বিনোদন ডেস্ক

২২ মে, ২০১৯ ১৫:০১

তাজিন আহমেদের চলে যাওয়ার এক বছর

দেখতে দেখতে চলে গেলো একটি বছর। ২০১৮ সালের (২২ মে) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পৃথিবী থেকে বিদায় নেন সদা হাস্যোজ্জ্বল ছোটপর্দার নন্দিত অভিনেত্রী তাজিন আহমেদ। বুধবার তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী।

গত বছরের ২২ মে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এদিন উত্তরায় নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে স্থানীয় রিজেন্ট হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় ওইদিনই বিকাল সাড়ে চারটার দিকে তার মৃত্যু হয়। পরের দিন জানাজা শেষে তাজিনকে বনানী কবরস্থানে বাবা কামাল উদ্দিন আহমেদের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।

অভিনেত্রী হিসেবে দেশের মানুষের কাছে পরিচিত হলেও তিনি সাংবাদিকতা ও উপস্থাপক হিসেবেও তার দক্ষতার পরিচয় রেখেছেন।

বহু গুণের অধিকারী এই কৃতি মানুষটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর শেষ করে সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলেন দীর্ঘদিন। কাজ করেছেন ভোরের কাগজ, প্রথম আলোসহ বিভিন্ন পত্রিকায়। কলাম লিখেছেন আনন্দ ভুবন ম্যাগাজিনে।

এক পর্যায় সাংবাদিকতা ছেড়ে যুক্ত হন কর্পোরেট জীবনে। মার্কেন্টাইল ব্যাংকে পাবলিক রিলেশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তাজিনের মা দিলারা জলির প্রোডাকশন হাউজ ছিল। মায়ের কাজেও সাহায্য করেছেন তিনি। মায়ের হাত ধরেই অভিনয় জগতে প্রবেশ। সাবলীল অভিনয়ের কারণে দ্রুত জায়গা করে নেন দর্শক হৃদয়ে।

জন্ম: তাজিন আহমেদের জন্ম হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ৩০ জুলাই নোয়াখালীতে। তিনি পড়াশোনা করেন ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে। ১৯৯২ সালে এই কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পাস করেন। পরে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণসংযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করেন।

অভিনয় ও উপস্থাপনা: ১৯৯৬ সালে ‘শেষ দেখা শেষ নয়’ নাটকের মাধ্যমে তাজিন আহমেদের অভিনয় যাত্রা শুরু হয়েছিল। এরপর তিনি অসংখ্য নাটক ও টেলিছবিতে কাজ করেছেন। তার অভিনীত ‘আঁধারে ধবল দৃপ্তি’ নাটকটি সে সময় বেশ সাড়া ফেলেছিল। এছাড়া হুমায়ূন আহমেদের ‘নীলচুড়ি’ নাটকেও তার অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়েছিল। অভিনয়ে আসার আগে ১৯৯১ সালে বিটিভিতে প্রচারিত ‘চেতনা’ নামের একটি অনুষ্ঠান দিয়ে তিনি উপস্থাপনা শুরু করেন।

সাংবাদিকতা: নাট্যাঙ্গণে কাজ করার পাশাপাশি বেশ কয়েক বছর তাজিন আহমেদ সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলেন। ১৯৯৪ সালে তিনি ‘দৈনিক ভোরের কাগজ’-এ যোগ দিয়েছিলেন। এরপর ১৯৯৭ সালে ‘দৈনিক প্রথম আলো’তে যোগ দেন। ১৯৯৮ সালে তিনি এই পত্রিকাটির নিজস্ব প্রতিবেদক হন। কিছুদিন ‘আনন্দ ভুবন’ পত্রিকায় কলাম লেখক হিসেবেও কাজ করেন। পরবর্তীতে সাংবাদিকতা ছেড়ে ২০০২ সালে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের জনসংযোগ কর্মকর্তার দায়িত্ব সামলান তাজিন আহমেদ।

এসবের বাইরে লেখালেখির কাজও করতেন বহু প্রতিভাধর এ তারকা। তাজিনের লেখা গল্পের নাটকগুলোর মধ্যে ‘যাতক’, ‘যোগফল’, ‘বৃদ্ধাশ্রম’, ‘অনুর একদিন’, ‘এক আকাশের তারা’ ও সম্পর্ক’ উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে ‘যাতক’ ও যোগফল’ নাটক দুটি তিনি পরিচালনাও করেন। অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৩ সালে ‘কথার কথা’ নাটকটির জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে ৩২তম বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন তাজিন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত