নিজস্ব প্রতিবেদক

০৬ অক্টোবর, ২০১৬ ০১:৪৮

সঙ্গের অনুষঙ্গ ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন

জাগ্রত বিবেকে সময়কে ধারণ করে এগিয়ে চলাই একজন সংগঠকদের কাজ। এগিয়ে যাওয়ার এ প্রয়াসের বিচিত্র বিচরণে কারো পদচিহ্ন অনন্য হয়ে উঠে। সময় ও সমাজের জগদ্দল পাথর সরাতে কেউ নিজেই নড়ে। অতপর নাড়িয়ে যায় সমাজ ও প্রতিবেশকে। ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন এমনই এক সময়ের সক্রিয় অনুসংগঠকের নাম।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিলেট শহরের রেইনবো গেস্ট হাউস মিলনায়তন অনন্য হয়ে উঠেছিল ব্যতিক্রমী বিচরণে। সেই ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন এখন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারায় থেকেও প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক, প্রথম আলোর দাপুটে সাংবাদিক। তার লেখনী এবং উচ্চারণে সদা থাকে দেশের উচ্ছাস। এক সপ্তাহের জন্য চেনা শহরে ফিরেছেন খোকন।

সুহৃদ, বন্ধু খন্দকার শিপার আহমেদ, এডভোকেট ই. ইউ শহীদুল ইসলাম শাহীন, এবং অনুজ আব্দুল করিম কিমের দ্রুত আয়োজনে ছিল অনানুষ্ঠানিক আড্ডা। আড্ডা আর আড্ডা থাকেনি শেষপর্যন্ত। চলমান সময়ের খ্যাতিমান ফটো সাংবাদিক আনিস মাহমুদের উঠানো ছবিতে ঝুলানো হয় ব্যানার। চির সবুজ ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন নিজের ছবি দেখেই বিভ্রান্তে পড়তে হয়।

সন্ধ্যা নামে। বাইরের আলো আঁধারের খেলা। নিয়নের বাতি উজ্জল হয়। বাদামী রং ধরে। ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা সেকান্দার আলী এসে পুরনো কমরেডের সাথে যোগ দেন। খবর দেন, বাম সংগঠন গুলোর আরো ভাঙ্গনের খবর। বাম হা-পিত্যেসের মধ্যে আসেন বদরুদ্দোজা বদর। ক্রিড়া সাংবাদিক বদরের কাছে বসলেন ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন। কানে কানে কথা হয় কিছুক্ষণ। এরপর অট্টহাসি। খোকনের পুরনো প্রশ্ন হয়তো নতুন করে বদরুদ্দোজা বদরকে, বলেনতো কোন খেলায় কোন পক্ষই হারে না?

খ্যাতিমান ফটো সাংবাদিক আতাউর রহমান আতা এসে পৌঁছেন প্রাণের টানে। আড্ডায় জানালেন, তিন দশকের সংলগ্নতার কথা। রাত বিরাতে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার ইঙ্গিত। মধ্যরাতে খোকনদের নেয়া বহু সিদ্ধান্তের নিরব স্বাক্ষী হয়ে থাকার কথা।  

আড্ডায় আসেন অধ্যক্ষ ড. আব্দুল ফতেহ ফাত্তাহ। বন্ধু ফাত্তাহকে দেখে হয়তো আফসোস বাড়ে খোকনের। ‘ডঃ’ হওয়াটা কেন তার বাকী থাকল! একই কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল রফিকুল ইসলাম এসে মনে করিয়ে দিলেন তাদের দ্রোহ দিনের কথা। ইব্রাহীম চৌধুরী খোকনের অনুসারী হওয়ার কথা।

বেদনান্দ ভট্টাচার্য, নামেই যার পরিচয়। কমিউনিস্ট আন্দোলনের নেতা। কমরেডীয় অভিবাদন আর আলিঙ্গনে হারিয়ে যাওয়া কিছু মুহুর্ত। বেদনান্দ ভট্টাচার্য দেখে নিচ্ছিলেন, কাকে বেশি তরুণ দেখাচ্ছে। নিজেকে না ইব্রাহীম চৌধুরী খোকনকে।

আড্ডা হঠাৎ আনুষ্ঠানিকতায় রূপ নেয়। সেই চিরচেনা উচ্ছলতা। নিজেই সভাপতি, নিজেই উপস্থাপক, নিজেই সব চাঞ্চল্যের সক্রিয়জন। তাকে মাইক্রোফন হাতে নিতে হয় না। আহ্বান আসে ধীরেন সিংহকে কিছু বলার জন্য। সাম্যবাদী দলের কেন্দ্রীয় পলিটব্যুরোর সদস্য ধীরেন সিংহ সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সাথে নিউইয়র্ক সফর করে এসেছেন। বঞ্চিত মানুষের নেতা ধীরেন সিংহ উৎফুল্লের সাথে জানালেন, পুঁজিবাদের দেশ দেখে আসার নির্মম অভিজ্ঞতার কথা। জানালেন, ইব্রাহীম চৌধুরী খোকনের সাথে বসা টিভি টকশোর তথ্য। নিউইয়র্ক সফর নাকি তার অপূর্ণ থেকে যেতো কমরেড খোকন কে না পেলে।

আসলেন অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম। গোঁফের আড়ালে নুয়ে পড়া তারুণ্যের ছাপ। জড়িয়ে ধরলেন পুরনো সুহৃদকে । এ যেন বলার চেয়ে না বলে প্রকাশের বিমূর্ততা। কোত্থেকে ছুটে আসলেন নাজরা চৌধুরী। নিজেই আমেরিকা প্রবাসী বহুদিন। রাজনৈতিক পরিবারের ডা. নাজরা চৌধুরী নিজ  ভূমিতে পুরনো ভাইকে জড়িয়ে ধরলেন। দুই স্বদেশ ছাড়া চেনাজনের ফের সাক্ষাতের নির্মল উষ্ণতা।

মাইক্রোফোন চলে যায় বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হকের হাতে। সাদা দাড়ির ফাকে জ্বলজ্বল করা রক্ত চোখ। ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন মনে করিয়ে দেন তাদের কৈশোরে দেখা রফিকুল হককে। রফিকুল হক বলেন, বাংলাদেশ হওয়ার আগে আমরা জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছি। অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল স্বদেশের স্বপ্ন নিয়ে কাজ করার জোরালো উচ্চারণ করেন অনুজ যোদ্ধা খোকন'কে নিয়ে অনানুষ্ঠানিক আড্ডায় দেয়া তাঁর বক্তব্যে।

সিলেটে শিক্ষাবিদ বিগ্রেডিয়ার (অব:) জুবায়ের সিদ্দিকী দাঁড়ালেন । স্নেহভরা কন্ঠে জানালেন, দেশ-বিদেশে তাঁর অনুজসম খোকনের নানা তৎপরতা এবং নিজের সংলগ্নতার কথা।

গুরুর শীষ্য আব্দুল করিম কিম জানাতে ভুললেন না, খোকন তার রক্ত সম্পর্কীয় অগ্রজ। কেমন করে সিলেটের নাগরিক আন্দোলনে ইব্রাহীম চৌধুরীর মাধ্যমে তার জড়িয়ে পড়া । জড়িয়ে পড়ে হারিয়ে যাওয়ার গল্প কিম বলছেন। শুনছেন খোকন। এ এক দারুণ না করুণ দৃশ্য, টাহর করা মুশকিল। কিম জানালেন ‘মানববন্ধন’ নামক নাগরিক আন্দোলনের শুরুর সময়টার কথা। জানালেন, ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন-এর বুদ্ধিতেই সিলেটের প্রথম মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করা হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ২৪ মার্চ । বলেছিলেন, কর্মসুচীর ব্যানারের জন্য টাকা চাইলে খোকন বলেছলেন ‘বুদ্ধি এবং অর্থ দুটোই এক জায়গায় পাওয়া যাবে না । নিতে হবে একটি’। হলভর্তি অট্টহাসি আর করতালিতে বুঝা গেল, এমন কথা অনেকেই শুনেছেন খোকনের কাছ থেকে নানা সময়ে।

এসেছেন ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা আবুল হোসেন। কিছু বলবেন, পুরনো কমরেডকে। জানতে চাচ্ছিলেন, টেক্সটাইল শ্রমিকদের মধ্যে কারো খোঁজ কি এখন আর জানা আছে তার। লন্ডন প্রবাসী কমরেড ইসহাক কাজলের শরীরটা ভালো নেই, জানালেন বিমর্ষ বদনে।

মাইক্রোফোন ততক্ষনে শামীম সিদ্দিকীর হাতে। ইব্রাহীম এবং শামীম দুই নাম একদা একসাথে উচ্চারিত হতো এই শহরে দীর্ঘদিন। কে বলবে কার কথা। শুনবেই বা কোনজন। নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া শামীম জানালেন, শহরে থেকেও অনেকের সাথে দেখা হলো বিশ বছর পর। সতীর্থের যুগল পদযাত্রা থেকে জুটিবদ্ধ বন্ধুত্বের বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আর্তিটা ফুটে উঠলো তার কন্ঠে। একদা ডাক সাইটে সাংবাদিক রাজনীতিবিদ শামীম বলছিলেন।

খোকনের ছোট চোখ ততক্ষণে মুজে আসছিল একেবারেই। কি ছিল তখনকার ভাবনায়, তা অবশ্য জানা গেল না। মাইক্রোফোন চলে যায় কর্মে তরুণ, বয়সে প্রবীণ হয়ে পড়া সাংবাদিক কামকামুর রাজ্জাক রুনুর হাতে। জানালেন তাদের বন্ধুত্বের শুরুর কথা। এখনো চলমান ভাবের নানা অভিধা।  ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন বন্ধু স্ত্রী শেলী চৌধুরীর রান্নার খবরটি জানিয়ে হাটে হাড়ি ভাঙলেন। এরমধ্যে রুনু উকি দিচ্ছিলেন বাইরের দিকে। হয়তো ভাবছিলেন, বন্ধু খোকনের প্রাক্তন প্রেমিকাদের কেউ এসে পড়লো কি না। শামীম সিদ্দিকী ইতিউতি করছিলেন। দেখছিলেন নিজেদের ঘুরাঘুরির সময়ের পুরনো পাওনাদারদের কেউ এসে হাজির  হলো কি না।

প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী কথা বললেন। সতীর্থের প্রশংসায় উচ্চকিত সংবাদের ফেরিওয়ালাদের একে অন্যরা। উত্তরপূর্ব সম্পাদক আজিজ আহমদ সেলিম কর্মে প্রবীণ হয়েছেন বেশ আগেই। জানালেন ইব্রাহীম চৌধুরী খোকনের গল্প কবিতা লেখার সময়ের কথা। সেলিম বলছিলেন ঐসব গল্পে, কবিতায় ছিল জীবনমুখী বার্তা। ছিল ভালবাসার কথা। দায়বদ্ধতার কথা।

হাসছিলেন শামীম সিদ্দিকী। অবশ্য, মুখ ফসকে বলেন নি, কোন প্রেমিকা নিয়ে লেখা খোকনের কোন গল্প, কোন কবিতা- সবই তার জানা।

বহু কাজের ঘটক, অনুঘটক এবং সংঘঠক এবারে খুঁজছিলেন তার এনজিও সমাজের সতীর্থদের। উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠির উন্নয়ন উত্তোরণের নানা হিসেব কষে প্রকল্প প্রস্তাব আর দাতা সংস্থা নিয়ে ব্যস্ত এনজিওরা। ব্লাস্টের এডভোকেট ইরফানুজ্জামান চৌধুরী জানাতে চাইলেন দরিদ্রজনের জন্য ন্যায় বিচার শুরুর কাজটিতে খোকনের সংলগ্নতার কথা।

দাঁড়ালেন এডভোকেট ইব্রাহীম আলী। নিজেদের নামের সাদৃশ্যের কথা জানালেন। সিলেটের রোটারী ক্লাব, আইন পেশা, পরিবার সবকিছুর সাথে অনুজ ইব্রাহীম চৌধুরী খোকনের সংলগ্নতার কথা জানালেন। জড়িয়ে পড়ার কথা, একসাথে চলার কথা জানালেন। মানবাধিকার নিয়ে ভাবিত এ আইনজীবি জানালেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাদের যৌথ সভার কথা। ‘ফোর্স ম্যারিজ’ বন্ধে যুক্তরাজ্যের বর্তমান প্রণীত আইনে তাদের সংলগ্নতার কথা জানালেন। এসব কাজে আলী ইব্রাহিম যুক্তরাজ্যে গেলেন। চৌধুরী ইব্রাহিম ছুটে এলেন নিউইয়র্ক থেকে লন্ডনে। সব শেষে জানালেন, খোকন তার পরিবারের সদস্যের মতো।
পেছন থেকে কেউ টেপ্পনি কাটলেন ‘ঈশ্বর- জানি তুমি নিরাকার/খোকন আসলে তুমি কার ?’

ঋদ্ধ করা সব বক্তৃতায় ব্যক্তিবন্ধনার চেয়ে উঠে আসে সমসাময়িকতা। উচ্চমার্গের সব ভাবালুতা। কথা বলতে দাঁড়ান খোকনের সাংস্কৃতিক অঙ্গণের সহযোদ্ধা এনামূল মুনীর। কোত্থেকে শুরু করবেন, তা হাতড়ে ফিরছিলেন এনাম। এক ফাঁকে বলে ফেললেন, যেখানেই খোকন ছিলেন আছেন তার চাঞ্চল্যের ঢেউ লেগেছে সর্বত্র। জানালেন তাদের নানা পথ চলা, বেতারের, মঞ্চের প্রাদপ্রদীপের সময়কালের কথা।

উঠে আসলেন ড. ময়নুল ইসলাম। এক সময়ের ডাকসাইটে চিকিৎসক নেতা জানালেন অকালে হারিয়ে যাওয়া কমরেড ম আ মুক্তাদিরের সাথে নিজের অনুজসম ইব্রাহীম চৌধুরী খোকনের একাগ্র পথ চলার কথা।

ঝেঁকে বসা সন্ধ্যা অনেক আগেই হারিয়ে যায়। বাইরের ঝিঝি পোকারাও ক্লান্ত ততক্ষণে। আঁধার ভেদ করে কারো যেন ভোর হয়। সন্ধ্যায় ভোরের আলো খোঁজেন, জননেতা লোকমান আহমেদ। পরনে উজ্জল রঙের টি শার্ট। এসেই উজ্জল চিরচেনা কন্ঠে ঘোষণা দিলেন, খোকনের আলোয় তিনি আলোকিত। নিজের অনুজসম কমরেড বলে নয়, উপহার পেয়ে যান স্ত্রীর সূত্র ধরে। লোকমান আহমেদ মানেই আড্ডার দীর্ঘতা। নানা ব্যাখ্যা বিশ্লেষনে ভারী হাওয়া বক্তব্যের টইটুম্বুর। সঙ্গে আসলেন অবয়বে বদলে যাওয়া অম্বরীষ দত্ত। বোদ্ধাজনের গুরু হিসেবে পরিচিত অম্বরীষ দত্তকে দেখে বিভ্রমে পড়া লোকজন। খ্যাতিমান পুরুষ ড. জাফর ইকবালের গোঁফটি ঝুলছে আরেক বোদ্ধজনের অবয়বে। বললেন, খোকন তোমার লিখা ভাল হচ্ছে। জবাবে ইব্রাহীম চৌধুরী খোকনের অকৃত্রিম বিনয়, অম্বরীষ’দা আপনি পড়েন মনে রেখেই লিখতে হয় নানা পাঁচালী।

আসলেন আয়োজকদের একজন এড. শহীদুল ইসলাম শাহীন। তার নিত্যদিনের সাত সতের সামাল দিয়ে উপস্থিত হলেন বন্ধু সুহৃদ খোকনকে নিয়ে আড্ডার সমাপ্তি টানতে যেন। সঙ্গে আসলেন শিক্ষাবিদ আবু হেনা। দূরের জেলা থেকে ছুটে এসেছেন সাবেক চেয়ারম্যান ও ছাত্রনেতা মোহাম্মদ শাহজাহান সিরাজ। জানালেন, খোকন ভাইদের সতীর্থ হয়ে আজো কেমন করে মিশে আছেন জনতার ঢলে। আসলেন ছাড়াকার এডভোকেট দেলোয়ার হোসেন দিলু। জানালেন অগ্রজ খোকনের সাথে তার চাঞ্চল্যের পথচলা কখনো সতীর্থের, কখনো অনুসারীর। এডভোকেট নিজাম উদ্দিন সরকারী উকালতি রেখে এসে যোগ দিলেন আড্ডায়। পুরনো বন্ধুর সাথে দীর্ঘ আলিঙ্গণে আপ্লুত হলেন। যেন কত কালের কথা মুহূর্তে বলে ফেললেন নিরবে। এ যে হৃদয়ের যোগাযোগ!

আসা যাওয়ায় যোগ দিলেন, ফোনে যোগ দিলেন অনানুষ্ঠানিক আড্ডার এমন ব্যতিক্রম সম্মেলনে সাংবাদিক ইকরামুল কবির, উজ্জল মেহেদী,  সমরেন্দ্র দাস সমর, আ র ম রেনু, আলিম শাহ,  আব্দুল মুকিত অপি। যোগ দিলেন সমাজসেবী এম এ মান্নান, জিয়াউস শামস এলেন।পেশাজীবী আব্দুল্লাহ জায়েদ, অধ্যাপক আজাদ, বদরুল ইসলাম চৌধুরী। প্রয়াত কমরেড ম আ মুক্তাদির-এর অগ্রজ মহসিন চুন্নু, শিশু সংগঠক মাহবুবুজ্জামান, রাজনীতিবিদ এটিএম জেবুল, আনোয়ার হোসেন সুমন, হুমায়ুন কবির, সাবেক ছাত্রনেতা চিরসবুজ আলমগীর কুমকুম, নাট্য সংগঠক মিশফাক আহমদ মিশু, আনোয়ার হোসেন রণি,  ব্যাবসায়ী নেতা এনামূল কুদ্দুছ চৌধুরী, ক্রীড়া সংগঠক জয়দ্বীপ সুজক সহ অনেকেই। আড্ডায় যোগ দিতে না পেরে শোনা গেছে অনেকের হাপিত্যেশ । সঙ্গের অনুষঙ্গ ইব্রাহীম চৌধুরী খোকনের সতীর্থ অনুরাগিরাও নানা অনুষঙ্গ নিয়ে ব্যাস্ত থাকেন নিত্য দিন । নিতান্ত প্রলয় না হলে সেঁটে থাকেন নিজস্ব বলয়ে । এরা যে ব্রাত্তজন !

রাত মধ্যরাতের দিকে গড়ায়। চা চক্রের আড্ডা পরিণত হয় বিরিয়ানীর চক্রের আড্ডায়। খোকন ঘোষনা দিলেন বিরিয়ানী যার, এবারে মাইক্রোফেন তাঁর। বন্ধু ব্যবসায়ী খন্দকার শিপার আহমেদের সকৃতজ্ঞ আপ্যা,য়নে আড্ডা ভাঙ্গে।

নিজ অঙ্গন ছেড়ে যাওয়া এক সক্রিয় সংগঠকের বহু পরিচিতজনদের অভাবিত মিলন মেলা যেন আর শেষ হতে চায় না। ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন তার দায়বদ্ধতার কথা জানালেন। জানালেন, প্রতিজনকে নিয়ে তার আলাদা আলাদ অনেক গল্প, অনুগল্প আছে। জানালেন, এসব গল্প বলতে হবে, লিখতে হবে। কন্ঠ কিছুটা হলেও যেন বাষ্পরুদ্ধ হয়ে উঠল।

কেউ একজন দেখালেন পেছনের ব্যানার। ‘সঙ্গের অনুষঙ্গ ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন’ একাংশে বানান বিভ্রাট। খোকন অপলক তাঁকালেন কিছুক্ষন নিজের নামে লেখা ব্যানারটির দিকে। মুখ থেকে অস্ফূটে বেরিয়ে আসলো, আমাদের যাপিত জীবনটাও তো বিভ্রাটহীন এবং নির্ভূল দাবী করিনি কখনো।

আবেগ অনুভূতির এক বিমিশ্র অস্থিরতা এবং চাঞ্চল্যের মধ্যে মিলনায়তন ফাঁকা হতে থাকলো, রেশ থেকে গেলো অনেক কিছুরই। এ রেশ ছড়াবে আলোর দ্যুতি- এমন অনুভূতি নিয়েই ঘরে ফিরলেন জড়ো হওয়া সব পান্থজনরা। 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত