সিলেটটুডে ডেস্ক

০৬ জুন, ২০১৮ ২৩:১৯

আপনি কেন গান ছেড়ে দিলেন, আসিফকে বিচারক

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে দায়ের করা মামলায় আদালতে হাজির করা হয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরকে।

এসময় আসিফকে উদ্দেশ্য করে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম কেশব রায় চৌধুরী বলেন, ‘আমরা তো একই এলাকার। আমি আপনার সবকিছুই জানি। আপনি কেন গান ছেড়ে দিলেন? গান না ছাড়লে এ ধরনের সমস্যায় পড়তেন না।’

মঙ্গলবার (৫ জুন) রাতে আসিফকে গ্রেপ্তারের পর আজ বুধবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশ তাকে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন জানালে আদালত তা নামঞ্জুর করে আসিফকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এসময় বিচারক আসিফকে বলেন, ‘আপনার বাসা ফৌজদারি চৌমুহনীর (কুমিল্লার মহানগরীর একটি এলাকা) সামনে। এটা আমাদের আড্ডার এলাকা। আপনার বাংলা রেস্তোরাঁ, জিলা স্কুলের সামনে আমি অনেক আড্ডা দিয়েছি। আমরা তো একই এলাকার। আমি আপনার সবকিছুই জানি। আপনি কেন গান ছেড়ে দিলেন? গান না ছাড়লে এ ধরনের সমস্যায় পড়তেন না।’  

তিনি আরো বলেন, ‘মামলাটি করা হয়েছে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে। জামিন দিলে আইনের কিছু জটিলতা আছে। আমার এ মামলায় জামিন দেওয়ার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা আছে।’

কারাগারে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের আসিফ বলেন, ‘মামলাটি আমার আগে করা উচিত ছিল। শফিক তুহিন মিথ্যাবাদী। মামলায় আমি ভীতু নই। আইনি গতিতে মামলা চালিয়ে যাব। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। মামলায় আমি খালাস পাব।’

প্রসঙ্গত, শিল্পী ও সুরকার শফিক তুহিনের দায়ের করা মামলায় আসিফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

তুহিনের দায়ের করা মামলায় আসিফ ছাড়াও আরো চার-পাঁচজন অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে শফিক তুহিন অভিযোগ করেন, গত ১ জুন রাত ৯টার দিকে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ‘সার্চলাইট’ নামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, আসিফ আকবর অনুমতি ছাড়াই তার সংগীতকর্মসহ অন্যান্য গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীর ৬১৭টি গান সবার অজান্তে বিক্রি করেন।

অভিযোগে আরো বলা হয়, আসিফ আকবর আর্ব এন্টারটেইনমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে গানগুলো ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে ট্রু-টিউন, ওয়াপ-২, রিংটোন, পিআরবিটি, ফুলট্রেক, ওয়াল পেপার, অ্যানিমেশন, থ্রি-জি কন্টেন্ট ইত্যাদি হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যবহার করে অসাধুভাবে ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন।

পরে ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শফিক তুহিন গত ২ জুন রাত ২টা ২২ মিনিটে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে অনুমোদন ছাড়া গান বিক্রির এ ঘটনা উল্লেখ করে একটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টের নিচে আসিফ আকবর নিজের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে অশালীন মন্তব্য করেন এবং হুমকি দেন।

মামলার এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, পরের দিন রাত ৯টা ৫৯ মিনিটে আসিফ আকবর তার প্রায় ৩২ লাখ লাইকার সমৃদ্ধ ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন। ৫৪ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড লাইভ ভিডিওর ২২ মিনিট থেকে তার বিরুদ্ধে অবমাননাকর, অশালীন ও মিথ্যা-বানোয়াট বক্তব্য দেন।

ভিডিওতে আসিফ আকবর শফিক তুহিনকে শায়েস্তা করবেন—এ কথা বলার পাশাপাশি ভক্তদের উদ্দেশে বলেন, তাকে যেখানেই পাবেন, সেখানেই প্রতিহত করবেন। এই নির্দেশনা পেয়ে আসিফ আকবরের ভক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে হত্যার হুমকি দেয়।

মামলায় আরো বলা হয়, আসিফ আকবরের এই বক্তব্য লাখ লাখ মানুষ দেখেছে। তিনি উসকানি দিয়েছেন। এতে তার (শফিক তুহিন) মানহানি হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত