বিনোদন ডেস্ক

০৮ মে, ২০১৫ ০২:৪৬

সালমানের যত বিতর্কিত ঘটনা

বিতর্কের সঙ্গে সালমানের সম্পর্ক অনেকদিনের। শুধু হিট অ্যান্ড রান বা কৃষ্ণসার হত্যা মামলা নয়। কন্ট্রোভার্সির সঙ্গে তার সম্পর্ক অনেক বছরের। অবশ্য সেলিব্রিটিদের একটু-আধটু কন্ট্রোভার্সি না থাকলে, মানায়ও না।

অনেক সেলিব্রিটি তো কন্ট্রোভার্সি নিয়েই চলতে পছন্দ করেন। তাতে তাদের টিআরপি বাড়ে বৈ কমে না। তবে সালমান খানের ক্ষেত্রে একটু বেশি – এই যা। যাকে ঘিরে ২ হাজার কোটি টাকার বেটিং (সেরকমই শোনা যাচ্ছে) হতে পারে, তাকে নিয়ে কন্ট্রোভার্সি থাকবে না, সেটাও কী সম্ভব?

হিট অ্যান্ড রান মামলা: ১৩ বছর পর গতকাল বুধবার এই মামলার রায়ে সালমানের বিরুদ্ধে ৫ বছরের সাজা ঘোষণা করেছে আদালত। ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলায় দোষীসাব্যস্ত করা হয় তাকে। ২০০২ সালে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাতে গিয়ে ১ ফুটপাথবাসীকে গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলা ও ৪ জনকে আহত করার ঘটনায় দোষীসাব্যস্ত হোন তিনি।

কৃষ্ণসার হত্যা মামলা: ১৯৯৮ সালের ১ ও ২ অক্টোবর ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ সিনেমার শুটিং করতে রাজস্থান গিয়েছিলেন সালমান খান। তার সঙ্গে সাইফ আলি খান, সোনালি বেন্দ্রে, টাবু আর নীলমও ছিলেন। শুটিংয়ের সময় যোধপুরের কাছে কানকানি গ্রামে তিনি কৃষ্ণসার শিকার করেন বলে অভিযোগ। সেই মামলা এখনো বিচারাধীন।

ঐশ্বরিয়ার অভিযোগ: যে বছর হিট অ্যান্ড রান মামলায় ফেঁসেছিলেন সালমান সে বছরই ঐশ্বরিয়াও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। তার অভিযোগ ছিল, সালমান তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাতেন। ‘কুছ না কহো’-র সেটে ঐশ্বরিয়াকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারপরই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন ঐশ্বরিয়া।

বিবেককে খুনের হুমকি: মৌখিকভাবে কোনো অনুষ্ঠানে নয়। সালমানের বিরুদ্ধে বিবেক ওবেরয় অভিযোগ তোলেন একেবারে প্রেস কনফারেন্স ডেকে। ততদিনে অবশ্য ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন বিবেক। সালমানের সঙ্গে তার সমস্যাটা সেই কারণেই তৈরি হয়েছিল বলে অনেকের ধারণা। সাংবাদিকদের সামনে বিবেক অভিযোগ করেন, শুধু ঐশ্বরিয়াকে হেনস্তা নয়, তাকেও নাকি খুনের হুমকি দিয়েছিলেন সালমান।

শাহরুখের সঙ্গে মনোমালিন্য: ঘটনার মূলে ছিলেন ক্যাটরিনা কাইফ। ২০০৮ সালে তার জন্মদিনের পার্টিতে শাহরুখের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন সালমান। দু’জনের মধ্যে মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায়। তারপর চলতি বছরে অর্পিতার (সালমানের বোন) বিয়েতে গলেছে সেই বরফ। বোনের কপালে দু’জনের স্নেহচুম্বনের সেই ছবি তো ভাইরাল।

গণেশ পুজো: নিজের বাড়িতে গণেশ পুজো করা নিয়েও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন সালমান। কয়েকটি সাম্প্রদায়িক দল তার বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করে।

রাজনীতি: ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে গুজরাটে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ঘুড়ি ওড়াতে দেখা যায় সালমান খানকে। এই ঘটনার পর বেশ কয়েকটি সংগঠন সালমানের সিনেমা ‘জয় হো’ বয়কটের ডাক দিয়েছিল। তাতে অবশ্য বিশেষ কোনো ক্ষতি হয়নি সালমানের।

এ ছাড়া সে বছরই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের সাইফাই উৎসবে পারফর্ম করে বিতর্কের মুখে পড়েন তিনি। মুজফফরপুরের পীড়িতদের জন্য কোনো কাজ না করে, স্রেফ আনন্দোৎসবে অনুষ্ঠান করার জন্য তার বিরুদ্ধে কয়েকটি সংগঠন সোচ্চার হয়ে ওঠে। যদিও পরে মেডিকেল কলেজে ২৫ লাখ টাকা ডোনেশন দিয়ে দেওয়ায়, সব সমালোচনাই ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়।

২৬/১১: ২৬/১১-এর ঘটনা নিয়েও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন সালমান খান। সে সময় পাকিস্তানি একটি চ্যানেলে তিনি সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে সালমান বলেন, সন্ত্রাসবাদীদের লক্ষ্য ছিল সমাজের ‘উচ্চস্তরের লোকেরা’।

রাজাপাকসের ক্যাম্পেইন: এটাও গতবছরেরই ঘটনা। শ্রীলঙ্কায় গিয়েছিলে সলমান খান। সেখানে তিনি রাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচনের জন্য রাজাপাকসের হয়ে প্রচার করেন। সালমানই প্রথম ভারতীয় অভিনেতা যিনি শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক প্রচার চালিয়েছিলেন। আর সেই ঘটনা নিয়ে সোচ্চার হয়ে ওঠে তামিলনাডুর বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। সালমান খানকে বয়কটেরও ঘোষণা করে দেয় কয়েকটি সংগঠন।

বডিগার্ডকে মার: ফ্যানেদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা জন্য নিজের বডিগার্ডকে চড় কষিয়ে দেন সালমান। সেই ঘটনাতেও সমালোচনার মুখে পড়েন সালমান।

ভক্তকেও মার: আবার এমন নয়, যে তিনি নিজে কখনো ফ্যানদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেননি। ‘জয় হো’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় এক ফোটোগ্রাফার তার ফটো তুলছিলেন। বিরক্ত সালমান তার ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার আদেশ দেন। ক্যামেরা থেকে সব ছবিও ডিলিট করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

তার আগেও অবশ্য এক ভক্তের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। ২০১৩ সালে। সেবার গাড়িতে ছিলেন সালমান। তখন এক ভক্ত তার মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে সুপারস্টারের ছবি তুলছিলেন। সালমান হঠাৎই গাড়ির কাঁচ নামান, আর মোবাইলটি কেড়ে নেন।

মৎস্যজীবীকে হুমকি: এক মৎস্যজীবীর বোটের জন্য সুপারস্টারের পশ্চিম বান্দ্রার বাড়িটি থেকে সমুদ্র নাকি দেখা যাচ্ছিল না। শোনা কথা, সালমান নাকি এতেই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। তিনি ওই মৎস্যজীবীকে ডেকে পাঠিয়ে নৌকা সরানোর নির্দেশ দেন। এবং হুমকি দেন, কথা না শুনলে ফল ভালো হবে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত