাই বলতে চাই, হৃদয় তুমি এখনো মানসিক দিক থেকে অপরিপক্ব। আমি চাই না, তোমার এ দুর্বলতার কারণে আর কোনো মেয়ের জীবন ধ্বংস হোক। আর তুমি ভালো থাকো।’

 

হৃদয় যদি ফিরে আসে?

ওকে আমি মন থেকে ভালোবাসব। কিন্তু কখনই আর ওর সংসার করতে চাই না। ওর প্রতি আমি বিশ্বাস হারিয়েছি। সুতরাং ও ফিরে এলেও আমি আর ওকে চাই না।

 

 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত