অরণ্য রণি

১৮ জুন, ২০১৬ ১৮:১১

আখনি ছাড়া যেনো অপূর্ণই থেকে যায় ইফতার!

আখনি সিলেটের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার। ইফতারের অনেকটা আবশ্যিক আইটেম হয়ে ওঠেছে আখনি।

নানান স্বাদের বাহারি ইফতারি নিয়ে রমজানে জমে উঠেছে সিলেট মহানগরীর ইফতারির বাজার। তবে সিলেটের রোজাদারদের ইফতার আখনি ছাড়া ছাড়া যেনো অপূর্ণই থেকে যায়। রমজান মাসের ইফতারে সিলেটের সর্বত্রই এ আইটেম রান্না করা হয়। ছোট-বড় সব হোটেলেই তৈরি করা হয় সিলেটের ঐতিহ্যবাহী খাবার আখনি।

অনেকটা বিরিয়ানির মতো হলেও আখনি মসলাবহুল খাবার। খেতে কিছুটা ঝাঁঝালোও। আখনি তৈরিতে সাধারণত সুগন্ধি চাল ব্যবহৃত হয়। তাছাড়াও কালিজিরা ও চিনিগুড়া চাল দিয়েও আখনি তৈরি করা হয়। সাথে মসলা হিসেবে থাকে পিঁয়াজ, রসুন, আদা, কাঁচামরিচ, ডালচিনি, এলাচ, মটরশুঁটি ইত্যাদি।

ইফতারের সময় সিলেটবাসীর 'আখনি' না হলে যেন চলেই না। আখনি এখন রীতিমতো ইফতারের আবশ্যিক আইটেম হয়ে উঠেছে। সিলেটে যেকোনো ইফতারের অনুষ্ঠানে অবশ্যই আখনি থাকা চাই!

নগরীর সব রেস্টুরেন্টেও তাই ইফতারের প্রধান আইটেম আখনি। এই আইটেম সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় বলেও জানিয়েছেন বিক্রেতারা। এ ছাড়া রমজান মাসজুড়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে ইফতার পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রধান পদ হিসেবে পাঠানো হয় আখনি।

পোলাও চাল ও গরুর মাংস দিয়েই মূলত আখনি তৈরি করা হয়। এছাড়া খাসির মাংস ও মোরগের মাংস দিয়েও আখনি বানানো হয়। মাংস ও মানভেদে আখনি প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে সিলেটের হোটেল, রেস্তোরাগুলোতে।

নগরীর বিভিন্ন হোটেল ঘোরে দেখা যায়, মানুষের চাহিদা ও বিক্রির শীর্ষে আখনি।

নগরীর বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় দুপুর থেকেই চালু হয়ে যায় ইফতারির বাজার। সিলেটের বাইরে ইফতারিতে ছোলা, পিঁয়াজির সঙ্গে মুড়ি আবশ্যক অনুষঙ্গ হলেও, সিলেটীদের কাছে এটি একেবারে অচল। আখনি কিংবা খিচুড়ি ছাড়া ইফতারের কথা চিন্তাই করা যায় না। তার সঙ্গে ছোলা ভুনা থাকবেই।

সিলেটে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে মসজিদ, মক্তব, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় ইফতারি পাঠানোর রেওয়াজ প্রচলিত রয়েছে। সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা ও ব্যক্তিগতভাবে সরবরাহ করা ইফতার করেন সাধারণ মুসল্লি থেকে ভিক্ষুক পর্যন্ত সবাই একই সারিতে বসে। সেখানেও আখনি সরবরাহ করা হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত