নিউজ ডেস্ক

০৯ ফেব্রুয়ারি , ২০১৫ ১৫:৫৪

ঝিঁঝিঁপোকার কাছ থেকে পাওয়া যাবে ভূমিকম্পের আভাস

ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে প্রথম সারির একটি হল মেক্সিকো। ভূমিকম্পের আগামবার্তা পাওয়ার জন্য ১৯৯১ সালে মেক্সিকোতে চালু করা হয় স্যাসমেক্স ফ্যাসিলিটি যা ভূগর্ভে স্থাপন করা বিভিন্ন সেন্সর থেকে ডেটা সংগ্রহ করে ভূমিকম্পের আগামবার্তা প্রদান করবে।

চড়া মূল্যের কারণে অধিকাংশ মানুষেরই নাগালের বাইরে এই প্রযুক্তি। তবে সম্প্রতি আন্দ্রেজ মেইরা নামক একজন প্রযুক্তিবিদ সর্বসাধারণের হাতে এই সেবা তুলে দেওয়ার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছেন।

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেইরা জানিয়েছেন স্থানীয় কিছু প্রকৌশলী এবং সিলিকন ভ্যালিভিত্তিক বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মিলে ‘স্যাসমেক্স’ প্রযুক্তি জনসাধারণের জন্য নিয়ে আশা সম্ভব।

মেক্সিকো সিটিতে ১৯৮৫ সালে ৮.১ মাত্রার ভূমিকম্পে ১০ হাজার লোক মারা যাওয়ার পর থেকেই ১২২ মিলিয়ন বাসিন্দার ল্যাটিন আমেরিকান দেশটি ভূমিকম্পের আগাম বার্তা পাওয়ার জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যেই ১৯৯১ সালে চালু করা হয় স্যামসেক্স ফ্যাসিলিটি যা মেক্সিকান উপকূলে বিভিন্ন ভূগর্ভস্থ ফাটলে স্থাপন করা সেন্সর থেকে ডেটা সংগ্রহ ও পর্যবেক্ষণ করে। সতর্কবাণী প্রচারকারী গ্রাহকযন্ত্রগুলো স্থাপন করা হয়েছে দেশটির পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ শহরে যার মধ্যে রয়েছে রাজধানী মেক্সিকো সিটি এবং অ্যাকাপুলকো। গ্রাহকযন্ত্রগুলো ভূমিকম্পের কোনো সংকেত পাওয়ামাত্রই আশপাশের মানুষজনকে সতর্ক করে দেবে। যার মাধ্যমে মানুষ ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হওয়ার আগেই মূল্যবান কিছু সময় হাতে পাবে।

কিন্তু সর্বস্তরের মানুষের পক্ষে এই গ্রাহকযন্ত্র কেনা সম্ভব নয়। একট রিসিভার সেটের মূল্য প্রায় ৩৩০ ডলার যা অধিকাংশ মেক্সিকান অধিবাসীর জন্য বিলাসিতার সমতুল্য। স্থানীয় প্রযুক্তিবিদ আন্দ্রেজ মেইরা মনে করেন ভূমিকম্পের সতর্কবাণী সবার জন্যেই গুরুত্বপূর্ণ। ২০১০ সালের হাইতির ভয়াবহ ভূমিকম্পের প্রত্যক্ষদর্শী মেইরা বলেন, মেক্সিকোর মত ভূমিকম্পপ্রবণ জায়গায় না থেকে এর ভয়াবহতা সম্পর্কে আন্দাজ করা সম্ভব নয়।

স্প্যানিশ শব্দ ‘গ্রিলো’ বাংলায় যার অর্থ ঝিঝি পোকা। মেইরার উদ্ভাবিত ৫০ ডলার মূল্যের সতর্কবার্তা প্রদানকারী ডিভাইসটির নাম রাখা হয়েছে ‘গ্রিলো’। টেবিল ঘড়ির মত দেখতে ডিভাইসটির কাজ হচ্ছে ‘স্যামসেক্স’ এর ব্যবহৃত বিশেষ ফ্রিকোয়েন্সি থেকে তথ্য সংগ্রহ করা। ভূমিকম্পের কোনো সঙ্কেত পেলে জোরাল শব্দের মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে সতর্ক করবে ডিভাইসটি। দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য উজ্জল আলোর ঝলকানিও থাকবে এর সঙ্গে। মূল্যের ব্যাপারে ডিভাইসটি অধিকাংশ মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে বলেই মনে করেন মেইরা।

তবে কেবল বিপদের আগামবার্তা দুর্ঘটনা থেকে পরিত্রাণের জন্য যথেষ্ট নয়। বিপদসংকেত পাওয়ার পরেও সঠিক কাজটি করার জ্ঞান থাকা দরকার। তাছাড়া মেক্সিকোতে এমন অনেক মানুষ আছেন, ৫০ ডলার মূল্যের ‘গ্রিলো’ যাদের সামর্থ্যের বাইরে। এসব সমস্যার সমাধানই পরবর্তী লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন ‘গ্রিলো’র উদ্ভাবক আন্দ্রেজ মেইরা। 

 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত