জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ থেকে

১৪ জুলাই, ২০১৬ ১৩:৪৯

উদ্যোগী আর অদম্য বকুলের বদলে যাওয়ার গল্প

নিজ কার্যালয়ে মহসিন আলী বকুল

কেউই এক লাফ আকাশ ছুঁতে পারে না। তার জন্য প্রয়োজন হয় সততা, পরিশ্রম, ধৈর্য ও একাগ্রতা। সেটাই দেখালেন ঝিনাইদহের মহসিন আলী বকুল।

শুরু সেই ১৯৯২ সালে মাত্র ১০,০০০ টাকা ও অন্যের জমি লিজ নিয়ে। আর ফেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বকুলের। বর্তমানে ১২০ বিঘা জমির উপর গড়ে তুলেছেন বকুল মৎস্য খামার। তাঁর মৎস্য খামারেই এখন কয়েক’শ শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন। আর বকুলের এই পরিবর্তনে অনেকেই এখন মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

এলাকাবাসী জানান, ঝিনাইদহ শহর থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে কোটচাঁদপর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম পাঁচলিয়ায় অনাবাদী জমিতে মাছ চাষ করে ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন মহসিন আলী বকুল। আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন বকুল। কিন্তু চাকরির জন্য ধর্না না দিয়ে ১৯৯০ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে মাছ, গরু ও মুরগী পালনের উপর তিনটি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

এরপর ১০,০০০ টাকা ও মাত্র ৫ বিঘা জমি লিজ নেন। সেখানে মৎস্য চাষ করে পান দারুন সাফল্য। মৎস্য খামারের পাশাপাশি ২০১২ সালে পুকুর পাড়ে তিনি গড়ে তুলেন বকুল ডেইরি ফার্ম। তারপর পর্যায়ক্রমে ২০১৪ সালে বকুল অটো রাইস মিল এবং ২০১৫ সালে বিনোদন কেন্দ্র বকুল সিটি পার্ক গড়ে তোলেন। এ সকল প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কর্মসংস্থান হয়েছে এলাকার ৪৫০ জন যুবকের। এখন রেষ্টহাউজ, ক্যান্টিন, চিড়িয়াখানাসহ সবই আছে এখানে।

দর্শনার্থীরা জানান, তাকে দেখে অনেকেই ঝুঁকে পড়েছেন এখন মাছ চাষে। এসব বেকার যুবকদের নিজ উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারও একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবে এমনটিই এখন আশা।

সিটি পার্কের চেয়ারম্যান বকুল ও বকুলের স্ত্রী শামীম আরা হ্যাপী এই প্রতিবেদককে বলেন, বকুল প্রথমে ১০ হাজার টাকা দিয়ে ৫ বিঘা জমি লিজ নিয়ে পুকুর খনন করে মাছ চাষ শুরু করেন। বর্তমানে ১২০ বিঘা জমির উপরে ২০টি পুকুর রয়েছে বকুলের।

মহসিন আলী বকুল জানান, তার খামার এলাকায় ব্যাপক সুনাম অর্জন করলেও খামার পরিচালনা করতে নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। রাস্তা মেরামত না করায় এখানকার মাছ বাজারজাত করতে অসুবিধায় পড়তে হয় প্রতিনিয়ত। অনেক সময় মাছ পঁচেও যায়।

লেখাপড়া শিখে চাকুরীর দিকে না ঝুঁকে মাছ চাষ করে মহসিন আলী বকুল যা করেছেন তা শুধু ঝিনাইদহে নয়, সারা বাংলাদেশের জন্য মডেল হয়ে থাকবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত