সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ মে, ২০১৬ ২২:৪৫

বজ্রপাত থেকে বাঁচতে করণীয়

সারাদেশে এ বছর বজ্রপাতে  সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে। গত দুই দিনেই অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন বজ্রপাতে।

বৃষ্টি মৌসুম শুরু থেকে শতাধিক মানুষ মারা যান বজ্রপাতে। যার মধ্যে মার্চ মাস থেকে মে পর্যন্ত কেবল সিলেট অঞ্চলেই অন্তত ৩০ জন নিহত  হবার খবর পাওয়া গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন  পৃথিবীর উপরিতলের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাওয়ায় বজ্রপাতের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে। পৃথিবীর তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেলে বজ্রপাতের ঝুঁকি ১০ শতাংশ বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে বজ্রপাত থেকে রক্ষার কৌশল:

১।  বজ্রপাতের সময় গাছের নিচে আশ্রয় না নেওয়াই ভালো। উচ্চশব্দের কারণে কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে। তাই সম্ভব হলে কানে হাত দিয়ে মাটিতে বসে পড়লে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

২।  ধাতব বস্তু (আংটি, চাবি, কাস্তে, কোদাল, মোবাইল) থাকে এবং তা ৬০ ফুট দূরে রাখতে পারল ঝুঁকি কমে যায় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।  বজ্রপাত আশপাশের ধাতব পদার্থকে আকর্ষিত করে। সে কারণে কারও হাতে কাস্তে কোদাল থাকলে তিনি আক্রান্ত হতে পারেন। তাই এগুলো সরিয়ে রাখার ভালো।

বজ্রপাত কী:

বাতাসে নিহীত শক্তির তারতম্যের কারণে মেঘে মেঘে ঘর্ষণের ফলে স্থির বিদ্যুৎ মাত্রাতিরিক্ত জমে গেলে নিকটস্থ মেঘ বা ভূমির দিকে ছুটে আসে। এর তাপমাত্রা থাকে ৪০ হাজার ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।

ঘণ্টায় প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার কিলোমিটার গতিবেগ থাকে বজ্রপাতে। দৈর্ঘ্যে ১০০ মিটার থেকে ৮ কিলোমিটার, ব্যাসার্ধে ১০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত। এতে ১০ কিলোমিটার থেকে ১ কোটি পর্যন্ত ভোল্টেজ থাকে।

পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য বজ্রপাত প্রাকৃতিক চার্জ হিসেবে কাজ করে। বিশ্বে প্রতি সেকেন্ডে ৪০ থেকে ১০০ টি বজ্রপাত ঘটে।

বজ্রপাতের ট্রাজেডি:

বজ্রপাতে বড় ট্রাজেডি ঘটেছে ১৭৬৯ সালে। বজ্রপাতে ইতালির একটি চার্চে থাকা গান পাউডার বিস্ফোরিত হয়। এতে ৩ হাজার মানুষ নিহত হন। বাংলাদেশে ঘটেছে ২০১২ সালে, একটি মসজিদে তারাবির নামাজের সময় ৯ মুসল্লি প্রাণ হারান।

২০১৪ সালে সারা দেশে প্রায় শতাধিক লোক প্রাণ হারিয়েছে। ২০১৩ সালে ১০ জেলায় একদিনে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। চলতি বছরে বৃহস্পতিবার (১২ মে) একদিনে ঝরে গেছে ৩৭টি তাজা প্রাণ। শুক্রবার (১৩ মে) এ সংখ্যা ছিলো ৪ জনের।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত