সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ মে, ২০১৭ ০১:২১

আজ আবার সাইবার হামলার আশঙ্কা

বিশ্বব্যাপী গত শুক্রবার নজিরবিহীন সাইবার হামলা সংঘটিত হয়েছে। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, আজ (সোমবার) আবার একযোগে বড় ধরনের সাইবার হামলা চালানো হতে পারে, যা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে। খবর বিবিসি।

ব্রিটিশ সাইবার নিরাপত্তা গবেষক ‘ম্যালওয়্যারটেক’ এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এই ছদ্মনামে ২২ বছর বয়সী এক গবেষক শুক্রবারের সাইবার হামলার ব্যাপকতা সীমিত করতে পেরেছেন। তিনি অবশ্য দুর্ঘটনাক্রমে এ কাজ করেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।

ম্যালওয়্যারটেক জানায়, বিশ্বব্যাপী বড় ধরনের আরো একটি সাইবার হামলা আসছে। খুব সম্ভবত আজকেই কোনো এক সময় এ হামলা চালানো হতে পারে। র্যানসমওয়্যার হামলা ঠেকাতে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার হালনাগাদ করে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কারণ ম্যালওয়্যার সাধারণত ই-মেইলের মাধ্যমে ছড়ানো হয় এবং অপারেটিং সিস্টেমের ত্রুটি কাজে লাগিয়ে এসব ভাইরাস সক্রিয় হয়ে উঠে।

বিশ্বব্যাপী একযোগে সংঘটিত শুক্রবারের সাইবার হামলায় অন্তত ১০০টি দেশের ৭৫ হাজার প্রতিষ্ঠানের ১ লাখ ২৫ হাজারের বেশি কম্পিউটার সিস্টেম আক্রান্ত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সরকারি কার্যালয়, জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ও কুরিয়ার কোম্পানিও এ হামলা থেকে নিস্তার পায়নি। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের একাধিক হাসপাতাল এ ধরনের হামলার শিকার হওয়ায় বিপর্যয়ের মুখে পড়ে দেশটির জরুরি স্বাস্থ্যসেবা খাত।

বড় পরিসরের এ সাইবার হামলার ঘটনায় যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জার্মানি, স্পেন, ইতালি, তাইওয়ান, ভারত ও রাশিয়া ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাইবার অপরাধীরা র্যানসমওয়্যার ছড়িয়ে একযোগে হামলা চালায়।

র্যানসমওয়্যার এমন এক ধরনের ক্ষতিকর প্রোগ্রাম বা ম্যালওয়্যার, যার আক্রমণে প্রথমে কম্পিউটারে সংরক্ষিত ফাইল লক হয়ে যায় এবং মনিটরে একটি বার্তা ভেসে ওঠে। এতে প্রয়োজনীয় ডাটা বা ফাইল ফিরে পাওয়ার জন্য অর্থ দাবি করা হয়।

ম্যালওয়্যারটেকের দাবি, শুক্রবারের সাইবার হামলা কিছুটা হলেও প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে। শিগগিরই বড় পরিসরে আরো একটি হামলা আসছে এবং আসন্ন হামলা প্রতিহত করা সম্ভব হবে না। র্যানসমওয়্যার হামলার মাধ্যমে বড় অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয়। কাজেই পরবর্তী হামলা চালানোর আগে সাইবার অপরাধীরা অবশ্যই তাদের হ্যাকিং কোড পরিবর্তন ও আরো শক্তিশালী করবে। আজ সকালেই নতুন করে হামলা চালানো হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান প্রুফপয়েন্টের নিরাপত্তা গবেষক ড্যারিয়েন হাস বলেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, প্রথম হামলায় প্রাথমিকভাবে যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে, বাস্তবে তার চেয়ে অনেক বেশি হবে। বিভিন্ন দেশের তদন্তকারী শুক্রবারের হামলার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। হামলায় ওয়ানা ডিক্রাইপ্টর বা ওয়ানাক্রাই নামে বিশেষ ম্যালওয়্যার এবং এর কয়েকটি সংস্করণ ব্যবহার করা হয়েছিল।

জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসএ) মাইক্রোসফট উইন্ডোজ সফটওয়্যারে প্রথম একটি নিরাপত্তা ত্রুটি ধরতে পেরেছিল। সংস্থাটি এ ত্রুটি ব্যবহার করে লোকজনের ওপর নজরদারি করত বলে ফাঁস হওয়া নথিতে পাওয়া গেছে।

বিশ্লেষকরদের দাবি, সাম্প্রতিক সাইবার হামলায় এনএসএর ব্যবহূত হ্যাকিং টুলই ব্যবহার করেছে হ্যাকাররা।   বড় পরিসরের এ হামলার জন্য উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদেরও দায়ী করা হচ্ছে। কারণ উইন্ডোজ সফটওয়্যারের নিরাপত্তা ত্রুটি সারাতে গত মার্চেই প্যাচ সরবরাহ করেছিল মাইক্রোসফট। কিন্তু ব্যবহারকারীদের একটি অংশ সফটওয়্যার হালনাগাদ না করায় সাইবার অপরাধীদের জন্য র্যানসমওয়্যার ছড়ানো সহজ হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত