২১ নভেম্বর, ২০১৫ ০৯:৫২
ইসলামিক স্টেটসহ (আইএস) জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্বশক্তিগুলোকে এক হতে ফ্রান্সের দেওয়া খসড়া প্রস্তাব অনুমোদন করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। আইএস দমনে একাট্টা হয়ে লড়বে জাতিসংঘ।
গত সপ্তাহে প্যারিসে ভয়াবহ হামলার পর ফ্রান্স এই প্রস্তাব দেয়। আইএস জঙ্গি দমনে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় ফ্রান্স। এদিকে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে সন্ত্রাসী হামলার হুমকির পর সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সব সদস্য রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ইরাক ও সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের যে স্বর্গরাজ্য গড়ে উঠেছে তা নস্যাৎ করে দিতে হবে। সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধে জাতিসংঘ আরও জোরদার ও সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে সম্মত হয়েছে। জাতিসংঘে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আইএসের চালানো হামলার নিন্দা জানানো হয়।
প্যারিসে হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে আইএস। ওই হামলায় ১২৯ জনের মৃত্যু হয়। এ মাসে লেবাননে ভয়াবহ বোমা হামলায় দায়ও নেয় আইএস। জঙ্গি দলটি সদর্পে বলেছে, গত অক্টোবরে রাশিয়ার যাত্রীবাহী বিমানও তাঁরা ভূপতিত করেছে। জাতিসংঘে তিউনিসিয়া, আঙ্কারা ও তুরস্কে চালানো হামলারও নিন্দা জানানো হয়।
এদিকে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে সন্ত্রাসী হামলার হুমকির পর সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্যারিসের হামলাকারীদের কয়েকজন এখনো সেখানে বসবাস করছেন বলে সে দেশের সরকারের ধারণা। বেলজিয়ামের সরকার ঘোষণা করেছে প্যারিসে হামলায় জড়িত একজন সন্দেহভাজন সেখানে অন্যদের নিয়ে আসছেন বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন।
ইউরোপের প্রাণকেন্দ্র ন্যাটোর সদস্য ফ্রান্সের রাজধানীতে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার রেশ না কাটতেই নতুন জঙ্গি হামলার হুমকিতে সচকিত হয়েছে বিশ্ব। আইএস হোয়াইট হাউসসহ যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, বাণিজ্যের কেন্দ্র নিউইয়র্ক সিটিতে হামলার হুমকি দিয়েছে।
এদিকে মালয়েশিয়ায় শনিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক্কালে জঙ্গিদের সন্ত্রাসী হামলার প্রস্তুতির খবরে সেনা নামানো হয়। এরই মধ্যে গতকাল শুক্রবার মালিতে বন্দুকধারীদের জিম্মি করার ঘটনা। একের পর এক এ ধরনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্রান্সের উদ্যোগ ও জাতিসংঘের অনুমোদনকে বিশেষ রকম তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
দিনে দিনে ভয়াবহ হয়ে ওঠা জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সমন্বিত কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি বিশ্বশক্তিগুলো। বারবার সেখানে বাধা হয়ে ছিল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী দুই সদস্য রাশিয়া ও চীন। কিন্তু গত সপ্তাহে ফ্রান্সে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর নড়ে বসেছে বিশ্ব। রাশিয়া ও চীনও এবার দৃশ্যত পশ্চিমা অন্য শক্তিগুলোর সঙ্গে হাত মিলিয়ে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে যাচ্ছে।
আপনার মন্তব্য