ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫ ১৫:৫৪

ট্রাম্পকে যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধের দাবি টিউলিপের, ক্যামেরনের ‘না’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে থাকা রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্র্যাম্পকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি নাকচ করে দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি টিউলিপ সিদ্দিক ট্র্যাম্পকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যায় কিনা এমন এক প্রশ্ন করেছিলেন ক্যামেরনকে।

সংসদে টিউলিপের বক্তব্যের জবাবে ক্যামেরন বলেন, ‘ট্রাম্পের মন্তব্য শুধু বিভেদ সৃষ্টিকারীই নয়, সেই সঙ্গে অর্থহীন এবং ভুলও। আমি তার (টিউলিপ) সঙ্গে একমত। যারা মৌলবাদকে উসকে দেয় তাদের ত্যাগ করাই উচিত। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপারে আমি একমত হতে পারছি না।’

ক্যামেরন যুক্তরাজ্যকে ‘বহু-জাতি ও বহু-বিশ্বাসের সমন্বয়ে গঠিত একটি সফল দেশ’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, “উগ্রবাদী কিংবা তাদের ধ্যানধারণাকে ঠেকানোর পাশাপাশি বৈষম্যের বিরুদ্ধে আরও অনেক কিছু করার সুযোগ আমাদের আছে।”

বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) ট্রাম্পকে যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধের দাবি সংক্রান্ত একটি পিটিশনের ব্যাপারে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বিতর্কের সময় টিউলিপ এ নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কিত প্রশ্ন ও দাবি জানান। ওই পিটিশনে ৫ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি ব্রিটিশ নাগরিক স্বাক্ষর করেছেন।

বক্তৃতায় টিউলিপ বলেন, ‘জনগণের ভালো যারা চান না, তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধের ব্যাপারে আমাদের দেশে (যুক্তরাজ্যে) আইন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কি সবার জন্য এই আইন সমানভাবে প্রয়োগে রাজি আছেন? ধনাঢ্য রাজনীতিকদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কিছু করা কি আমাদের উচিত হবে?’

বিবিসি জানিয়েছে, ‘লন্ডনের মুসলিম অধ্যুষিত কিছু অঞ্চলে একেবারেই যাওয়া যায় না’- ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের বিষয়ে গত সপ্তাহে পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তব্য দেন টিউলিপ।

যুক্তরাষ্ট্রের এই ধনকুবেরের যুক্তরাজ্যে প্রবেশে ‘নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যায় কি না’ তা জানতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য তিনি বলেন, “জনস্বার্থে ক্ষতিকর এমন ব্যক্তিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির বিধান রয়েছে আমাদের। তা সবার জন্য সমান হোক, এমনটা নিশ্চয় প্রধানমন্ত্রীও চাইবেন। নাকি কোটিপতিদের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হবে?”     

নিজের সংসদীয় আসনে ইহুদিদের ৭টি উপাসনালয়, চারটি মসজিদ, দুটি মন্দির এবং ৩৫টির বেশি গির্জা রয়েছে বলে জানান টিউলিপ।

মুসলমানদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে না দেওয়ার দাবি তুলে ট্রাম্প যে ‘উগ্রবাদী আচরণ’ করেছেন, সেজন্য তার ক্ষেত্রেও যুক্তরাজ্যের আইন প্রয়োগের দাবি জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ।

গত মে মাসে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে লেবার পার্টির টিকেটে জয়ী হয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আসেন টিউলিপ।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়ায় গুলির ঘটনায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের প্রবেশ নিষিদ্ধের দাবি জানান। শুধু তাই নয়, আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি তার দেশে মুসলিমদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন।

তার এ দাবির পর থেকেই বিশ্বজুড়ে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় ওঠে। নিজ দলেও তিনি সমালোচিত হন। আর হোয়াইট হাউজ থেকে ট্রাম্পের এ দাবিকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি উল্লেখ করে তাকে নির্বাচনের অযোগ্য বলেও মন্তব্য করা হয়। অবশ্য এরও আগেই মুসলিম বিরোধী মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প।

তিনি দাবি করেছিলেন যেন দেশের মসজিদগুলোতে কড়াকড়ি নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়। সেসময় তিনি এমনও প্রশ্ন তুলেছিলেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সেদেশের নাগরিক কিনা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত