#মি টু আন্দোলন ভারতে প্রবল ঝড় তুলেছে। অভিনেতা অলোক নাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে লেখিকা-পরিচালিকা বিনতা নন্দার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন তিনি। মামলায় মানহানির ক্ষতিপূরণ চাইলেন তিনি মাত্র ১ টাকা।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, অলোকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন বিনতা। অন্ধেরীর মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে অলোক এবং তার স্ত্রী আশু জানিয়েছেন, প্রচার পাওয়ার উদ্দেশে ‘#মিটু’ আন্দোলনকে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিনতার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হোক।

অলোকের আইনজীবী অশোক সারোগি একটি চ্যানেলকে বলেন, ‘আমরা টাকাপয়সা চাই না। মাত্র ১ টাকা ক্ষতিপূরণ চাইব।’

এদিকে, একাধিক ছবিতে অলোকের সহশিল্পী হিমানী শিবপুরী বলেছেন, ‘অলোক যেন ডক্টর জেকিল এবং মিস্টার হাইড। দিনের বেলায় শুটিংয়ের সময়ে স্বাভাবিক। মদ খেলেই পাল্টে যান।’

যৌন হেনস্থার মামলায় নানা পাটেকর, গণেশ আচার্য-সহ চার জনের নার্কো অ্যানালিসিস, ব্রেন ম্যাপিং ও লাই ডিটেক্টর টেস্টের আর্জি জানিয়ে ওশিওয়াড়া থানায় আর্জি জানিয়েছেন অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত।

এদিকে, স্রোতের কিছুটা উল্টো পথে হেঁটেছেন সুজান খান এবং রিচা দুবে। প্রথম জন হৃতিক রোশনের সাবেক স্ত্রী, দ্বিতীয় জনের সাবেক স্বামী পরিচালক বিকাশ বহেল। যার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন কঙ্গনা রানাওয়াত। বিকাশের সঙ্গে কাজ করা নিয়ে ইতিমধ্যেই আপত্তি জানিয়েছেন হৃতিক।

কিন্তু সুজান একটি অনুষ্ঠানে ‘#মিটু’ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, এর মধ্যে অনেক ভণ্ডামি, মিথ্যা অভিযোগ আর পাগলামি রয়েছে। সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহার করা অনুচিত। আইনি তথ্যপ্রমাণ ছাড়া কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা ঠিক নয়।’

রিচা আবার বিকাশের বিরুদ্ধে কঙ্গনার অভিযোগের ‘খামতিগুলো’ টুইটারে তালিকা করে সাজিয়ে দিয়েছেন। তার বক্তব্য, ২০১৫ সালে (‘কুইন’ তৈরির পরে) নীনা গুপ্তর মেয়ে মাসাবার বিয়েতে কঙ্গনা ও বিকাশ একসঙ্গে নেচেছিলেন। কঙ্গনা কেন এক জন ‘নোংরা’ লোকের সঙ্গে নাচলেন? কেন তিনি আগে মুখ খোলেননি? বিকাশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ মেসেজ চালাচালি চলত কঙ্গনার। রিচার প্রশ্ন, ‘লোকটা ভাল কাজ করে বলেই নিজের স্বার্থে কেন তার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে যাব?’

যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত পরিচালক সাজিদ খান এবং নানা পাটেকর সরে দাঁড়ানোর পরে নতুন পরিচালকের দায়িত্বে ফের শুটিং শুরু হচ্ছে ‘হাউসফুল-৪’ ছবির। পরিচালক ফারহাদ সমজি ‘হাউসফুল-৩’-এর দুই পরিচালকের অন্যতম ছিলেন। সাজিদ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে অভিনেত্রী তথা ভারতের বিজেপি সাংসদ কিরণ খের বলেন, ‘আমি তাকে বহু দিন চিনি। আমার সঙ্গে এমন কিছু ঘটেনি। সাজিদ এবং সংশ্লিষ্ট নারীই বলতে পারবেন অভিযোগ সত্যি কি না।’ কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থা রুখতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ‘বিশাখা নির্দেশিকা’ প্রয়োগে জোর দেন কিরণ। মন্ত্রী এম জে আকবরের কথা উঠলে তিনি বলেন, ‘মেনকা গান্ধী অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠনের কথা বলেছেন। আশা করা যায়, দু’পক্ষই নিজেদের বক্তব্য জানাতে পারবে।’

নারীদের প্রাপ্য সম্মান দেওয়ার পক্ষে মুখ খুলেছেন অভিনেতা ভিকি কৌশল, মালাইকা অরোরা এবং চিত্রাঙ্গদা সিং। সাজিদের সঙ্গে একাধিক ছবিতে কাজ করা মালাইকা বলেন, ‘একসঙ্গে কাজ করেছি বলেই কাউকে নিশানা করতে হবে, এমন কোনও কথা নেই। আমি নিশ্চিত, আইন নিজের পথে চলবে।’ কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার প্রতিবাদে খোলা চিঠি লিখেছেন বিজ্ঞাপন, সংবাদমাধ্যম ও ডিজাইনিং জগতের শীর্ষ কর্ত্রীরা। এই জগতের পরিচিত মুখ সুহেল শেঠের বিরুদ্ধে সম্প্রতি যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেছিলেন অন্তত চার জন নারী।